Home ওপিনিয়ন শ্বশুরের কাটা মাথা আনারকলির ব্যাগে! মানুষের এই দানবীয় রূপ কেন বাড়ছে?

শ্বশুরের কাটা মাথা আনারকলির ব্যাগে! মানুষের এই দানবীয় রূপ কেন বাড়ছে?

।। শাহানা হুদা রঞ্জনা ।।

আনারকলি নামে ২০ বছরের ফুটফুটে একটি মেয়ে শ্বশুরের কাটা মাথা নিজের ব্যাগে বহন করছিলেন সমুদ্রের পানিতে ফেলে দেবেন বলে। অথচ একজন স্বাভাবিক মানুষের পক্ষে এরকম একটা দৃশ্য ভাবলেও গা গুলিয়ে ওঠার কথা। পরে সেই মাথা আনারকলি ফেলে দিয়েছিলেন চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায়। সম্পত্তি ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে খুন হন ব্যবসায়ী, তার সন্তানদের হাতে। হত্যার আলামত গায়েব করতে গিয়ে স্ত্রী ও সন্তানেরা ১০ টুকরো করেছিলেন হাসান আলীর দেহ। সেখানেই থেমে থাকেননি তারা, পরে নগরীর তিনটি স্থানে ফেলে দিয়ে আসা হয় তার দেহের বিভিন্ন অংশ। লাশ গুম করার এই ভয়াবহ ঘটনা যেকোন অপরাধ থ্রিলারকে হার মানিয়েছে।

ধরা পড়ার পর সেই পুত্রবধূ আনারকলি নির্মোহ ভঙ্গিতে বলেছেন, ‘তখন আমার আবেগ কাজ করেছে, বিবেক কাজ করেনি। বিবেক কাজ করলে এত বড় পাপে নিজে জড়িয়ে পড়তাম না।’ মৃত শ্বশুরের কাটা মাথা ব্যাগে ভরে সমুদ্রে ফেলে দিয়ে আসার সময় তার বিবেক, কী আবেগ কাজ করেছে, সেটা বোঝা সুস্থ কারো পক্ষে অসম্ভব। নৃশংস এ ঘটনা বিচলিত করেছে এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকেও। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘মৃত হাসানের খণ্ডিত মাথার অংশটি দূর থেকে হয়তো আমাদের দেখছে, ডাকছে।”

রাউজানে কলেজছাত্র সিবলিকে হত্যার পর টুকরা টুকরা করে কেটেছে খুনিরা। এরপর শরীর থেকে মাংসও কেটে আলাদা করেছে, যেন কেউ লাশটি শনাক্ত না করতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা বিভিন্ন ধরণের হত্যাকাণ্ডের নির্মম দিকটি আমাদের সবাইকে বেশি বিচলিত করছে। ‘হত্যা করা’ স্বাভাবিকভাবেই খুব ভয়াবহ ও হৃদয়হীন ব্যাপার। সেখানে যখন বাড়তি বীভৎসতা যোগ হয়, তখন স্বভাবতই আতংক আরো বেড়ে যায়। প্রশ্ন জাগে মানুষ কেন দিনদিন এতোটা নির্মম হয়ে উঠছে?

