Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন পহেলা বৈশাখ: অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দিন

পহেলা বৈশাখ: অর্থনৈতিক শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের দিন

নববর্ষের পক্ষে বিপক্ষে বহু লেখা। বিপক্ষের অধিকাংশ লেখাই ধর্মীয়। আজকের আলোচনায়ও সমাজ বাস্তবতা হিসাবে ধর্ম থাকবে। কিন্তু প্রথমেই বলে নিই, আমার এই লেখাটা ধর্মীয় কোন লেখা নয়। বরং সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং তার মোকাবেলা নিয়েই আলোচনার স্বার্থে খুব স্বাভাবিকভাবে ধর্ম এসে যায়। আসুন ধীরে ধীরে আলাপটা শুরু করা যাক।

[ এক ]

হিন্দু-বৃটিশের মেলবন্ধনে সেক্যুলার পহেলা বৈশাখ….। এই বিষয়ে আলোচনার পূর্বে আমাদের মাথায় রাখতে হবে, রাষ্ট্র ক্ষমতায় ইসলামপন্থীরা নেই। এবং সমাজ পরিবর্তনের যা দ্বারা অধিক অগ্রসরমান সেখানেও ইসলামপন্থীরা পিছিয়ে। ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট তথা ইসলামের উপর গড়ে ওঠা আমাদের এই বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি। কিন্তু এখানকার শাসকূল বরাবরই হয় সরাসরি সেক্যুলার মেজাজের অথবা সেক্যুলার রাষ্ট্রীয় কাঠামোর দাস।

এই রাষ্ট্রীয় কাঠামো আমরা বৃটিশ বেনিয়াদের থেকে প্রাপ্ত। যার ফলে কালোনিয়াল শাসন আমলে বৃটিশের চাকর-বাকর হওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগামী এক শ্রেণীর হিন্দু দর্শন ও ইউরোপীয় দর্শন প্রভাব বিস্তার করেছে আমাদের আইন – আদালত , শিক্ষা – সংস্কৃতি ও আমলাতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোতে। তাই নব্বই ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত হলেও আমাদের প্রতিনিয়ত লড়াই চালিয়ে যেতে হচ্ছে বৃটিশ আমলে গড়ে ওঠা হিন্দু-বৃটিশ সংমিশ্রিত একটি চিন্তা কাঠামোর সাথে। আর ’৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের পর চাপিয়ে দেওয়া সেক্যুলারিজম যতটা আগুনে পেট্রোল ঢালতে পারে, তার চেয়ে অধিকই ঢালছে সেক্যুলারিজমের নামে ইসলাম- বিদ্বেষ চর্চায়। আর এই সমস্ত কিছুর গোড়া হল- সেই পুরাতন হিন্দু- বৃটিশ সংস্কৃতির আধিপত্য।

কারো কাছে হয়তো মনে হতে পারে, আলোচনা ভিন্ন দিকে মোড় নিচ্ছে। কিন্তু আমার মনে হয় একটু গোড়া থেকে চিন্তা করতে না পারলে আমরা কোন সমাধানে পৌঁছতে পারব না। একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক- সাংস্কৃতিক মেলবন্ধনকে আমরা যদি শুধু ধর্মীয় ফতোয়া দিয়েই মোকাবেলা করতে চাই, তবে সেই মোকাবেলা কি যথেষ্ট হবে? ধর্মীয় ফতোয়ার রাজনৈতিক রূপও আছে। কিন্তু বর্তমানে পহেলা-বৈশাখ ও মঙ্গল শোভাযাত্রাকে কেবল ব্যক্তিগত ধর্মাচার হিসাবে মোকাবেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। যা এই যুদ্ধে আমাদের অবশ্যই টুটি চিপে ধরবে। কারো কারো জানটা হয়তো কোনভাবে রক্ষা পাবে, কিন্তু আমরা রাষ্ট্র ও সমাজে আমাদের অবস্থান হারিয়ে এতিমের জীবন- যাপন করতে হবে।

[ দুই ]

