Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন ঈদ কি সবার জন্য খুশির বার্তা বয়ে আনে?

ঈদ কি সবার জন্য খুশির বার্তা বয়ে আনে?

।। মুনির আহমদ ।।

পবিত্র রমযান শেষে মুসলিম জাহানের জন্যে ঈদুল ফিতর নিয়ে আসে খুশীর বার্তা। এই খুশীকে বিভিন্ন নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। যেমন- ঈদের আনন্দ, ঈদের খুশী, ঈদ মোবারক, ঈদের শুভেচ্ছা ইত্যাদি। এই দিনে পরিধান করা হয় ভাল ভাল দামী পোশাক, আহার করা হয় সাধ্যমত উন্নত মানের খাদ্য। যার ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত সেও ঈদের এই খুশীর সাথে ছেলে-সন্তানদের সামিল করার জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা করে থাকে। আর যারা একেবারেই নিঃস্ব এবং এতীম ও মিস্কীন, তারাও এই দিনে আনন্দ করে থাকে মানুষের বাড়ী বাড়ী ঘুরে। বছরে একদিনের জন্যে হলেও আহার করতে পারবে ধনীদের উচ্চিষ্ট পোলাও-কোর্মা, গোস্ত; সারা বছরে যার গন্ধও তারা পায় না কোন দিন।

তাছাড়াও যাকাত ও ফিতরার পয়সা প্রাপ্তির আনন্দও ঐসমস্ত গরীব হতভাগাদের ভাগ্যে জোটে, যা বিত্তবানরা সাওয়াব হাসিল করার নিয়্যাতে দিয়ে থাকে এই ঈদের খুশীকে উপলক্ষ্য করেই।

যদিও আমাদের দেশে যাকাত ফিতরার পয়সা নিতে গিয়ে কারো কারো ভাগ্যে নেমে আসে আনন্দের দিনেও বিষাদের কালো ছায়া। দাতার বদান্যতার বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে গিয়ে গরীব ঐ সমস্ত আদম সন্তানকে করতে হয় মৃত্যুবরণ। বাংলাদেশ ছাড়া যার নযির বিশ্বের আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই।

নিজেকে দাতা ও ধনী হিসাবে জাহির করার কি সুন্দর ব্যবস্থা। ঘটনার পরের দিন বিনা খরচে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় যাকাত বিতরণের খবরটি ছাপা হয়। দেশবাসীকে জানিয়ে দেয়, অমুক ধনীর বাড়ীতে যাকাতের কাপড় বা অর্থবন্টনকালে মানুষের ভিড়ের চাপে যাকাত গ্রহীতার মৃত্যু অথবা গৃহস্তের লোকজনের লাঠির আঘাতে এতজন আহত/নিহত ইত্যাদি। দেশবাসী বিনা প্রচারে জেনে গেল যে, অমুক জায়গায় অমুক ব্যক্তি নামে একজন ধনী ব্যক্তি আছে বটে।

ইরশাদ হচ্ছে, “তোমার ডান হাতের দান যেন বাম হাত টের না পায়”।

এই খুশী বা আনন্দ কেন? ঈদের দিনে নতুন নতুন জামা কাপড় পরিধান, উন্নতমানের আহারের আয়োজন, গরীব মিস্কীনকে দান-খয়রাত করে আনন্দ করার পিছনে কারণ কি?

