ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ চত্বরে শুরু হয়েছে মাসব্যাপী ইসলামী বইমেলা। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে গত ১০ নভেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ মেলা চলবে আগামী ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
স্টল মালিকরা জানিয়েছেন, এবার মেলা শুরুর পর থেকেই মেলা ধীরে ধীরে জমতে শুরু করেছে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত রয়েছে।
আয়োজকরা জানান, এবারের মেলায় ৬১টি স্টল অংশগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ বুকঅপারেটিভ সোসাইটি, গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স, সিয়ান, সমকালীন, এমদাদীয়া লাইব্রেরি, দারুস সালাম বাংলাদেশ, মুসলিম ভিলেজ, মুহাম্মদীয়া কুতুবখানা, মিনা বুক হাউস, মডার্ন প্রকাশনী অন্যতম। অংশগ্রহণকারী প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আকর্ষণীয় ছাড়ে বই বিক্রি করছে।
গতকাল মেলা ঘুরে দেখা যায়, স্টলগুলোতে কুরআন-হাদিস গ্রন্থের পাশাপাশি বিভিন্ন ইসলামী শিক্ষামূলক বই, নবী-রাসূলদের জীবনী, ইসলামী ব্যক্তিত্বদের জীবনীসহ বিভিন্ন ধরনের বই বিক্রি চলছে। এসব বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ইসলামে হালাল ও হারাম, বিশ্বনবীর জীবনী, তাজকেরাতুল আউলিয়া, নূরানি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ২৪ ঘণ্টায় কুরআন শিক্ষা, রাসূল সা:-এর ২৪ ঘণ্টার আমল, ইমাম গাজ্জালির জীবন, গিবত ও চোগলখোরির ধ্বংসলীলা, মরণের আগে ও পরে প্রভৃতি।
এ ছাড়া মেলায় স্থান পেয়েছে ইসলামী ব্যক্তিত্বসহ নানান বিষয়ে গবেষণামূলক বই। এর মধ্যে রয়েছে মিসরের প্রেসিডেন্টকে নিয়ে লেখা বই ‘প্রেসিডিন্ট মুরসি’, ‘লস্ট ইসলামিক হিস্ট্রি’, ‘দ্য ইমারজেন্স অব ইসলামসহ নানান বই। বই ছাড়াও কিছু স্টলে মধু, টুপি, জায়নামায, আতর, মিসওয়াক ও তাসবিহ বিক্রি হচ্ছে।
সোলেমানিয়া বুক স্টলের বিক্রেতা মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, প্রতি বছরই তারা মেলায় অংশ নেন। তিনি জানান, মেলায় অনেক স্টলে ছাড়ে বই বিক্রি চলছে। তারাও ৪০ শতাংশ ছাড়ে বই বিক্রি করছেন। এ ছাড়া ইসলামিক ফাউন্ডেশন তাদের স্টলে নানান ছাড়ে বই দিচ্ছে।
তবে কোনো কোনো ক্রেতা অভিযোগ করেছেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগের অভাব না থাকলে এ মহতি আয়োজন আরো জৌলসপূর্ণ ও জমজমাট হতো। কারণ, এ মেলা আয়োজন করা হলেও প্রচারণার অভাবে আশানুরূপ ক্রেতা সমাগম হচ্ছিল না। পরে অংশগ্রহণকারী প্রকাশগণ স্ব স্ব উদ্যোগে প্রচারণা শুরু করলে মেলা জমতে শুরু করে। এ ছাড়া মেলার প্রচার-প্রচারণার জন্য ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কোনো বাজেটও রাখা হয়নি বলে জানান তারা।
জানা যায়, মেলার আগে ও শুরু থেকে কোনো প্রচার-প্রচারণার কাজ করেনি ফাউন্ডেশন। কিন্তু বাংলাদেশে প্রত্যেকটি মেলার আগেই বিভিন্নভাবে প্রচারণার কাজ করে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। এই নিয়ে ব্যবসায়ীরা বেশ কয়েকবার ফাউন্ডেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করলেও কোনো কাজে আসেনি। ব্যবসায়ীদের অভিমত, সঠিক প্রচার-প্রচারণা হলে মেলা আরো জমজমাট ও জৌলুসপূর্ণ হতো। ইসলামী শিক্ষা, আদর্শ ও সংস্কৃতির বিকাশে ব্যাপক অবদান হতো।