বুয়েটের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরারকে দীর্ঘসময় পিটিয়ে হত্যার ঘটনা; আবার সুনামগঞ্জে বাবা ও চাচা নির্মমভাবে খুন করেছে শিশু তুহিনকে, শুধুমাত্র প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য। শিশুর মুখে বালু গুঁজে শিশুকে হত্যা করেছে তারই স্বজন। ছেলেধরা সন্দেহে ঢাকার বাড্ডায় রেণু নামের এক অভিভাবককে গণপিটুনিতে প্রাণ দিতে হয়েছে। কেউ কাউকে হত্যা করতে চাইলে তো সহজ পদ্ধতিতেই হত্যা করতে পারে, তাহলে কেন নানারকম ভয়ংকর উপায় বেছে নিতে হচ্ছে? আমরা সমাজের এই নেতিবাচক ঘটনাগুলো প্রত্যক্ষ করে আতংকগ্রস্ত, উদ্বিগ্ন ও হতাশ হচ্ছি। কিন্তু মনোবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে একে ব্যাখ্যা করতে পারেন শুধুমাত্র মনোবিজ্ঞানীরাই।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. হেলাল উদ্দীন আহমেদ বলেন, “খুব ছোটবেলা থেকেই কোনো শিশুকে যদি বোঝানো হয় জগতে শক্তি প্রয়োগই একমাত্র সম্পদ, তখন তার জ্ঞান বিকাশের জগতে পরিবর্তন ঘটতে থাকে। মনোবিজ্ঞানী সিগমুন্ড ফ্রয়েডের মতে, এই অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণের পেছনে থাকে মানুষের অবদমিত কামনা-বাসনা, যাকে তিনি তুলনা করেছেন অবচেতন মনের দরজা খুলে দেওয়ার সঙ্গে। অবচেতনে মানুষ যা কামনা করে, চেতন মনে সে তার শিক্ষা, সভ্যতা, সামাজিকতা আর নৈতিকতা দিয়ে সেগুলো ঢেকে রাখে। এই অবদমিত চাহিদাগুলো সরাসরি পূরণ হয় না বলে হিংস্রতা আর নৃশংসতার মধ্য দিয়ে ঘুরপথে পূরণ করার চেষ্টা চলে। তখনই নিষ্ঠুরতার প্রকাশ ঘটে। মানুষের মধ্যে এই হিংস্রতার ব্যাখ্যায় অন্য মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, একজন মানুষ নিজের হতাশা থেকেই মূলত আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। নিজের হতাশা কাটাতে সে বেছে নেয় দুর্বল একজনকে। এই দুর্বলের ওপর হিংস্রতা দেখিয়ে সে একধরনের মানসিক পরিপূর্ণতা লাভ করে, হিংস্রতার স্বপক্ষে নিজস্ব যুক্তি তৈরি করে। এই তত্ত্বকে বলা হয় ‘ফ্রাস্টেশন-অ্যাগ্রেশন হাইপোথিসিস’।”

মানুষের স্বভাবের ভেতরেই একধরণের ক্রোধ ও আক্রমণাত্মক বৈশিষ্ট্য থাকে। সামাজিক রীতিনীতি, পারিবারিক শিক্ষা, প্রাতিষ্ঠানিক আচরণবোধ দিয়ে মানুষ তা বশে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু মানুষের ভেতরে লালিত এই প্রবৃত্তিগুলো পারিপার্শ্বিকতার কারণে অনেকসময় ভয়ানকভাবে প্রকাশিত হয়। সমাজে সেই কারণগুলো যতো বাড়বে, মানুষের ভেতরে থাকা অবদমিত ক্রোধ ততোই বেশি প্রকাশিত হবে।

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, হঠাৎ রেগে যাওয়া, আর রেগে গিয়ে চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়ে আরেকটি জীবন শেষ করে ফেলার মনোবৃত্তির পেছনে কতগুলো বিষয় সরাসরি দায়ী। যেমন, নিজেকে কোনো দিক দিয়ে শক্তিশালী ভাবা এবং কোনো আচরণের জন্য জবাবদিহি করতে হবে না ও বিচারের মুখোমুখি হতে হবে না বলে বিশ্বাস করা। পরিবারে বা চারপাশে এ ধরনের অন্যায় আর অমানবিক আচরণ দেখে নিজের মধ্যে সেগুলো লালন করা এবং সময়মতো নিষ্ঠুর আচরণ করা। জ্ঞানের বিকাশ (কগনিটিভ ডেভেলপমেন্ট) আর নৈতিকতার বিকাশ ঠিকমতো না হওয়া। মানসিক সমস্যা থাকলে অমানবিক নিষ্ঠুর আচরণ করার প্রবণতা, এমনকি হত্যা করার ইচ্ছা হতে পারে। এছাড়াও আছে আবেগ নিয়ন্ত্রণের চর্চা না থাকা ও মাদকের প্রভাব।

ভালবাসা ও অর্থের অভাব, অর্থের প্রতি তীব্র আকর্ষণ, পরিবারিক অশান্তি, শিশুর প্রতি সহিংসতা, নিরাপত্তাহীনতা, পারস্পরিক অবিশ্বাস, অসুস্থ যৌনতা, সামাজিক-রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অল্প সময়ে ধনী হওয়ার আকাঙ্ক্ষা যতো বাড়ছে, মানুষ ততোই অপরাধী হয়ে উঠছে।

আরও পড়তে পারেন-

শুধু হত্যা করার ক্ষেত্রে যে অমানবিকতা বেড়েছে তা নয়, অপরাধ প্রত্যক্ষ করার ব্যাপারেও মানুষ ‘সহনশীল’ হয়ে উঠেছে। যেমন সিলেটে শিশু রাজনকে চোর সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করছে এক যুবক, অন্য একজন তা ভিডিও করেছে। পাশে দাঁড়িয়ে আরো কয়েকজন সেই দৃশ্য দেখেছে, কেউ বাধা দেয়নি। যেন তারা খেলা দেখছে, ভাবটা এমন ছিল।