সাধারণতঃ দেখা যায় বিভিন্ন আনন্দ-খুশীর পেছনে বিভিন্ন কারণ নিহিত থাকে। যেমন- স্কুল-কলেজে ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণী বা দ্বিতীয় শ্রেণীতে পাশ করার পর সেই পাশের আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করে থাকে। আবার ব্যবসায়ী মহলে বছর শেষে হিসাবে লাভের পরিমাণ বেশী হলে সেই আনন্দে আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয়ে থাকে। কৃষকের ফসল ভাল হলে জাঁকজমকপূর্ণ নবান্নের আয়োজন করে আনন্দ প্রকাশ করে থাকে।

অনেকে আবার চাকুরীতে নিয়োগ/পদোন্নতি হলে খুশীতে আনন্দ উৎসব করে থাকে ইত্যাদি। এ সমস্ত আনন্দের পেছনে ব্যক্তি স্বার্থই কাজ করে। তার প্রমাণ পরীক্ষায় ফেল করে কেউ মিষ্টি বিতরণ করেনা, ব্যবসায় লোকসান দিয়েও কেউ আনন্দ উৎসবে মেতে উঠেনা এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে যদি ফসল নষ্ট হয়, তাহলে কৃষকও আর নবান্নে পিঠা বিতরণ করে না।

এতে বোঝা যাচ্ছে, প্রতিটি আনন্দ উৎসবের পেছনেই ব্যক্তি স্বার্থ বিদ্যমান। অথচ প্রতি বছর ঈদুল ফিত্রের চাঁদ উদিত হওয়ার সাথে সাথে সমস্ত মুসলিম জাহান আনন্দে মাতোওয়ারা হয়ে উঠে। সে আনন্দের পেছনে কার কতটুকু সফলতা বা বিফলতা এ বিষয়টি কেউ খতিয়ে দেখেনা। পবিত্র ঈদুল ফিতর অবশ্যই আনন্দের দিন, কিন্তু সবারই জন্য কি ঈদুল ফিতর আনন্দ বয়ে আনে?

পবিত্র রমযান মাস সম্বন্ধে বলা হয়েছে, এ মাস রহমতের মাস, মাগফিরাতের মাস ও মুক্তির মাস। অর্থাৎ এই পবিত্র মাসের প্রথম দশ দিন আল্লাহ্ তাআলা তাঁর বান্দাকে রহ্মতের ছায়া দিয়ে আবৃত্ত করে রাখেন। দ্বিতীয় দশ দিন বান্দার পাপরাশি ক্ষমা ঘোষণা করে থাকেন। এবং শেষ দশ দিন বিগত বিশ দিনের কর্মের ফলাফল বিশ্লেষণ করে যাবতীয় গুনাহ্ থেকে মুক্ত করে জান্নাতীর ঘোষণা দিয়ে থাকেন। অতএব রমযান মাস বান্দার জন্যে অত্যন্ত লাভজনক ব্যবসায়ী মাস। এই একটি মাস বান্দা সারা বছরের রোযগার করে থাকে বিভিন্ন পণ্য বিক্রয়ের মাধ্যমে।

এই পণ্য সামগ্রীগুলি চড়াদামে খরীদ করে থাকেন আল্লাহ্ রাব্বুলআলামীন স্বয়ং নিজে। যার সামগ্রীগুলি যত বেশী ভাল হবে, তার তত বেশী মূল্য হবে। এ ব্যবসায়ের উদ্বোধনী দ্রব্য সামগ্রী হলো রোযা। রোযাকে উপলক্ষ্য করে এ ব্যবসায়ের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলেও অন্যান্য দ্রব্য সামগ্রীও দ্বিগুণ মূল্যে বিক্রয় হয়ে থাকে এ বাজারে। যেমন- আমাদের দেশে বিভিন্ন প্রকার মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে, পৌষ মেলা, কৃষি মেলা, বই মেলা ইত্যাদি। অত্যন্ত সীমিত সময়ের জন্যে এসব মেলা বসে, কিন্তু ব্যবসা হয় এক বছরের।

