।। শায়খ আহমাদুল্লাহ ।।
আয়মান সাদিক তাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে ইমোশনাল এক ভিডিও আপলোড করেছেন। কাল রাতে আমি তাকে বলেছি, কেউ হত্যার হুমকি দিলে সেটা ফেসবুকে বলার চেয়ে পুলিশকে জানানোটা বেশি জরুরী। ফেসবুকে আপনি বলতেই পারেন। তবে সেটাকে খুব বড় করে দেখানো মানে- কারো উড়াধুড়া হুমকির দোষ টেন মিনিট স্কুল ইস্যুতে গঠনমূলকভাবে সমালোচনা কারীদের উপর চাপানো। যেটা সম্পূর্ণ অন্যয্য ও অযৌক্তিক। যদি সমালোচনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য এটা করা হয় তাহলে সেটা বাহ্যিকভাবে ফলপ্রসু হলেও চূড়ান্তভাবে মানুষের ঘৃণাই বাড়াবে।
চেঞ্জ টিভি’র আমিরুল মোমেনীন মানিক গেল সপ্তাহে বাংলাদেশে সমকামিতার বৈধতার বিরোধিতা করে একটি ভিডিও আপলোড করেছেন। সে কারণে তাকেও হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে জানিয়েছেন। তাহলে কি এটাও আয়মান সাদিক ও সামির মুন্তাজিদদের পক্ষাবলম্বনকারীদের ওপরে বর্তাবে?
আয়মান সাদিকের ফেসবুকে ক্ষমা চাওয়া এবং তাদের চ্যানেল থেকে আপত্তিকর ভিডিও ডিলেট করাকে কেউ কেউ তার চালাকী বা অপকৌশল বলছেন, আবার কেউ কেউ সাধুবাদ জানাচ্ছেন। আমি বলবো, যেটুকু করেছেন তিনি সেটুকুর প্রসংশা অবশ্যই করবো। তবে এটা যে তাদের কুট-কৌশল বা সাময়ীক পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য চালাকী নয় সেটা পরবর্তী কার্যক্রমের মাধ্যমে তাদেরকেই প্রমাণ করতে হবে। আয়মান সাহেব আমাকে একাধিকবার ফোনে বলেছেন যে, ‘ভাই আমাদেরকে একটি বারের জন্য সুযোগ দিন। ভবিষ্যতে এমন কিছু হলে আপনারা যা খুশি বলবেন, আমার আর কিছু বলার থাকবে না।’ আমরা কি এখন এ ইস্যুতে নিরব থাকতে পারি না?
আরও পড়তে পারেন-
ইসলাম গ্রহণ করায় সিলভিয়া ইতালিয়ান চরমপন্থীদের বিদ্বেষের শিকার হন
ফিলিস্তিনের কোরআনে হাফেজা চার যমজ বোনের প্রশংসায় মুসলিম বিশ্ব
ভারতের মতো শ্রীলঙ্কাও মুসলমানদেরকে কলঙ্কিত করতে করোনভাইরাসকে হাতিয়ার করছে
ঘৃণা-বিদ্বেষ নয় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট থাকুক
উলামায়ে কেরাম পাঠ্যপুস্তক থেকে ‘বিবর্তনবাদ’ শিক্ষা বাতিলের দাবি কেন তুলেছেন?
কেউ যদি মুখে নিজেকে মুসলিম দাবি করেন এবং তার মধ্যে ইসলাম বিরোধী কোনো কাজ দেখা যায় (জরুরিয়াতে দীন ছাড়া) তাহলে তার ব্যখ্যা চাইতে হবে লোকটির কাছে। তিনি যদি ভুল ব্যখ্যাও দেন তাহলেও তাকে সব ক্ষেত্রে অমুসলিম বা মুরতাদ বলা কঠিন। এ ধরণের ইস্যুতে অন্তত সাধারণ মানুষ বা বিচ্ছিন্নভাবে কেউ এমন মন্তব্য করা ইসলামী শরিয়ার নীতিবিরুদ্ধ।
টেন মিনিট স্কুল এ দেশের লাখো শিক্ষার্থীর পছন্দের প্লাটফর্ম। আমি আয়মান সাদিক সাহেবকে বলেছি, এই প্লাটফর্ম বিতর্ক সৃষ্টি না করে যদি শিক্ষা বিস্তারে কাজ করে এবং বিতর্কিতদের বাদ দেওয়া হয় তাহলে সেটা সবার প্রসংশা কুড়াবে। একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে টেন মিনিট স্কুলের কাছে আমি সে প্রত্যাশা করবো।
যে কোনো ইস্যুতে যে কোনো পক্ষের কিছু কিছু সাধারণ মানুষ মন্তব্য করতে গিয়ে অনেক সময় সীমালঙ্ঘন করেন। অনেক সময় ফেইক আইডি থেকে কোনো সুবিধাবাদী মহল কিংবা নিজেদর লোকেরাও এসব কাজ করে অন্যদের ঘাড়ে চাপানোর অপচেষ্টা করেন। প্রশাসন চাইলে সেগুলো বের করা মোটেও কঠিন কিছু নয়।
পরিশেষে বলবো, যারা প্রচলিত আইন, সমাজ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ বিরোধী কাজের সমালোচনা করছেন তারা গঠনমূলক সমালোচনা করুন। সীমালঙ্ঘন ও আপত্তিকর মন্তব্য করে ইসলাম ও মুসলিমদের ইমেজ নষ্ট করবেন না। আর টেন মিনিট স্কুল কতৃপক্ষকে বলবো, শিক্ষার অন্তরালে এদেশের কৃষ্টি-কালচার ও মূল্যবোধ বিরোধিতার কোনো এজেন্ডা নাই বলে যে দাবি আপনারা করেছেন তার বাস্তবতা প্রমাণের জন্য আমরা পরবর্তী দিনগুলোর দিকে তাকিয়ে রইলাম। আর হ্যাঁ, এভাবে তাকে বা চেঞ্জ টিভির মানিক সাহেবকে হুমকির মতো উগ্রতাকে আমি সমর্থন করি না। [ফেসবুক পোস্ট, ৬ জুলাই, ২০২০ইং]
উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ
উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com