শিশু শ্রমিক রাসেলকে পায়ুপথে কম্প্রেসার মেশিনের পাইপ ঢুকিয়ে বাতাস দিয়ে হত্যা করেছে তার মালিক। অতিরিক্ত বাতাসে শরীরের নাড়িভুঁড়ি, পাকস্থলী সহ বিভিন্ন অন্ত্র ছিঁড়ে যায়। ঠিক একইভাবে রাজবাড়ীতে একটি ঘোড়ার চার পা বেঁধে পায়ুপথে ও মূত্রনালিতে বাঁশের লাঠি ঢুকিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। শত্রুতা ছিলো ঘোড়ার মালিকের সঙ্গে, কিন্তু মারা যেতে হলো ঘোড়াটিকে। একইভাবে হত্যা করা হয়েছিল বগুড়ার কাহালু এবিসি টাইলস কারখানায় রাসেল ও রুবেলকে। খুলনায় শিশু রাকিব এবং নারায়ণগঞ্জে শিশু সাগর বর্মণকে একইভাবে পায়ুপথে বাতাস ঢুকিয়ে হত্যা করা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে দেশে নৃশংসভাবে পশু হত্যার হারও ব্যাপকভাবে বাড়ছে, এতে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে। কারণ যে মানুষ নিরীহ পশুপাখির ওপর নৃশংস হতে পারে, তার পক্ষে পরবর্তীতে মানুষের ওপর নিষ্ঠুর হওয়া খুব কঠিন হয় না। নৃশংসতায় তার অভ্যস্ততা তৈরি হয়। সেরকম চিত্রই আমরা চোখের সামনে দেখতে পারছি। দেশে সম্প্রতি বিনা কারণে বা খুব ছোট কারণে পৈশাচিক কায়দায় মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। আরো ভয়াবহ ব্যাপার হচ্ছে সেইসব পৈশাচিক হত্যার দৃশ্য, ধর্ষণের ও মারধরের দৃশ্য ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে, যাতে অন্যরা দেখে বিকৃত আনন্দ পায়।

অপরাধ করে দিনের পর দিন যখন অপরাধীরা পার পেয়ে যায়, তখন অন্য মানুষের ভেতর একধরণের হতাশা তৈরি হয়। তারা ভাবতে শেখে এভাবে হত্যা বা ধর্ষণ বা অন্য কোন অপরাধ করে, তারাও পার পেয়ে যাবে। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, সমাজের বেশিরভাগ মানুষ আইন নয়, বিবেক দিয়ে নিয়ন্ত্রিত। আইন অমান্য করেন কিছু সংখ্যক প্রভাবশালী মানুষ। এরই প্রভাব পড়ে অন্যদের ওপর। এতে তারা ন্যায় আর অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য করতে ভুলে যায়।

চারপাশের ভয়াবহ ঘটনাবলী দেখে বেশ বুঝতে পারছি সমাজ এমন অস্থির পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যেখানে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক চিন্তার জায়গাটা দখল করছে অস্বাভাবিকতা। সহিংসতা, হিংস্রতা দিনে দিনে যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাচ্ছে। বাজারে এমন ভিডিও গেম লাখ লাখ ভিউ পাচ্ছে, যেখানে নিপীড়ন করার বিশেষ করে নারীকে নির্যাতন করার বিভিন্ন পদ্ধতি দেখানো হচ্ছে।

কিশোর-তরুণ ও যুব সমাজ সবসময় এমন কিছুকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে, যা একটু অন্যধরণের। অপরাধের ক্ষেত্রেও সে কথা প্রযোজ্য। ভারতীয় চ্যানেলের ‘ক্রাইম ওয়াচ’ খুব জনপ্রিয় সিরিজ হলেও এই সিরিজ নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়েছে। কারণ এগুলো দেখে অনেকেই অপরাধের নিত্য-নতুন উপায়কে নির্বাচন করেছে এবং অপরাধ ঘটিয়েছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু ভিডিও বা ইন্টারনেটভিত্তিক গেম, যেখানে সহিংসতা আর নিষ্ঠুরতা দেখানো হয়, সেগুলোর চর্চা করলে ব্যবহারকারীদের মধ্যে আগ্রাসী আচরণ তৈরি হয়। সেই সঙ্গে বিজ্ঞানীরা প্রমাণ করেছেন, সহিংসতায় পূর্ণ টিভি অনুষ্ঠান বা চলচ্চিত্র দেখতে থাকলে শিশুদের মধ্যে সহিংস আচরণ করার প্রবণতা বেড়ে যায়।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক মেখলা সরকার তাই অনুরোধ করেছেন, এসব ক্ষেত্রে ‍গণমাধ্যম যেন খুনের খুঁটিনাটি তথ্য তুলে না ধরে। এটি মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া ‘ক্রাইম শো’র মতো অনুষ্ঠান ও কিছু অনলাইন গেম নিয়ন্ত্রণে রাখতে কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন তিনি।