পহেলা বৈশাখ বৃটিশের গোলামীর পরিচয়ের চিহ্ন….। বাংলা উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, “আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের খবর প্রথম পাওয়া যায় ১৯১৭ সালে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ব্রিটিশদের বিজয় কামনা করে সে বছর পহেলা বৈশাখে হোম কীর্তন ও পূজার ব্যবস্থা করা হয়।” ১৯৩৮ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রারম্ভে বৃটিশ প্রভুদের খুশি করতে এদেশীয় হিন্দু দালালরা পূজার মাধ্যমে পহেলা বৈশাখ পালন করে।

উপরে যে কথা বলেছিলাম তার প্রমাণ এখানে দিলাম। সম্রাট আকবরের সময় বাংলা দিনপঞ্জিকার সুত্রপাত হয়, ফসলী সন হিসাবে। অর্থাৎ বাংলা কর্তৃক উত্তর ভারত তথা দিল্লীকে খাজনা দেওয়ার জন্য এই প্রথার আয়োজন। প্রশ্ন হল, খাজনার দিন প্রজাদের জন্য আতংকের দিন, সেই দিনকে আনন্দ উৎসবের দিন হিসাবে কারা পালন করতে পারে? নিঃসন্দেহে উত্তর হল- খাজনা আদায়কারীরা। রাজা-প্রজার সিস্টেম ছেড়ে আসার দাবিদার সমাজ সেই দিনকে উৎসব হিসাবে পালন করার চিন্তা কীভাবে করতে পারে? তবে কি যারা এই কাজ করছে তারা সেই উত্তর ভারতীয় রাজাদের প্রতিনিধি?

আপনি যদি এই প্যারার প্রথম তথ্যটার দিকে খেয়াল করেন এবং বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতা খেয়াল করেন, তবে বুঝতে কোন অসুবিধা হবে না যে, আজকের মঙ্গল শোভাযাত্রা পালনকারীরা মূলতঃ দিল্লীর প্রভুর বাংলাদেশীয় গোলাম। এবং আধুনিক নববর্ষ উদযাপনের যে কারণ, অর্থাৎ ব্রিটিশদের বিজয় কামনা, তার মাধ্যমে একথা সুস্পষ্ট হয়ে যায় যে, এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন রাজনৈতিক কারণে এবং এদেশের গণমানুষকে শোষণ করার জন্যই গণ-বিরোধী শক্তির দ্বারা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দুইশ বছর ধরে যে বৃটিশের শাসন থেকে মুক্ত হতে লক্ষ লক্ষ জীবন কুরবান হয়েছে, সেই বিৃটিশের কল্যাণ কামনায় যে অনুষ্ঠানকে তিনশ বছর পর ফিরিয়ে আনা হয়, সেই অনুষ্ঠান পালনের নৈতিক কোন ভিত্তি স্বাধীন বাংলাদেশে নেই। এবং এটি স্বাধীন বাংলাদেশের দীর্ঘ ইতিহাসের সাথে বেইনসাফী, গাদ্দারী। একই সাথে অনুষ্ঠানটি আধুনিক সময়ে প্রথম একটি নির্দিষ্ট ধর্মের পূজা ও সংগীত দ্বারাই পালিত হওয়াতে এই অনুষ্ঠানকে ভিন্ন ধর্মের লোকদের উপর চাপানো, জাতীয় উৎসব হিসাবে গণ্য করা বাংলাদেশের সংবিধানেরও খেলাফ।

[ তিন ]

