Home পরিবার ও সমাজ সুখী পরিবার গঠনে রাসূল (সা.)এর উত্তম আদর্শ এবং ইসলামে ফ্যামিলি প্লান

সুখী পরিবার গঠনে রাসূল (সা.)এর উত্তম আদর্শ এবং ইসলামে ফ্যামিলি প্লান

।। আব্দুল কাদির আল মাহদি ।।

সর্বপ্রথম আল্লাহ তা’আলার শোকর আদায় করি। কারণ আমাদের ধর্ম হচ্ছে সব চয়ে উত্তম ধর্ম। আমরা মুহাম্মদ (সা) এর উম্মত হচ্ছি সব চেয়ে উত্তম উম্মত। আমাদের নবী হচ্ছেন সব চেয়ে মার্যাদাবান ও সম্মানীত নবী।

আজকাল অনেক মানুষ পারিবারিক অশান্তির অভিযোগ করে। প্রতিনিয়ত কলহ-বিবাদ, বিচ্ছেদ ইত্যাদির অভিযোগ শুনা যায়। মুসলিম পরিবার গুলোতে এগুলোর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এর ফলে আজ তালাকের প্রবনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে অথবা স্ত্রী, সন্তানদের সাথে ঝগড়া ও মনোমালিন্য নিয়ে সংসার করতে হচ্ছে।

পরিবারের অভিবাক হচ্ছেন পিতা। পিতা নিজের পরিবারের প্রতি মনোনিবেশ থেকে অনেক দূরে। কেউ কেউ দুনিয়ার পেছনে এতই ব্যস্ত পরিবারের প্রতি সামান্য খেয়াল দেয়ার সময় নেই। আবার কেউ কেউ নিজের কর্মস্থলের কলিগ, সাথি-সঙ্গি ও বন্ধু-বান্ধব নিয়ে পড়ে আছেন। অন্যদিকে তার নিজের পরিবার অন্যের দ্বারা নষ্ট হচ্ছে। সেগুলোর প্রতি ভ্রূক্ষেপই করছে না।

নিজের সন্তানরা খারাপ সঙ্গিদের সাথে উঠাবসা করছে। ইন্টারনেট, সোশাল মিডিয়া দ্বারা ভিবিন্নভাবে সন্তানরা প্রভাবিত হচ্ছে। এসব কিছু একজনের সন্তান নষ্ট হওয়ার পথে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে।

স্বরন রাখতে হবে, আমাদের ধর্ম হচ্ছে সর্বোত্তম জীবন ব্যবস্থার নাম। এখানে সব অভিযোগের সামাধান রেডি আছে। যদি আমরা সঠিক পথের উপর ইস্তিক্বামতের সাথে থাকতে পারি। সেই পথ দেখিয়ে দিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবী (সা)। এই জন্য আল্লাহ তা’আলা ঘোষণা করে বলেন-

‎لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে, তাদের জন্যে রসুলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। (আল কুরআন, ৩৩/২১)।

মানুষের জীবনে যে অসুবিগুলো আসে, মূলত দ্বীন থেকে দূরে চলে যাওয়ার কারনেই আসে। তাছাড়া মানুষের জীবনে যে সুখ-শান্তি আসে, সেগুলো এই দ্বীনের উপর নিয়মিত চলার কারণেই আসে। কেন আসবে না? যেখানে আল্লাহ তা’আলা ঘোষনা করেন-

‎قَدْ جَاءَكُمْ مِنَ اللَّهِ نُورٌ وَكِتَابٌ مُبِين

‎يَهْدِي بِهِ اللَّهُ مَنِ اتَّبَعَ رِضْوَانَهُ سُبُلَ السَّلَامِ وَيُخْرِجُهُمْ مِنَ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِهِ وَيَهْدِيهِمْ إِلَىٰ صِرَاطٍ مُسْتَقِيمٍ

তোমাদের কাছে একটি উজ্জল জ্যোতি এসেছে এবং একটি সমুজ্জল গ্রন্থ।

এর দ্বারা আল্লাহ তাদেরকে নিরাপত্তার পথ প্রদর্শন করেন, যারা তাঁর সন্তুষ্টি কামনা করে এবং তাদেরকে স্বীয় নির্দেশ দ্বারা অন্ধকার থেকে বের করে আলোর দিকে আনয়ন করেন এবং সরল পথে পরিচালনা করেন। (আল কুরআন, ৫/১৫,১৬)।

