Home রাজনীতি আল্লামা কাসেমী (রহ.)এর স্মৃতি চির জাগরুক হয়ে থাকবে: মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী

আল্লামা কাসেমী (রহ.)এর স্মৃতি চির জাগরুক হয়ে থাকবে: মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী

বক্তব্য দিচ্ছেন জমিয়ত নেতা মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী। - ফাইল ছবি।

নূর হোসাইন: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী বলেছেন, যে নামটি এখানে বারবার উচ্চারিত হচ্ছে, সেটি হচ্ছে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রাহ.)। খেয়াল করে দেখলাম যতজন বক্তাই এখানে বক্তব্য রেখেছেন, সবাই হুজুরের নামটা উচ্চারণ করেছেন। তাঁর স্মৃতি আমাদের মাঝে চির জাগরুক হয়ে থাকবে।

তিনি বলেন, আমরা শায়খুল হিন্দ (রাহ.)কে দেখিনি, তবে তাঁর কিতাব মুতায়ালা করেছি। কাসেম নানূতবী (রাহ.)কে দেখিনি তবে তাঁর কিতাব মুতায়ালা করে তাকে চিনেছি। আমাদের নিকট অতীতে যিনি ছিলেন- আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রাহ.) তাঁকে আমরা দীর্ঘ সময় দেখেছি।

তিনি বলেন, আজকে যেহেতু তাকওয়া অর্জনের আলোচনা চলছে, সেহেতু আমি হুজুরের রমজান সংশ্লিষ্ট একটি সংক্ষিপ্ত ঘটনা উল্লেখ করতে চাই! আমি যেহেতু হুজুরের অনেক কাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম, তাই প্রতিদিন সকালবেলা হুজুরের সাথে সাক্ষাৎ করতাম। রমজান আসলে কখনো কখনো এমন হতো যে, যোহরের পর দুই ঘন্টা বসে আছি, কিন্তু হুজুরকে পাচ্ছি না। আসরের পর গিয়েও হুজুরকে পাইনি। এরপর একজন ছাত্রকে দাঁড় করিয়ে দিয়েছি, হুজুর যখনই ফ্রী হয় আমাকে যেন রুম থেকে ডেকে দেয়। অর্থাৎ রমজান মাসটা হুজুর (রাহ.) গভীর ইবাদতে কাটাতেন। একেবারেই বাহিরে বের হতেন না। পূর্ণ রমজান ইতিকাফ অবস্থায় ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকতেন।

তিনি বলেন, আজ আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেব হুজুর বলছেন, কয়েক বছর পর এবার রমজানে বের হলাম অর্থাৎ পুরো রমজান তাঁরা তাকওয়া অর্জনের পেছনে কাটিয়েছেন। আমি হুজুরকে দেখেছি সর্বদা কুরআন তিলাওয়াতে অথবা অন্য কোনো মামুলাত আদায় করছেন।

শনিবার (৯ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মাহে রমাযানের তাৎপর্য’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী এসব কথা বলেন।

আরও পড়তে পারেন-

তিনি আরো বলেন, আমাদের এখানে বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-খতীব, মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস, মহাদ্দিস, মুফাসসির অনেকেই উপস্থিত আছেন। সকলের কাছে দুইটি প্রস্তাব রাখবো। যথা-

১. মানুষকে তাকওয়ার দিকে আহবান করতে মাসব্যাপী তাফসির মাহফিলের আয়োজন করতে পারি, অথবা মসজিদ ভিত্তিক কুরআন শিক্ষার মজলিস চালু করতে পারি।

২. অসহায় ও দরিদ্রদের সেবায় নিজেদের নিয়জিত করতে পারি।

মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী বলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী (রাহ.) একটি হাদীস পড়তেন- خير الناس من ينفع الناس

‘মানুষের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম তো সে, যে মানুষের কল্যাণে কাজ করে, মানুষের উপকার করে। আমরা প্রত্যেকে যদি সিদ্ধান্ত নেই, যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী যতটুকু পারি মানুষকে সাহায্য করি, তাহলে আল্লাহ তায়ালা আমাদের দ্বারা বিশাল খেদমত আঞ্জাম নিবেন।

ارحموا من في الأرض يرحمكم من في السماء

পৃথিবীবাসীর প্রতি দয়ার মানসিকতা রাখতে হবে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের যে অবস্থা, এককথায় চরম ঊর্ধ্বগতিতে। একজন রিকশাচালক সারাদিন কাজ করে দেখে যে, তার আশা পূরণ হচ্ছে না এজন্য আমাদের সকলের একে-অপরের পাশে দাঁড়াতে হবে।

আরেকটি কথা হচ্ছে- আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেব হুজুর সামনে আছেন। তাঁর সামনে তাঁর প্রশংসা করতে চাচ্ছি না, তবুও বলছি। গত দুইদিন যাবত গভীর রাত করে মাদরাসায় ফিরেছি। গিয়ে দেখি হুজুরের রুমে লাইট জ্বালানো। খাদেমকে জিজ্ঞাসা করলাম হুজুর কি ঘুমায়নি? খাদেম বলল, না হুজুর প্রতিরাতেই কুরআন তিলাওয়াত করেন এবং ইবাদত-বন্দেগিতে মগ্ন থাকেন।

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী বলেন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম আকাবিরদের সংগঠন। আমি সকালের কাছে উদাত্ত আহ্বান রাখবো, আমাদের সামনের সারিতে যে সকল আকাবিরগণ এখনো আমাদের মাঝে আছেন, তাদেরকে যথাযথভাবে কদর করা, মূল্যায়ন করা জরুরি। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তাওফিক দান করুন, আমিন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএম

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।