Home রাজনীতি ভারতবর্ষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে জমিয়তঃ আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী

ভারতবর্ষকে পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে মুক্ত করেছে জমিয়তঃ আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী

কাউন্সিল অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দিচ্ছেন আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী।

নূর হোসাইন সবুজ: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেছেন, ভারতবর্ষে যদি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সফল সংগ্রাম, সাংগঠনিক পক্রিয়া, নিপুণ কর্মকৌশল আর ত্যাগ-তিতিক্ষা না থাকতো, তাহলে আরো শত শত বছর এই ভারতবর্ষ পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকতো।

তিনি বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম পুরাতন সংগঠন হিসেবে আমরা প্রাচীনতম বলে থাকি। আর ঐতিহ্যবাহী কেন বলি? অবশ্যই আমাদের অনন্য ঐতিহ্য রয়েছে।

আল্লামা নাজমুল হাসান বলেন, আমরা যে স্বাধীন ভারতবর্ষ পেলাম এর পিছনে শায়খুল হিন্দ (রহ.)এর মাল্টায় নির্যাতিত হওয়ার আত্মত্যাগ জড়িত। উস্তাদের খেদমতের জন্য হযরত হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ.) শায়খুল হিন্দ (রহ.)এর সঙ্গে স্বেচ্ছায় কারাবরণের রহস্য নিহিত। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিপ্লব ব্যর্থ হওয়ার পর হাজারো উলামায়ে কেরামের জেল-জুলুম, নির্যাতন, ফাঁসি; এই সব কিছু মিলিয়ে আমাদের আকাবির ও আসলাফের রক্ত, ঘাম জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের ঐতিহ্য।

তিনি বলেন, এই সংগঠনের ইতিহাস ভারতবর্ষকে পরাধীনতার নাগপাশ থেকে মুক্ত করে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শায়খুল ইসলাম হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)এর জেল-জুলুম নির্যাতন বরণের ইতিহাস। এজন্য আমরা গর্ব করে বলি- শতাব্দীর ঐতিহ্যবাহী সংগঠনের নাম ‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম’।

তিনি আরো বলেন, ভারতবর্ষে উলামায়ে কেরামের রাজনীতি ও স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ নিয়ে যখন আমাদের গ্রহণযোগ্য আকাবিরদের মধ্যে মতানৈক্য হয়েছিলো, তখন শায়খুল ইসলাম হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ.) বর্জকণ্ঠে বলেছিলেন- دیکھو یہ سیاست یہ میرا فن ہے، اسکا فیصله میری ہاتھ پر چھوڑ دو۔’

আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, যদি উম্মাহ ওই সময় ওই দেশের ক্লান্তিকালে হযরত হোসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)এর দূরদর্শিতাকে কাজে লাগাতে পারতো, তাহলে আজকে পৃথিবীর অবস্থা, পৃথিবীর কারিকুলাম ভিন্ন রকম হতো। সমগ্র বিশ্ববাসী এর সুফল উপভোগ করতে পারতো। আমরা এখন যেই জুলুম, নিপীড়ন ও শোষণের পৃথিবীতে বসবাস করছি, এমন পৃথিবী দেখতাম না। এমন এক পৃথিবী দেখতাম যেই পৃথিবীতে আমরাই সেরা থাকতাম। আমরাই এক নাম্বার বিশ্বের নাগরিক থাকতাম। আমরাই সুবিচার, ইনসাফ ও শান্তি স্থাপনের কারিগর থাকতাম। আমাদের পাসপোর্টের রঙ থাকতো পৃথিবীর এক নাম্বার পাসপোর্টের রঙ।

আরও পড়তে পারেন-

বৃহস্পতিবার (১১ মে) দুপুর ২টায় সিলেট নগরীর ইউনাইটেড কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ সিলেট জেলা উত্তর শাখার কাউন্সিল অধিবেশনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

তিনি আরো বলেন, বর্তমানে আমরা একটা সংকটময় সময় অতিক্রম করছি। সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে অবশ্যই আমি আমাদের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলবো- আমাদের চিন্তাভাবনা, কর্মকৌশল দিয়ে এই ঐতিহ্যবাহী নীতি-আদর্শকে রক্ষা করা আমাদের প্রাণের দাবী। যদি আমরা এই দাবী পুরণ না করি আগামীদিনের ইতিহাসে আমরা না জানি আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়ে যাই।

তরুণ প্রজন্মকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন- আমাদেরকে এই ইতিহাস সামনে রেখে আগামী দিনের কর্মকৌশল ঠিক করতে হবে। প্রতিকূলতা এটা জীবনের অংশ। ঘাবড়ে গেলে চলবে না। প্রতিকূল পরিবেশের সামনে নিজের মাথা নত করলে চলবে না। মাথা উঁচু করে, বুকে সাহস নিয়ে প্রতিকূল পরিবেশের মোকাবেলা করতে হবে। আমাদের আত্মবিশ্বাসকে মজবুত করতে হবে। আদর্শ ও নৈতিকতার মাধ্যমে সমাজে প্রভাব সৃষ্টি করতে হবে। অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের উত্তম আদর্শ ভুলে গেলে চলবে না। সর্বাবস্থায় আমাদেরকে হকের পতাকা নিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং শক্তিশালী দেশ ও আদর্শ জাতি গড়ার মহান সংগ্রামে আমরা পরস্পর পরস্পরের সহায়ক হয়ে ময়দানে সরব থাকতে হবে।

বক্তব্যের শেষে আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী আসন্ন (১৯ নভেম্বর) শুক্রবার বাদ জুম্মা গুলিস্থানস্থ কাজী বশির মিলনায়তনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের জাতীয় কর্মী সম্মেলন সফল করাতে নেতাকর্মীদের সর্বোচ্চ উপস্থিতি কামনা করেন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।