সুন্দর পরিবার গঠনের ধারাবাহিক প্রক্রিয়া

পরিবারের সুখ, স্বচ্ছন্দ ও শান্তির জন্য ইসলামের কিছু ধারাবাহিক পদ্ধতি অনুসরনের করা জরুরী। এ ক্ষেত্রে পরিবার গঠনের আগ থেকে অর্থাৎ একবারে শুরু থেকে ইসলাম যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সেগুলো মানলে জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে শান্তি ভোগ করা যাবে।

১. সুখী পরিবার গঠনে একজন স্ত্রী বড় ভূমিকা পালন করে। রাসুল (সা) বলেন- যে বিবাহ করার ইচ্ছা করে, সে যেন দ্বীনকে প্রাধান্য দেয়ে। কেননা, একজন ধার্মিক স্ত্রী হচ্ছে একটি ঘরের মূল, শান্তির উসিলা ও পরিবার সংস্কারে মূখ্য। আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত রাসুল (সা) এর হাদিস হচ্ছে-

تُنْكَحُ المَرْأَةُ لأَرْبَعٍ: لِمَالِهَا، وَلِحَسَبِهَا، وَلِجَمَالِهَا، وَلِدِينِهَا، فَاظْفَرْ بذَاتِ الدِّينِ تَرِبَتْ يَدَاكَ

নবী (সা) বলেন, চারটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রেখে মেয়েদেরকে বিয়ে করা হয়ঃ তার সম্পদ, তার বংশমর্যাদা, তার সৌন্দর্য ও তার দ্বীনদারী। সুতরাং তুমি দ্বীনদারীকেই প্রাধান্য দেবে নতুবা তুমি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। (সহিহ বুখারী)।

আরও পড়তে পারেন-

২. ফ্যামিলি প্লানের দ্বিতীয় ধারাবাহিক বিষয় হচ্ছে বিবাহ পরবর্তি আপন স্ত্রীর সাথে মিলামিশা করা।ভব্যিষ্যতে সুন্দর পরিবার কেমন হবে। রাসুল (সা) মানুষকে অগ্রিম নির্দেশ দিয়েছেন। দু’আ শিখিয়েছেন। মানুষ যখন আপন স্ত্রীর সাথে মেলামেশা করতে যাবে, তখন দু’আ পড়ে মিলন শুরু করবে। এর দ্বারা আপন স্ত্রীর গর্ভে বাচ্চা আসার ফায়সালা হলে এই বাচ্চা শয়তান থেকে সুরক্ষিত থাকবে। পরিবারে অশৃংখলা সৃষ্টিকারক হবে না। রাসুল (সা) বলেন-

‎لَوْ أَنَّ أَحَدَهُمْ إِذَا أَرَادَ أَنْ يَأْتِيَ أَهْلَهُ قَالَ بِاسْمِ اللَّهِ اللَّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَجَنِّبْ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا ، فَإِنَّهُ إِنْ يُقَدَّرْ بَيْنَهُمَا وَلَدٌ فِي ذَلِكَ لَمْ يَضُرَّهُ شَيْطَانٌ أَبَدًا

তোমাদের কেউ স্ত্রীর সঙ্গে সঙ্গত হতে চাইলে সে বলবেঃ আল্লাহর নামে শুরু করছি। হে আল্লাহ! আপনি আমাদের শয়তান থেকে দূরে রাখুন এবং আপনি আমাদেরকে যা দান করেন তা থেকে শয়তানকে দূরে রাখুন। তারপর তাদের এ মিলনের মাঝে যদি কোন সন্তান নির্ধারিত থাকে তা হলে শয়তান এ সন্তানকে কক্ষনো ক্ষতি করতে পারবে না। (সহিহ বুখারী)।