মানুষের রোষ ও অপরাধ প্রবণতা সংঘবদ্ধ রূপ পেয়েছে। আমরা দেখেছি কোরআন অবমাননার মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রামে হত্যা করা হয়েছে শহীদুন্নবী জুয়েলকে। কেবল হত্যা করেই থামেনি জনতা। মরদেহটির গলায় দড়ি দিয়ে টেনে-হিঁচড়ে উত্তপ্ত আগুনে নিক্ষেপ করেছে এবং দাঁড়িয়ে দেখেছে কিভাবে মানুষটির শরীর জ্বলেপুড়ে কয়লা হয়ে গেল। সেই দৃশ্য মোবাইল ফোনে ধারণ করেছেন শত শত মানুষ। এলাকার শিশু-কিশোর সহ সবাই মর্মান্তিক দৃশ্যে দেখেছেন। সাধারণ মানুষের মধ্যে এই যে অপরাধের ব্যাপারে একধরণের অভ্যস্ততা তৈরি হচ্ছে, আসল ভয়টা কিন্তু সেখানেই।

এতগুলো মানুষ (মব) জুয়েলকে পিটিয়ে মারলো, লাশ জ্বালিয়ে দিলো, অভিভাবক রেনুকে স্কুলের সামনে গণপিটুনি দিয়ে পিটিয়ে মারলো, এ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাহফুজা খানম বলেছেন, “শিক্ষার ফলে মানুষের পারসোনালিটি স্ট্রং হয়। ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা তৈরি হয়; কিন্তু শিক্ষা না থাকলে তারা অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয় বেশি। গণপিটুনিতে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের মতো ক্ষমতা নেই। আর সাম্প্রতিক সময়ের ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে গুজব একটি বড় ভূমিকা রেখেছে। মব সাইকোলজিতে যা হয়, সেটি হলো- সবাই মনে করে এত লোক যেহেতু জড়িত, সেজন্য পুরো দায়িত্ব তার ঘাড়ে গড়াবে না।”

এই বীভৎস আচরণ থেকে সহজে মুক্তির কোন পথ নেই। তবে কিছু কিছু জিনিস চর্চা করতে পারলে হয়তো উগ্র আচরণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। যেমন পরিবারে সহনশীলতা আর নৈতিকতার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে। ছোটখাটো বিষয় থেকেই শিশুদের মধ্যে ক্ষমতার চর্চা না করার অভ্যাস তৈরি হবে। যেকোনো অন্যায় আচরণের জন্য জবাবদিহিতা থাকতে হবে, মাদকাসক্তি প্রতিরোধ করতে হবে এবং কারও মধ্যে মানসিক সমস্যার যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে, সেটা না লুকিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্ধকার যুগকে আমরা চিহ্নিত করি ‘আইয়ামে জাহেলিয়া’ এর যুগ বলে। সেসময় মানুষ নানাধরণের কুসংস্কার, অনাচার, অবিচার, পাপ কাজ করতো। তুচ্ছ কারণে মানুষ মানুষকে হত্যা করতো, মেয়েশিশুকে জীবন্ত মাটিচাপা দিতো। সেই যুগের কিছু বৈশিষ্ট্য কি আমরা সভ্যতার এই লগ্নে দাঁড়িয়ে আবার দেখতে পারছি না? আদিম যুগেও মানুষের মধ্যে নৃশংসতা ও বর্বরতা ছিল, তা ছিল নিজের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য। সভ্যতার ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সেটা নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চালানো হয়েছে নানাভাবে। যদিও জন্মগত পাশবিক প্রবৃত্তিগুলো মানুষের মধ্যে রয়েই গেছে। তাই যখনই মানুষ দেখে অপরাধ করে পার পাওয়া যায় এবং শক্তি দেখানো যায়, তখনই তার মধ্যে পাশবিকতা জেগে ওঠে। এই পাশবিক আচরণকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারলে সব অর্জন শেষ হতে বাধ্য। কারণ-

“মানুষ যদি সে না হয় মানুষ
দানব কখনো হয় না মানুষ।
যদি দানব কখনো বা হয় মানুষ,
লজ্জা কি তুমি পাবে না?”

লেখক: যোগাযোগ কর্মী।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।