Home সোশ্যাল মিডিয়া আল্লামা কাসেমী’র প্রজ্ঞা ও দুরদর্শিতা ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতো!

আল্লামা কাসেমী’র প্রজ্ঞা ও দুরদর্শিতা ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতো!

।। মুনির আহমদ ।।

“পোপ ক্যাথলিক খ্রীস্টানদের প্রধান ধর্মীয় নেতা হয়েও রোহিঙ্গা মুসলিমদের স্বার্থে সরব ভূমিকা রেখে বিশাল উদারতার পরিচয় দিচ্ছেন” – মিডিয়ায় ব্যাপক প্রচারণা মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী এমন একটা আবহ তৈরির চেষ্টার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সফরে আসা পোপকে স্বাগতঃ জানিয়ে এবং পোপের সফর ও প্রত্যাবর্তন যেন নিরাপদ হয়, সেটা কামনা করে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (হাফি.) সংবাদপত্রে বিবৃতি দিয়ে একজন সুনিপুণ দক্ষ ইসলামী রাজনীতিবিদের পরিচয় দিয়েছেন। পোপের সফরের কারণে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মিডিয়ার গভীর নজরে থাকা অবস্থায় আল্লামা কাসেমী বিশ্ব মিডিয়ায় দৃষ্টিতে আনার প্রয়াস নিয়েছেন যে, “সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক সুসম্পর্কের ক্ষেত্রে খ্রীস্টানদের তুলনায় মুসলমানরা মোটেও পিছিয়ে নেই।

দ্বিতীয়ত: একই বিবৃতিতে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (হাফি.) “মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম বিরোধী নৃশংসতা নিয়ে শুধু মুসলমানরাই নন; সমগ্র বিশ্ববাসীই আজ শংকিত, উদ্বিগ্ন ও বিক্ষুব্ধ” বলে উল্লেখ করে চলমান আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা পোপ থেকে নজরটা নিযার্তিত রোহিঙ্গা মুসলমানদের দিকে সরিয়ে নেওয়ার প্রয়াস নিয়ে- “এই মুহূর্তে পোপ নিয়ে আলোচনার চেয়েও রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানটাই যে আমাদের কাছে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়”; এটা বুঝাতে চেয়ে সুদক্ষ কূটনৈতিক প্রজ্ঞার জানান দিয়েছেন।

তৃতীয়তঃ আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (হাফি.) পোপকে অভিবাদন জানিয়ে সকল ধর্মাবলম্বীর প্রতি সদাচরণ ও সামাজিক সম্পর্ক রক্ষায় মুসলমানদের অসাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গি ও উদারতার প্রমাণ দিয়েছেন। কিন্তু পোপের কোন অনুষ্ঠানে শরীক হওয়া থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ বিরত রেখে ও চুপচাপ থেকে মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার প্রতি কঠোর দৃঢ়তা ও স্বাতন্ত্রবোধ এবং ভিন্ন ধর্মের প্রতি সহনশীলতাকে সুন্দরভাবে তুলে ধরে নিজের সবল ঈমানী চেতনার জানান দিয়েছেন।

বিবৃতির শেষে আল্লামা কাসেমী “ধর্মীয় নেতারা শুধু স্বীয় ধর্মের নয়, বরং আল্লাহর সৃষ্টি সকল মানুষের জন্য এভাবে সম ভালবাসার দৃষ্টান্ত প্রদর্শন করতে পারলে, এই পৃথিবী আরো সুন্দর হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস” উল্লেখ করে বাংলাদেশ ৯২ ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হওয়া সত্ত্বেও সংখ্যালঘুদেরকে সাথে নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজ বিনির্মাণ ও দেশ গঠনে নিজের স্বপ্নের কথাও বুঝিয়ে দিলেন।

আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীর রাজনৈতিক দক্ষতা, কূটনৈতিক প্রজ্ঞা এবং বিচক্ষণ দুরদর্শিতা বাস্তবিকই আমাকে মুগ্ধ করেছে। অল্প ক’ লাইনের একটা বিবৃতিতে তিনি রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামাজিক শিষ্টাচার ও প্রজ্ঞার উদাহরণ তৈরির পাশাপাশি মুসলমানদের দৃঢ় ধর্মীয় স্বাতন্ত্র্যবোধের প্রকাশটাও ভালই দেখিয়ে দিয়েছেন; যা ছিল এক কথায় অতুলনীয়।

এই দক্ষ ইসলামী রাজনীতিবিদ ও মহান বুযূর্গের সার্বিক কামিয়াবী ও সফলতা কামনা করি।।