বটবৃক্ষ নাই, আসলে অশ্বথ বৃক্ষ। প্রতি পদে পদে মুনাফিকি…..। পাকিস্তান শাসনামলে পহেলা বৈশাখ উদযাপন নিয়ে কিছু কথা না বললেই নয়। বলা হয়ে থাকে পাকিস্তানী শাসকদের সাংস্কৃতিক সন্ত্রাসের প্রতিবাদে ১৯৬৭ সালে ছায়ানট সম্মিলিত কণ্ঠে গান গেয়ে সূর্যকে আহবান জানিয়ে পহেলা বৈশাখ পালন করে। এখানে প্রথম আপত্তি হল, সূর্যকে আহবান জানায় সূর্য পূজারীরা। সূর্যকে আহবান জানিয়ে ১৯৭১ সালে কি মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়া হয়েছিল? আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসের সাথে এই অনুষ্ঠানের সংযুক্তি পুরাটাই বানোয়াট। বরং এটা শুধু রবীন্দ্রনাথেই সীমাবদ্ধ ছিল। আর আমি পূর্বে যেমন বলেছিলাম যে, পূর্ববঙ্গে রবীন্দ্রনাথের আমদানীটা রাজনৈতিক। তাকে জনপ্রিয় করে তোলাটাও রাজনৈতিক। ভারতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রসন থেকে রক্ষা করাটা আজ যেমন প্রাসঙ্গিক ঠিক, সেদিনও তেমনি প্রাসঙ্গিকই ছিল। আর তারা যে মিথ্যা বলতে পারঙ্গম, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ হল- যে রমনা বটমূলের কথা বলা হয়, ওটা আসলে বটমূল নয়। ওখানে কোন বটবৃক্ষ নেই, ওখানে আছে অশ্বথ বৃক্ষ।

[ চার ]

জমিদার ও সুদী মহাজনের শোষনের দিন…..। আসুন এবার আসল কাহিনী দেখি। কেন তাদের এই অনুষ্ঠান পালনে এত আগ্রহ, তাও আবার হিন্দুয়ানী কায়দায়। বাংলা উইকিপিডিয়া থেকে কোড করছি, “পশ্চিমবঙ্গে মহাসমারোহে সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় বাংলা নববর্ষারম্ভ পয়লা বৈশাখ। বঙ্গাব্দের প্রথম দিনটিতে বিপুল উৎসাহ এবং উদ্দীপনার সাথে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়ে থাকে সমগ্র পশ্চিম বাংলায়”।

“সারা চৈত্র মাস জুড়েই চলতে থাকে বর্ষবরণের প্রস্তুতি। চৈত্র মাসের শেষ দিন অর্থাৎ চৈত্র সংক্রান্তি বা মহাবিষুব সংক্রান্তির দিন পালিত হয় গাজন উৎসব উপলক্ষ্যে চড়ক পূজা অর্থাৎ শিবের উপাসনা”।

“বিভিন্ন অঞ্চলে আয়োজিত হয় চড়ক মেলা। এই মেলায় অংশগ্রহণকারী সন্ন্যাসী বা ভক্তগণ বিভিন্ন শারীরিক কসরৎ প্রদর্শন করে আরাধ্য দেবতার সন্তোষ প্রদানের চেষ্টা এবং সাধারণ মানুষের মনোরঞ্জন করে থাকেন”।

“পরের দিন অর্থাৎ পয়লা বৈশাখ প্রতিটি পরিবারে স্নান সেরে বয়ঃজ্যেষ্ঠদের প্রণাম করার রীতি বহুল প্রচলিত। বাড়িতে বাড়িতে এবং সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চলে মিষ্টান্ন ভোজন”।

“ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলির অধিকাংশই এদিন থেকে তাদের ব্যবসায়িক হিসেবের নতুন খাতার উদ্বোধন করে, যার পোশাকি নাম হালখাতা। এই উপলক্ষ্যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলিতে মঙ্গলদাত্রী লক্ষ্মী ও সিদ্ধিদাতা গণেশের আরাধনা করা হয়। নতুন খাতায় মঙ্গলচিহ্ন স্বস্তিকা আঁকা হয়ে থাক”।

“পয়লা বৈশাখের দিন উল্লেখযোগ্য ভীড় চোখে পড়ে কলকাতার বিখ্যাত কালীঘাট মন্দিরে। সেখানে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ভোর থেকে মন্ত্রপাঠপূর্বক গঙ্গাস্নান করে প্রতীক্ষা করে থাকেন দেবীকে পূজা নিবেদন করে হালখাতা আরম্ভ করার জন্য। ব্যবসায়ী ছাড়াও বহু গৃহস্থও পরিবারের মঙ্গল কামনা করে দেবীর আশীর্বাদ প্রার্থনা করতে কালীঘাটে গিয়ে থাকেন। এইদিন বাঙালির ঐতিহ্যবাহী পোশাক হিসাবে নতুন ধুতি-পাঞ্জাবি এবং শাড়ি পরার রেওয়াজ প্রচলিত”।