কারণ, সীমিত সময়ের এই মেলায় দ্রব্য সামগ্রী বিক্রয় হয় দ্বিগুণ মূল্যে। এক কাপ চা খেতে গেলে পাঁচ/ছয় টাকা লেগে যায়, অথচ মেলার বাইরে দুই বা তিন টাকা হলে ঐ চা পাওয়া যায়। যারা ভাল ভাল উন্নত মানের জিনিস দিয়ে দোকান সাজিয়ে বসে, তারা ভাল লাভ নিয়ে ঘরে ফেরে। আর যারা লোক ঠকানোর বাসনায় খারাপ জিনিসে রং লাগিয়ে বেশী মুনাফা করার নিয়্যাতে দোকান সাজায়, তাদের দোকানের মাল বিক্রয় হয়না এবং লোকসান দিয়ে ঘরে ফিরতে হয়।

ঠিক তেমনি পবিত্র রমযান মাসে মু’মিনদের জন্যে ব্যবসায়ের পসরা বসে- রোযার, নামাযের, ফিতরার, যাকাতের, দান-খয়রাতের, ধৈর্য্য ও সহনশীলতার, সংযমের, কালিমার, যিকিরের, রাত্রি জাগরণের মাধ্যমে ইবাদত বন্দেগী করার, গরীব ও ফকীর-মিস্কীনদের প্রতি সদয় ব্যবহার এবং সহমর্মিতা প্রকাশের।

মোটকথা, সর্ববিষয়ে সংযমের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধির মাস এই রমযান মাস। প্রতি বছর এ ব্যবসা বসে, স্থায়ীত্বকাল হয় এক মাস। লক্ষ লক্ষ মুসলমান পবিত্র এ ব্যবসায় পসরা সাজিয়ে বসে। ব্যবসা শেষে সবাই ভাবে লাভ করেছি বিস্তর, ভাগ্যের চাকা খুলবে নিশ্চয়ই। কিন্তু বছর শেষ হয়, ভাগ্য আর খোলে না, পরিবর্তন হয় না আমল আখলাকের। আবার নতুন উদ্যোমে শুরু হয় আগত মেহমানের মেহমানদারী।

এভাবেই চলে আসছে অনন্তকাল দোকান উঠা দোকান বসা। লাভ-লোকসানের হিসাব কেউ করে না। কারণ এখানে নগদ প্রাপ্তির সুযোগ নেই তাই। সবাই ভাবে ব্যবসা যখন করেছি লাভ তো হবেই, হিসাব করে আর কি হবে। জমাতো হবেই আখেরাতের ব্যাংকে। একেবারেই তুলব পরকালের জীবনে। তাই ব্যবসা শেষে (রোযা শেষে) প্রতিটি মুসলমান লাভের আনন্দে মাতোওয়ারা হয়ে ওঠে। খুশীর হিল্লোল বয়ে যায় মুসলিম দেশগুলোতে। আর এ খুশীর পেছনে কারণও আছে বৈ-কি। সে কারণ হলো, এই একমাসের ব্যবসায় এতে বেশী লাভ হয়, যা অন্যান্য শত মাসেও কল্পনা করা যায় না।

যেমন- লক্ষ লক্ষ রাকাত নফল নামায যেখানে এক রাকাত ফরয নামাযের সমতুল্য নয়, সেখানে এই পবিত্র মাসে প্রতিটি নফলে ফরযের সাওয়াব দান করা হবে। এক এক ফরযের সাওয়াব সত্তর গুণ বাড়িয়ে দেওয়া হবে এবং তার সাথে বোনাস হিসাবে এমন একটি রাত্রি রয়েছে, যে রাত্রির মরতবা এক হাজার রাত্রির সমান। অর্থাৎ একহাজার রাত্রি জাগরণের মাধ্যমে ইবাদত বন্দেগী করলে বান্দার আমল নামায় যে সাওয়াব দান করা হবে, ঐ এক রাত্রি জেগে ইবাদত করে আল্লাহর কাছে কান্নাকাটি করলে তার চেয়েও উত্তম সাওয়াব দান করা হবে। সেটি হলো, পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর বা শব-এ-ক্বদরের রাত্রি। পবিত্র কালামে পাকে এ রাত্রি সম্বন্ধে আল্লাহ্ তাআলা সূরা ক্বদর নাযিল করেছেন।

