রাজনীতিবিদরা প্রায়ই বলে থাকেন, ‘যদি আমরা ক্ষমতায় আসি’ বা ‘ক্ষমতায় চলে যাচ্ছি’। নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন চান তাঁরা; কিন্তু ক্ষমতা প্রয়োগ আর দায়িত্ব পালন এক বিষয় নয়। নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মাধ্যমে দায়িত্বের পরিবর্তন হয়। সে কারণে আমরা ‘ক্ষমতা’ শব্দটা শুনতে চাই না। নির্বাচনে নির্বাচিত হতে হবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। দায়িত্বসচেতনতা বাড়লে এ শব্দ আর ব্যবহার হবে না।
এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল রবিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন বিটে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসির (আরএফইডি) নতুন কমিটির দায়িত্ব গ্রহণ ও পুরনো কমিটির দায়িত্ব হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সিইসি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সামনে সাধারণ নির্বাচন আসছে। রাজনৈতিক কারণে, ঐতিহাসিক কারণে এই নির্বাচন নিয়ে মানুষের মধ্যে প্রবল আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে। এই নির্বাচনে আপনাদের বস্তুনিষ্ঠ ভূমিকা সবার জন্য ইতিবাচক হবে। নির্বাচনে যাঁরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন গণমাধ্যমের কারণে তাঁরাও সচেতন থাকেন। এমনকি যাঁরা শক্তিমান তাঁরাও মিডিয়ার ভূমিকাকে মূল্যায়ন করেন, যদি তাঁরা বিবেকবান হোন। গণমাধ্যম সব পক্ষের মধ্যে একটা ভারসাম্য সৃষ্টি করে, সবাইকে চাপে রাখে, আমরা কিন্তু চাপে থাকি। কী বলতে কী বলে ফেলি; কোনটা বলতে হবে, কোনটি গোপন রাখতে হবে—এই চিন্তা করতে হয়। আমরা যদি মিডিয়াকে দেশ থেকে একেবারেই ব্লাকআউট করে দিই, তাহলে কিন্তু ডিজাস্টার হয়ে যাবে। রাষ্ট্রই বিনষ্ট হয়ে যাবে।’
আরও পড়তে পারেন-
- উলামায়ে কেরামের প্রতি মুফতি শফী (রাহ.)এর দরদমাখা নসিহত
- কম্পিউটার চিপ শিল্প: জলবায়ুর উপর ফেলছে ভয়ঙ্কর প্রভাব
- ইরানি বিজ্ঞানীকে যেভাবে হত্যা করে ইসরায়েল
- ব্যতিক্রমী এক ইসলামী আইন গবেষক
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
তিনি বলেন, ‘আপনারা বস্তুনিষ্ঠভাবে সংবাদ সংগ্রহ করবেন, পরিবেশন করবেন। আমাদের মধ্যে যদি কোনো বিচ্যুতি ঘটে এবং সেটি যদি আপনাদের দৃষ্টিতে চলে আসে তা কেন প্রচার করবেন না?’
অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান (অব.) বলেন, ‘আপনারা (সাংবাদিক) যা ইচ্ছা লিখতে পারেন। কারণ আপনারা আপনাদের কাজের জন্য নিজেদের কাছে নিজেরা দায়বদ্ধ।’
নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘নির্বাচনে সাংবাদিকদের বড় ভূমিকা রয়েছে। আপনারা কমিশনের গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। পাশাপাশি কমিশনের কার্যক্রম ইতিবাচকভাবে তুলেও ধরবেন।’ তবে নির্বাচনের ওপর জনগণের নেতিবাচক ধারণা যাতে তৈরি না হয় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে সিইসিকে বলা হয়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিসংখ্যান প্রতিবেদন প্রকাশ না করেই বিদায় নিয়েছে কে এম নূরুল হুদার কমিশন। সে কারণে ওই নির্বাচন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত জানারও উপায় নেই। এটা প্রকাশের উদ্যোগ নিলে সাংবাদিক, গবেষকসহ সবার জন্য স্বস্তিকর হবে।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