৩. সুখী পরিবারের পরবর্তি প্রসেস হচ্ছে- বাচ্চা জন্মের পর পরই আজান শুনিয়ে দেয়া। এটা হচ্ছে সুন্নত। এই আজান দ্বারা শুরুতেই বাচ্চার কানে তাওহিদের মেসেজ পৌঁছে দেয়া হল। এর দ্বারা বাচ্চার পরবর্তি দ্বীনি ও দুনিয়াবী জীবনে আছর অব্যাহত থাকেবে, সাথে সাথে রাসুল (সা) এর সরাসরি সুন্নতেরও অনুসরন করা হল। কারণ রাসুল (সা) নিজে হাসান (রা) এর কানে আজান শুনিয়েছিলেন। আবু রাফে’য় (রা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন-

‎رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَذَّنَ فِي أُذُنِ الحَسَنِ بْنِ عَلِيٍّ حِينَ وَلَدَتْهُ فَاطِمَةُ بِالصَّلَاةِ

ফাতিমা (রাঃ) হাসান ইবনু আলী (রাঃ)- কে প্রসব করলে আমি রাসুলুল্লাহ (সা)-কে হাসানের কানে আযানের মতই আযান দিতে দেখেছি। (আত-তিরমিযী)

৪. সুখী পরিবার হতে পরবর্তি স্টেপ হচ্ছে বাচ্চার নাম রাখা। একটি বাচ্চার নাম রাখার ক্ষেত্রে রাসুল (সা) বলেন সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখতে। ইবনে উমর রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-

تَسَمَّوْا بِأَسْمَاءِ الأَنْبِيَاءِ ، وَأَحَبُّ الأَسْمَاءِ إِلَى اللَّهِ عَبْدُ اللَّهِ وَعَبْدُ الرَّحْمَنِ ، وَأَصْدَقُهَا حَارِثٌ وَهَمَّامٌ ، وَأَقْبَحُهَا حَرْبٌ وَمُرَّةُ

তোমরা নবী-রাসুলগণের নামে নামকরণ করো। আল্লাহর নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম হলো ‘আবদুল্লাহ ও ‘আবদুর রহমান। নামের মাঝে হারিস ও হাম্মাম হলো বিশ্বস্ত নাম এবং হারব ও মুররাহ হলো সবচেয়ে নিকৃষ্ট নাম। (আবু দাউদ)।

দু:খের বিষয় হচ্ছে। আজকাল কিছু মানুষ অানকমন ও বিজাতীয় নাম রাখতে অনেক তৎপর। অথচ এসব নাম পরিবারে অশান্তির কারণ হয়। বিষয়টি না জানার করণে বেখবর থাকে। উলামারা বলেন নাম তার নামকের সাথে লিঙ্ক থাকে। এমনকি তার নামবাহকের উপর প্রভাব পড়ে। ইবনে ক্বায়্যিম (রাহ) বলেন- মানুষের স্বভাব, চরিত্র, আমাল ও কাজ-কর্ম তার নামের সাথে সামঞ্জস্য থাকে। তাকে যে নামে ডাকা হয় সে নামের প্রভাব পুরা জীবনের উপর পড়তে থাকে। এই জন্য রাসুল (সা) নাম রাখার ক্ষেত্রে খুব খেয়াল করতে বলছেন। সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখতে নির্দেশ করেছেন।

৫. পারিবারিক শান্তির আরেক প্রদেক্ষেপ হচ্ছে- মানুষ আপন স্ত্রীর সাথে উত্তম আচরণ করবে। তাকে তার পুরাপুরি হক্ব আদায়ে সচেষ্ট থাকবে। তার নিত্যদিনের শারীরিক ও মানুষিক চাহিদা পুরা করবে। আমাদের শরী’য়ত এ ব্যাপারে অনেক গুরুত্ত্বরুপ করেছে। এই জন্য রাসুল (সা) ইরশাদ করেন-

‎خَيْرُكُمْ خَيْرُكُمْ لأَهْلِهِ وَأَنَا خَيْرُكُمْ لأَهْلِي

তোমাদের মাঝে সে-ই ভাল যে তার পরিবারের নিকট ভাল। আর আমি আমার পরিবারের নিকট তোমাদের চাইতে উত্তম। (আত-তিরমিযী)।