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিভিন্ন হাদীসের মাধ্যমেও এ রাত্রির ফযীলত বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন, “তোমরা ঐ পবিত্র রাত্রিকে রোযার শেষ দশদিনের যে কোন বেজোড় রাত্রিতে তালাশ কর”। অর্থাৎ একুশ, তেইশ, পঁচিশ, সাতাইশ ও ঊনত্রিশ। এই রাত্রি জাগরণ করে ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে বান্দা তার প্রভুর কাছে যা চাইবে তা-ই পাবে। আর এ দান আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন নিজ কুদরতী হাতে করে থাকেন।

এর অর্থ হলো, রোযাদার তার পসরায় যে সমস্ত দ্রব্য সামগ্রী সাজিয়ে বসে, আল্লাহ্ তাআলা সেগুলি নিজ পছন্দ মত চড়া দামে খরীদ করে নেন। যেমন- নফল নামাযের সাওয়াব ফরযের সমতুল্য, আর ফরযের সাওয়াব সত্তরগুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয় এই মাসে।

দান-খয়রাতে দাতার আমলে অপরিসীম বরকত দান করা হয়। আর যাকাতের ভাগের দায়িত্ব তো আল্লাহ্ তাআলা নিজ হাতে তুলে নিয়েছেন। যে ব্যক্তি তার মালের যথাযথ যাকাত আদায় করবে, আল্লাহ্ তাআলা তার মালের পূর্ণ হিফাযতের ঘোষণা দিয়েছেন।

মোটকথা, এই পবিত্র মাসে বান্দা যত বড় গুনাহ্গার বা পাপীই হোক না কেন, তার সেই গুনাহ্ ও পাপ মাফ করিয়ে মাসুম হবার মাস এই পবিত্র রমযান মাস। এ মাস জান্নাত কামাইয়ের মাস, এ মাস দোযখ থেকে নাযাতের মাস।

এই পবিত্র ফযীলতপূর্ণ মাস পেয়েও যে নিজের গুনাহ্ মাফ করিয়ে জান্নাত হাসিল করতে পারল না, তার উপর রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম অভিশাপ বর্ষণ করেছেন। জিব্রাঈল (আ.) তার ধ্বংস কামনা করেছেন। আল্লাহ্ তাকে কপাল পোড়া জাহান্নামীদের কাতারে দাঁড় করাবেন।

আরও পড়তে পারেন-

এই পবিত্র মাসের গুরুত্বপূর্ণ বিশেষ ইবাদত হলো রোযা। বাকী অন্যান্য ইবাদত সব মাসে সব সময়ই করতে বলা হয়েছে। কিন্তু রোযার জন্যে শুধু রমযান মাসকেই নির্ধারিত করা হয়েছে। এই রোযার নিয়ম হলো, বান্দা সুবেহ্ সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত কিছু পানাহার করবেনা বা স্ত্রী সহবাস করবেনা। এই সময়টুকু পার হলে আবার বান্দা তার ইচ্ছামত পানাহার, স্ত্রীসহবাস সবই করতে পারবে। এটাই হলো এ মাসের বিশেষত্ব।

উপরোক্ত আলোচনায় বুঝা গেল যে, মু’মিন মুসলমানদের জন্যে রমযান মাস একটি বরকতময় ব্যবসায়ের মাস। তাই অন্যান্য মাসের তুলনায় মুসলমানদের কাছে এ মাসের গুরুত্ব অপরিসীম। এ মাসে ভাল বীজ বপন করতে না পারলে আখেরাতে ভাল ফসল ঘরে তোলা যাবে না। একমাত্র মুসলমান ছাড়া এ মাসের গুরুত্ব আর কারো পক্ষে বোঝার কথা নয়। তাই দুনিয়ার মিনা বাজারের মতই শাবান মাস থেকেই শুরু হয় মুসলমানদের আখিরাতের বাজারের পসরা বা দোকান সাজানোর প্রস্তুতি।