বাংলা উইকিপিডিয়া পড়ে কি বুঝলেন? এই পহেলা বৈশাখ উদযাপন তাদের কাছে পুরোটাই ধর্মীয়? উত্তর হল, ‘না’ ধর্মীয় নয়। বরং তাদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উপাসনা তারা ধর্মীয়ভাবে করে। কারণ, বৃটিশের দালালী করে যে জমিদারী তারা ক্রয় করেছিল সেই জমিদারীর খাজনা উসুল করা হয় এবং গরীব অসহায় মানুষগুলো হিন্দু সুদী কারবারীদের সুদ প্রদান করতেন। তাই স্বাভাবিকভাবে এই দিনটি সম্রাট আকবর প্রবর্তিত হলেও বৃটিশের কুশাসনের সময় এই দিনটি হয়ে ওঠে হিন্দু জমিদার ও মহাজনদের ঈদের দিন। আর তাই তারা এই দিন তাদের দেবতাদের খুশি করার চেষ্টা করে থাকে। একই সাথে তাদের বৃটিশ প্রভুদের খুশি করতে এই দিন পালন করে। কেননা তারা এসেছিল বলেই তো এই পূর্ব বাংলার উপর তারা তাদের আধিপত্য কায়েম করতে পেরেছিল।

[ পাঁচ ]

আমাদের ভাবনা ও করণীয়….। আমার উপরের আলোচনা মাধ্যমে আশা করি সম্মানিত পাঠকরা বুঝতে পেরেছেন বর্ষবরণের এই ইতিহাস মূলতঃ জালেম কর্তৃক মজলুমের উপর জুলুমের ইতিহাস। এই দিন তারাই আনন্দ করতে পারে যারা জুলুম ভালবাসে। এই দিন কেবল তারাই আনন্দ করতে পারে, যারা নির্বোধ। এই দিন কেবল তারাই আনন্দ করতে পারে যারা দিল্লীর সেবাদাস, এদেশের দুশমন। কিন্তু কথা হল, আমাদের কি করনীয়? আলিমরা তো এই পহেলা বৈশাখে ভিন্ন ধর্ম পালনের যে বিষয়টি তা তুলে ধরছেন, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে দেখা যাচ্ছে রাষ্ট্রীয়ভাবেই এটি ক্রমান্বয়ে বিস্তার লাভ করছে। এই বিষয়ে করণীয় চিন্তা করতে গিয়ে আমার বারবার একটা হাদীসই মনে পড়ছে-

হযরত আনাস (রাযি.) বলেন, হযরত রাসূল (সা.) মদীনায় আগমন করে দেখলেন যে, মদীনাবাসীরা দু’টি ঈদ (আনন্দের দিন) পালন করছে ৷ তা দেখে রাসূল (সা.)বললেন, জাহীলিয়াতের যুগে তোমাদের দু’টি দিন ছিল, যাতে তোমরা খেলাধূলা, আনন্দ-ফূর্তি করতে। এখন ঐ দিনগুলির পরিবর্তে মহান আল্লাহ্ তোমাদেরকে দু’টি উত্তম দিন প্রদান করেছেন, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহার দিন। (সাহীহ আবু দাউদ, ১১৩৪)।

অনেকে বলে থাকেন, ইসলামে দিবস পালন হারাম। বস্তুতঃ নতুন যত দিবস আমাদের সামনে এসেছে তা পালনে এক ধরনের রাষ্ট্রীয় বাধ্যবাধকতা এবং ঐসব দিবস পালনের মধ্যে নানান ইসলাম বিরোধী অনুষঙ্গই “দিবস পালন হারাম” জাতীয় বক্তব্যকে সামনে এনেছে। কিন্তু আমরা দেখছি, কোন দিবস পালনই কিন্তু থামানো যায়নি। কেন থামানো গেল না? আসলে ইসলাম বিরোধী দিবস আর কোন দিবসে ইসলাম বিরোধী কার্যকালাপ এক বিষয় নয়। দিবসটি যদি ইসলাম বিরোধী হয়, তবে সেই দিবসের পরিবর্তে ভিন্ন দিবস দেওয়া আমরা হাদীসে দেখতে পাচ্ছি।