৬. পারিবারিক শান্তির আরেক প্রদেক্ষেপ হচ্ছে-স্ত্রীদের সাথে বিনোদন মূলক আচরণ। এমন আচরণ রাসুল (সা) থেকে প্রমানিত আছে। এর বিপরীত রাগ, গোস্বা করা বা খারাপ আচরণ করা রাসুল (সা) এর আদর্শ পরিপন্থী। স্বামী-স্ত্রীর ভিতর খারাপ আচরণের প্রভাব নিজ সন্তান উপর পড়তে শুরু করে। এর দ্বারা বাচ্চাদের ভিতর ঘৃণার প্রবনতা প্রলম্বিত হয়। জানেন কি? রাসুল (সা) আপন স্ত্রীদের সাথে বিনোদন করেছেন। সুন্দর আচরণ করেছেন। আয়শা (রা) থেকে বর্ণিত-

عن عائشةَ، رضيَ اللَّهُ عنها، أنَّها كانَت معَ النَّبيِّ صلَّى اللَّهُ علَيهِ وسلَّمَ في سفَرٍ قالت: فسابقتُهُ فسبقتُهُ على رجليَّ، فلمَّا حَملتُ اللَّحمَ سابقتُهُ فسبقَني فقالَ: هذِهِ بتلكَ السَّبقةِ

আয়শা (রা) এক সফরে নবী (সা) এর সাথে ছিলেন। তিনি বলেন, আমি তাঁর সাথে দৌড় প্রতিযোগিতা করে তাঁর আগে চলে গেলাম। অতঃপর আমি মোটা হয়ে যাওয়ার পর (অন্য আরেক সফরে) তাঁর সাথে আবারো দৌড় প্রতিযোগিতা করলাম, এবার তিনি (রাসুল সা:) আমাকে পিছে ফেলে দিলেন বিজয়ী হলেন। তিনি বলেনঃ এই বিজয় সেই বিজয়ের বদলা। (আবু দাউদ)।

৭. পারিবারিক শান্তির আরেক প্রদেক্ষেপ হচ্ছে দু’আ করা। একটি ঘরের শান্তি হচ্ছে মূখ্য। আল্লাহ তা’আলা আমাদেরকে বিষয়টি শিখিয়ে দিচ্ছেন, কীভাবে দু’আ করতে হবে।

‎وَالَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا

এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর। (আল কুরআন, ২৫/৭৪)।

বিশেষত পিতারা চব্বিশ ঘন্টা ঘরে থাকতে পারে না। কোন কোন ক্ষেত্রে পরিবারের লোকজন শুধু খানা-পিনা ও ঘুমের সময় পিতার সাথে সাক্ষাত হয়।

এমন অবস্থায়, কীভাবে সন্তানদের সাথে পিতার সম্পর্ক তৈরী হবে? কীভাবে স্ত্রী, সন্তানরা পিতাকে আপন করে নিবেন? পিতার থেকে তারা কোন গল্প শুনেনা। শুনেনা কোন উপদেশ! তাহলে একজন পিতা কীভাবে স্ত্রী, সন্তানের মুহব্বত দাবী করতে পারে?

এই জন্য পিতাদের উচিত কিছু সময় নিজ পরিবারের জন্য বাহির করা। স্ত্রী, সন্তানদের সময় দেয়া। তাদের সাথে বসে গল্প গুজব করা। তাদের সার্বিক খবর রাখা।

৮. পারিবারিক শান্তির আরেক প্রদেক্ষেপ হচ্ছে- পরিবারের অভিভাবক হিসেব পিতার উচিত, ভালবাসা ও নম্রতার সাথে পরিবারকে সদুপদেশ দেয়া। সুন্দর পদ্ধতিতে বুঝালে তাদের উপর ভাল প্রভাব পড়বে। তারা সঠিক পথে আসার শক্তি পাবে। নিজেদের ভিতরে থাকা কমতিগুলোর সংস্কার করতে পারবে। কাজেই এমন উত্তম ও সুন্দর পদ্ধতি অর্জন করা।

আল্লাহর রাসুল (সা) যুবকদের বুঝাতেন, এমনকি ছোটদের প্রতি খেয়াল দিতেন। তাদেরকে উপদেশ দিতেন। তাদেরকে সঠিক বিষয় শিখিয়ে দিতেন। উমর ইবনে আবি সালামাহ (রা) এর একটি ঘটনা হাদিসে বর্ণিত আছে। তিনি তখন ছোট ছিলেন। হাদিস হচ্ছে-