অনন্তকাল ধরেই চলে আসছে এই রীতি। কঠিন সংযম পালনের মাধ্যমে নফ্সে আম্মারাকে কাবু করে শয়তানের বিরুদ্ধে মানুষ যে অভিযান প্রতি বছর চালিয়ে থাকে, সেই অভিযানের সফলতা বা বিফলতা কার ভাগ্যে কতটুকু জুটল, এই হিসাব কিন্তু মানুষ করে না। যদি এই হিসাব সঠিকভাবে যোগ বিয়োগের মাধ্যমে মানুষ মিলিয়ে দেখত, তাহলে হয়তো বা তারা বুঝতে পারতো যে, এদিনটি সত্যি সত্যি কাদের জন্যে বয়ে আনে আনন্দ আর কাদের জন্যে বিষাদ?

আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিনটিকে মু’মিন মুসলমানদের জন্যে খুশীর দিন বলেছেন। কারণ, হিসাবে বলা হয়েছে, মানুষ এ মাসে সংযম সাধনের মাধ্যমে নিজ নিজ নফ্সকে দমন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করে থাকে। যার ফলে আল্লাহ্ তাআলা তাঁকে ক্ষমা করে জান্নাত দান করে থাকেন। আর এই জান্নাত প্রাপ্তির আনন্দই হলো মুসলমানদের ঈদুল ফিতরের আনন্দ।

যেমন- ব্যবসায় লাভ করে আনন্দ করে, পরীক্ষায় পাশ করে আনন্দ করে, তেমনি রমযান মাসটি মু’মিন মুসলমানদের জন্যে পরীক্ষার বা ব্যবসায়ের মাস। এ মাসে যারা পরীক্ষায় পাশ করবে, ব্যবসায়ে লাভ করবে, কেবল তাদের জন্যেই ঈদুল ফিতর বয়ে আনবে আনন্দ, বয়ে আনবে খুশী।

গতানুগতিক ধর্মীয় অনুষ্ঠান হিসাবে ঈদুল ফিতরে মূল্যায়ন করার কারণেই রোযার তাৎপর্য বা ঈদ উৎসবের গুরুত্ব অনুধাবন করতে আমরা ব্যর্থ হয়ে থাকি। যার কারণে রোযা শুধু আমাদের দৈহিক কষ্টই বাড়িয়ে থাকে না, আত্মারও কোন উপকার হয় না। আমাদের আত্মার মৃত্যুর পর নফ্সে মুত্বমাইন্যার জন্ম না হওয়া পর্যন্ত ঈদের খুশী; সে কেবল পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভূঁড়ি-ভোজনের মাধ্যমেই থাকবে সীমাবদ্ধ। এতে খুশী বা আনন্দের কোন কারণ নাই, বরং ব্যর্থতার জন্যে আল্লাহ্ তাআলার দরবারে বেশী বেশী করে কান্নাকাটি ও রোনাজারীর মাধ্যমে ক্ষমা ভিক্ষা করা উচিত।

কারণ, পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে কেউ আনন্দে মিষ্টি বিলায় না। মুসলমাদের জন্যে রমযান মাস অবশ্যই পরীক্ষার মাস। এ মাসে যারা কামিয়াব হতে পারবে, আখিরাত তাদের স্বাগত জানাবে। আর কামিয়াবীর শর্তগুলি আল্লাহ্ তাআলার জিজ্ঞাসার মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তাই আসুন, পবিত্র রমযান শেষে ঈদুল ফিতর যাতে আমাদের জন্যে সত্যিকার আনন্দ বা খুশী বয়ে আনে তার ফিকিরে সবাই আত্মনিয়োগ করি। আল্লাহ্ আমাদেরকে হিদায়াতের নূর দান করুন। আমীন॥

লেখকঃ সম্পাদক- উম্মাহ ২৪ ডটকম এবং নির্বাহী সম্পাদক- মাসিক মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।