Home মহিলাঙ্গন ‘হাফেজা’ হয়ে অন্ধ নারীর স্বপ্ন পূরণ

‘হাফেজা’ হয়ে অন্ধ নারীর স্বপ্ন পূরণ

[অদম্য ইচ্ছাশক্তিও অসম্ভবকে সম্ভবে পরিণত করতে পারে- এর বাস্তব দৃষ্টান্ত সৌদি আরবের ৩২ বছর বয়সী দৃষ্টি প্রতিবন্ধী নারী হুদা আত তাইয়িবের হাফেজা হওয়া। জেদ্দার এই নারী প্রমাণ করেছেন কঠোর অধ্যাবসায় এবং দৃঢ় সংকল্পের সমন্বয়ে মানুষ অসাধ্য কাজকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে। কুরআনের হাফেজা হওয়া- শৈশবের এই স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। সম্প্রতি আরবি গণমাধ্যম ‘আজিল’-কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কুরআনে কারিম মুখস্থ করার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন হুদা আত তাইয়িব। ভাষান্তর করেছেন বেলায়েত হুসাইন]

‘শৈশবেই স্বপ্ন দেখতাম কুরআনে কারিমের হাফেজা হওয়ার। কিন্তু অন্ধ হওয়ার কারণে অসংখ্য বাধার মুখে পড়তে হয়। এরপরও হাতগুটিয়ে বসে থাকিনি; নিজ চেষ্টা সাধনা ও মেহনত অব্যাহত রাখি। এবং , আলহামদুলিল্লাহ! এই বয়সে উপনীত হয়েও সম্পূর্ণ কুরআন হিফজ করতে সমর্থ হয়েছি’।

‘সর্বপ্রথম আমি হাফেজা হওয়ার অনুপ্রেরণা পেয়েছি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের এই হাদিস থেকে- তিনি ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে সর্ব উত্তম ওই ব্যক্তি যে কুরআন শিখে এবং শেখায়’।

‘এতে কোন সন্দেহ নেই- প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর অন্তরে কুরআনের প্রতি অনেক সম্মান রয়েছে। আর এ কথাও প্রমাণিত যে, উম্মাহর সাফল্য ও সংশোধনে কুরআনের ভূমিকা ব্যপক- যা কেবল হাফেজদের ক্ষেত্রেই নয়; বরং গোটা সমাজে পবিত্র এই গ্রন্থের প্রভাব স্বীকৃত। আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস ছিলো, বান্দা কুরআনের মাধ্যমে সম্ভ্রান্ত ও উম্মাহর জন্য কল্যাণের বাহক হতে পারে এবং যদি কেউ কুরআনকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরেন, তাহলে আল্লাহ তাকে দুনিয়া-আখেরাতে কল্পনাতীত মর্যাদা দান করবেন- এসব ফযীলত ও প্রতিদানই আমাকে কুরআনের প্রতি বেশি আকৃষ্ট করে’।

আরও পড়তে পারেন-

ওয়েব সিরিজের নামে নোংরামি ও নগ্নপনার চর্চা বন্ধ করুন

গীবত ও পরনিন্দার ভয়াবহ পরিণতি এবং শরয়ী বিধান

রাসূলুল্লাহ (সা.)এর দাম্পত্য জীবনে খাদিজা (রাযি.)এর ভূমিকা

এশিয়ায় ইসলামফোবিয়ার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ‘ভারত’

বিদেশনীতিতে প্রবল ধাক্কা খেল ভারত

‘কয়েক বছর আগে আমি পর্যায়ক্রমে কয়েকটি কুরআন মুখস্থকরণ কোর্সে ভর্তি হই। এভাবে প্রথম কোর্সে কয়েক পারা মুখস্থ করি, দ্বিতীয় কোর্সে হিফজ সম্পন্ন হয়, তৃতীয়টিতে সম্পূর্ণ কুরআন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত শোনাই এবং সবশেষ কোর্সে আরো টাটকা মুখস্থ করে সহপাঠীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে উত্তীর্ণ হই’।

‘কুরআন হিফজ করার বরকতময় যাত্রায় আমাকে সাহায্যকারী শিক্ষক-শিক্ষিকা, পিতা-মাতা এবং বান্ধবীদের প্রতি আমি চিরকৃতজ্ঞ। কুরআনের বেশিরভাগ অংশ আমি অডিও মশক শ্রবণ করে মুখস্থ করেছি- এজন্য দূরের এসব ক্বারিদের প্রতিও স্বশ্রদ্ধ শুকরিয়া জানাই। আমি উলূমুল কুরআন ও হাদিস (কুরআন-হাদিসের উচ্চতর জ্ঞান) অধ্যয়নেরও সংকল্প করেছি’।


হুদা আত তাইয়িব বলেন, ‘আমি কুরআনের হাফেজা হয়ে জীবনের যে মিষ্টতা আস্বাদন করছি, তা আগে কখনো অনুভব করিনি। হাফেজা হওয়ার পর আমার জীবন বরকতপূর্ণ হয়েছে- এজন্য সুস্থ অসুস্থ সবাইকে অন্তত কোরআন তিলাওয়াতের আহবান জানাই’।

‘আমি আপনাদের অনুরোধ করছি, সময়কে কুরআনের জন্য ব্যয় করুন, তাহলে কাঙ্খিত জীবন লাভ করবেন। নইলে এমন একদিন আসবে- যেদিন আফসোস করবেন, কেন কুরআন থেকে দূরে ছিলাম!’

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।