عُمَرَ بْنَ أَبِي سَلَمَةَ، يَقُولُ كُنْتُ غُلاَمًا فِي حَجْرِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَكَانَتْ يَدِي تَطِيشُ فِي الصَّحْفَةِ فَقَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ “‏ يَا غُلاَمُ سَمِّ اللَّهَ، وَكُلْ بِيَمِينِكَ وَكُلْ مِمَّا يَلِيكَ

উমর ইবনে আবি সালামাহ (রা) বলেনঃ আমি ছোট ছেলে অবস্থায় রসুলুল্লাহ্‌ (সা)-এর খিদমাতে ছিলাম। (এক সাথে খেতে বসলে) খাবার বাসনে আমার হাত ছুটাছুটি করত। রসুলুল্লাহ্‌ (সা) আমাকে বললেনঃ হে বৎস! বিসমিল্লাহ বলে ডান হাতে আহার কর এবং তোমার কাছের সাইড থেকে খাও। এরপর থেকে আমি সব সময় এ নিয়মেই খাদ্য গ্রহন করতাম। যার যার কাছের থেকে আহার করা। (সহীহ বুখারী)।

এই ভাবে রাসূল (সা)এর নিজের চাচাত ভাই ইবনে আব্বাস (রা), তিনি যখন ছোট ছিলেন।?রাসুল (সা) তাকে কিছু বাক্য শিখিয়ে দিলেন।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ: “كُنْت خَلْفَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه و سلم يَوْمًا، فَقَالَ: يَا غُلَامِ! إنِّي أُعَلِّمُك كَلِمَاتٍ: احْفَظْ اللَّهَ يَحْفَظْك، احْفَظْ اللَّهَ تَجِدْهُ تُجَاهَك، إذَا سَأَلْت فَاسْأَلْ اللَّهَ، وَإِذَا اسْتَعَنْت فَاسْتَعِنْ بِاَللَّهِ، وَاعْلَمْ أَنَّ الْأُمَّةَ لَوْ اجْتَمَعَتْ عَلَى أَنْ يَنْفَعُوك بِشَيْءٍ لَمْ يَنْفَعُوك إلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ لَك، وَإِنْ اجْتَمَعُوا عَلَى أَنْ يَضُرُّوك بِشَيْءٍ لَمْ يَضُرُّوك إلَّا بِشَيْءٍ قَدْ كَتَبَهُ اللَّهُ عَلَيْك؛ رُفِعَتْ الْأَقْلَامُ، وَجَفَّتْ الصُّحُفُ

হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, কোন এক সময় আমি রাসুলুল্লাহ (সা)-এর পিছনে ছিলাম। তিনি বললেন- হে তরুণ! আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দিচ্ছি- তুমি আল্লাহ তা‘আলার (বিধি-নিষেধের) রক্ষা করবে, আল্লাহ তা‘আলা তোমাকে রক্ষা করবেন। তুমি আল্লাহ তা‘আলার সন্তুষ্টির প্রতি লক্ষ্য রাখবে, আল্লাহ তা‘আলাকে তুমি কাছে পাবে। তোমার কোন কিছু চাওয়ার প্রয়োজন হলে আল্লাহ তা‘আলার নিকট চাও, আর সাহায্য প্রার্থনা করতে হলে আল্লাহ তা‘আলার নিকটেই কর। জেনে রাখো! যদি সকল উম্মাতও তোমার কোন উপকারের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে ততটুকু উপকারই করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তা‘আলা তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। অপরদিকে যদি সকল উম্মাত তোমার কোন ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একতাবদ্ধ হয়, তাহলে ততটুকু ক্ষতিই করতে সক্ষম হবে, যতটুকু আল্লাহ তা‘আলা তোমার তাক্বদিরে লিখে রেখেছেন। কলম তুলে নেয়া হয়েছে এবং লিখিত কাগজসমূহও শুকিয়ে গেছে। (আত-তিরমিযী)।

আল্লাহ তা’আলা আমাদের পারিবারিক অশান্তি থেকে হেফাজত করুন। শান্তি, শৃঙ্খলা দিয়ে ভরপুর যেন করে দেন। আমিন।।

[লিখেছেন- বার্সেলোনা, স্পেন থেকে]

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।