Home ওপিনিয়ন কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের জন্য দু’ ফোঁটা অশ্রু

কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের জন্য দু’ ফোঁটা অশ্রু

।। তানজিল আমির ।।

চলতি সপ্তাহে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব দেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হলেও ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের অবস্থা এবার ছিল সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম।

ভারতের একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রাজ্যটিতে সোমবার ঈদ শুধু নামেমাত্র উদযাপিত হয়েছে। কাশ্মীর ও শ্রীনগরের বেশিরভাগ মসজিদে ঈদের নামায আদায়ের অনুমতি দেয়নি দেশটির সরকার।

বিবিসি জানিয়েছে, মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহৎ উৎসব ঈদুল আজহায় কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের সবচেয়ে বড় জামে মসজিদসহ উপত্যকাটির অধিকাংশ মসজিদ বন্ধ রাখা হয়েছে। এ বছর শ্রীনগরের বড় কোনো মসজিদে বা প্রধান শহরে ঈদের জামাতের অনুমতি দেয়া হয়নি।

কাশ্মীরের জামে মসজিদ বা হজরতবালের মতো প্রধান মসজিদগুলোতেও কোনো বড় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।

উপরের এ সংবাদটুকু যত সহজে আমরা পড়ে ফেলেছি, বিষয়টি কি আসলেই এত সহজ ছিল? ৮০০ বছর ভারত শাসন করা মুসলমানদের আজ এ কি করুণ পরিস্থিতি। মনে হয় মুসলিম সম্প্রদায় আজ অন্যদের করুণাতে বসবাস করছে পৃথিবীতে। শুধু কাশ্মীর নয়,পার্শ্ববর্তী রাখাইনসহ ফিলিস্তিন,ইরাক,আফগানিস্তান সর্বত্র মুসলমানরাই আজ নির্যাতিত।

অথচ শ্রেষ্ঠধর্ম ও শ্রেষ্ঠ নবীর অনুসারী হিসেবে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ মর্যাদায় থাকার কথা ছিল। আজকের পৃথিবীতে মুসলমানদের কেন এত দূর্দশা? বিষয়টি অনুধাবন না করাতে আমরা কোনো সমাধানে পৌঁছতে পারছি না।

মুসলমানদের মুক্তি ও উন্নতির পথ ওই একটিই যে পথে রাসূল (সা.)-এর হাত ধরে সাহাবারা বিশ্বজয় করেছিলেন। আল্লাহর প্রেরিত পবিত্র কোরআন আঁকড়ে ধরাই মুসলমানদের মুক্তির একমাত্র পন্থা ও কার্যকরী উপায়। এ ছাড়া ভিন্ন কোনো পথ এ উম্মাহর সামনে নেই।

এ বছর ঈদুল আযহার দিনে কাশ্মীর ছাড়াও আরেকটি ঘটনা মুসলমানদের মনে দাগ কেটেছে।

ইসলামের প্রথম কেবলা পবিত্র আল আকসা মসজিদে ঈদুল আযহার নামাযের সময় মুসল্লিদের ওপর ইসরাইলি সেনাদের অতর্কিত হামলায় ১৪ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। এ দিন লক্ষাধিক মুসল্লি আল আকসায় ঈদ জামাতে শামিল হলে ইসরাইলি বাহিনী তাদের ওপর টিয়ার গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।

বিশ্বব্যাপী মুসলিম নিপীড়নের যে উৎসব চলছে,তাতে একজন মানুষ হিসেবে আমরা ভেঙ্গে পড়ি। হতাশার কালো আঁধারে নিমজ্জিত হয়েও আমরা হতাশ হই না। কারণ, মহান আল্লাহ যে হতাশ হতে বারণ করেছেন।

মুসলিম উম্মাহর চরম এ দুঃসময়ে সূরা নূরের এ আয়াতটি দেখে আমরা প্রেরণা পাই। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাদের ওয়াদা দিয়েছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদের পৃথিবীতে শাসনক্ষমতা দান করবেন। যেমন তিনি শাসন কর্তৃত্ব দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদের। তিনি অবশ্যই সুদৃঢ় করবেন তাদের ধর্মকে যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়-ভীতির পরিবর্তে তাদের অবশ্যই নিরাপত্তা প্রদান করবেন।

সুতরাং, এ সংকটকালীন মুহুর্তে আমাদের ফিরে যেতে হবে কুরআনের পথে। কুরআনের আলোয় খুঁজে নিতে হবে মুক্তির পথ।

লেখক: আলেম ও সাংবাদিক।