হাদীসের ভাষ্য খেয়াল করুন, “এখন ঐ দিনগুলির পরিবর্তে” আল্লাহ তোমাদের আরো দু’টি দিবস দিচ্ছেন। এখন বিবেকবানদের কাছে আমার প্রশ্ন হল, পরবর্তীতে যত দিবস আমাদের সামনে এসেছে তাকে কি আমরা পরিশুদ্ধ করার চেষ্টা করেছি? বা নতুন দিবস কায়েম করেছি? আমি জানি, ফিক্বহী আলোচনা চলে আসবে। এই আলোচনার জন্য আমি প্রথমে শুধু তাদেরই আহবান জানাবো যারা ইসলামী রাজনীতির চর্চা করেন, একটা অনৈসলামিক রাষ্ট্র কাঠামোর মধ্যে থেকে। আমি মনে করি তাদেরই দায়িত্ব এই বিষয়গুলো সমাধান করা।

ইসলামী চেতনার ভোট যদি আপনি সুরক্ষিত রাখার জন্য নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেন, তবে ইসলামী চেতনা সুরক্ষিত রাখার জন্য কেন আরেকটি দিবসের আয়োজন করা যাবে না বা ঐ দিবসটি পরিশুদ্ধ করে পালন করা যাবে না? আশা করি বিষয়টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা হবে।

ইসলাম তো রুসম রেওয়াজকে মুছে দিতে আসেনি। বরং রুসমের মধ্যে যা কিছু ইসলাম বিমুখ তাকে ইসলামমুখী তাওহীদমুখী করতে এসেছে। আমরা যেমন মুসলিম তেমনী বাঙালী। তাই বাংলার রুসম রেওয়াজকে ইসলামী ধাঁচে গড়ে তোলা আমাদের জন্য জরুরী।

পহেল বৈশাখের একটা ঐতিহাসিক ভিত্তি আছে। এর সাথে দীর্ঘকাল জড়িয়ে ছিল এদেশের অর্থনীতি। আর তাই এটির বিকাশ হয়েছে। আর এই বিকাশের মধ্যে আমরা দেখি হালাখাতা নামক অনুষ্ঠান। এখন আমাদের বুঝতে হবে, আমরা চাইলে মঙ্গল শোভাযাত্রা নামক সেক্যুলার ভেক ধরা হিন্দুয়ানী প্রথা প্রচারের আন্দোলন স্তিমিত করে দিতে পারি। কিন্তু মিটিয়ে দিতে পারব না। আর দীর্ঘকাল ধরে শুধু নসিহতের মাধ্যমে এটাকে প্রতিহত করা সম্ভব হবে না।

তাই অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে ইসলামী সংস্কৃতির বিকাশ বাংলার রুসম রেওয়াজকে পরিশুদ্ধ করে করতে হবে। আনন্দ দিবস আমরা ঐতিহাসিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় করতে পারি না। কিন্তু আমরা এই দিনটির ইতিহাস বিবেচনায় নতুন কোন দিন কি, অপসংস্কৃতি প্রতিরোধে পালন করতে পারি না?

অনেকেই বদর দিবস পালন করে থাকেন। কিন্তু এটা তো কোন ধর্মীয় দিবস বা বিদআতে পরিণত হয়নি। তাই আমি মনে করি, বিষয়গুলো নিয়ে আরো চিন্তা ভাবনা করে কোন একটি সিদ্ধান্তে দ্রুত পৌঁছা দরকার। যে কোনভাবে রাজপথে নামতে হবে। রাজপথে নেমে ইসলামী কৃষ্টি কালচার ফুটিয়ে তুলে শান্তিপূর্ণ পদযাত্রার মাধ্যমে “অর্থনৈতিক জুলুম প্রতিরোধ দিবস” পালন করা যেতে পারে। অথবা ভিন্ন কোন নামে….।

লেখকঃ আহবায়ক মুভমেন্ট ফর ইনসাফ।