Home অর্থনীতি ঈদের পরে আলু-পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে

ঈদের পরে আলু-পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে

ছবি: সংগৃহীত।

ঈদের ছুটির পর আবারও বেড়েছে নিত্যপণ্য আলু ও পেঁয়াজের দাম। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মগবাজার, কল্যাণপুর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়– খুচরায় কেজিপ্রতি ৮-১০ টাকা বেড়ে আলুর দাম ৫৫-৬০ টাকা এবং পেঁয়াজ ৬৫-৭০ টাকা হয়েছে।

শুক্রবার ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদর অনুযায়ী, রাজধানীতে মানভেদে প্রতিকেজি নতুন আলু বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকায়।

সরকারি এই সংস্থার হিসাব পর্যালোচনা করা দেখা যায়, বাজারে গত এক বছরে আলুর দাম বেড়েছে ৬৮ শতাংশের মতো, আর পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭৮ শতাংশ। এক বছর আগে পেঁয়াজের দাম মানভেদে ছিল ৩০-৪০ টাকা কেজি।

কারওয়ানবাজারের খুচরা বিক্রেতা আব্দুস সামাদ ঈদের আগে ৩৮ টাকা কেজিতে আলু এবং ৪৫ টাকা কেজি পেঁয়াজ পাইকারি কিনেছেন। তিনি জানান, “আলু-পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা বেড়েছে। ঈদের পর আলু পাইকারি কিনেছি প্রতিকেজি ৪৫ টাকা আর পেঁয়াজ ৫৫ টাকা।”

কল্যাণপুরে বাজার করতে আসা শাহ আলম বলেন, “একমাস আগে কৃষক আলু ঘরে তুলেছে। এখনই এত দাম। সামনেতো দাম আরও বাড়বে। সরকারের এখনই নজরদারি বাড়ানো দরকার।”

তিনি বলেন, “সাধারণত আলুর দামটা অন্য তরকারির চেয়ে কম থাকতো। এখন এটার দামও বেড়ে গেছে। এভাবে সব পণ্যের দাম বড়তে থাকলে আমাদের মতো নিম্ন আয়ের লোকের জন্য বড় দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াবে।”

মগবাজারের খুচরা হৃদয় বলেন, “পাইকারি পর্যায়েই পেঁয়াজ কিনে দোকানে নিয়ে আসতে কেজিপ্রতি খরচ হয় ৬০ টাকা। এরপর আমাদের লাভ করতে হয়। দোকান ভাড়া আছে; তাই খুচরা পর্যায়ে ৭০ টাকা বিক্রি করলেও আমার ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে পারবো না।”

গত ২৮ মার্চ রাজধানীর পল্টনে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন ও সেভার ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, “গত বছর কোল্ড স্টোরেজে যেসব আলু সংরক্ষণ করা হয়েছিল, সেগুলোর দাম ছিল ৮ থেকে ১২ টাকা কেজি। এবারে যেগুলো রাখা হচ্ছে, সেগুলোর দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা; কৃষকরা এবার এই দামে আলু বিক্রি করেছেন। কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে এসব আলু যখন বাজারে আসবে, তখন এর দামও বেশি হবে।”

মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও রোগবালাইয়ের কারণে এ বছর অন্তত ২০ শতাংশ আলুর উৎপাদন কম হয়েছে। একই সঙ্গে সংকট ও বাজার অস্থিরতার কারণে ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা অন্তত ৩০ শতাংশ আলু তুলে বাজারে বিক্রি করে দিয়েছেন।

দাম বাড়তি অন্যান্য নিত্যপণ্যেরও

শুক্রবার দেখা যায়, ঢাকার বাজারগুলোতে এখনো কেনাবেচা ঠিক আগের মতো জমে ওঠেনি। ঈদের ছুটি শেষ হলেও রাজধানীতে এখনও ফেরেনি অনেক মানুষ। রাজধানীর বিভিন্ন বাজার এখনো কিছুটা ফাঁকা দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারের মায়ের দোকান চিকেন বয়লার হাউজের বিক্রেতা মোহম্মদ তারেক বলেন, “ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি ২২০ টাকা বিক্রি করছি। ঈদের আগে মুরগির কেজি ছিল ২৫০ টাকা। মুরগি বিক্রি অর্ধেক কমে গেছে। এখনও ছুটিতে যাওয়া লোক সব ঢাকায় ফেরেনি।

কারওয়ান বাজারে গরুর মাংস ৭৮০ টাকা কেজি এবং খাশির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১,১০০ টাকায়। অন্যদিকে, মগবাজারে গরুর মাংস ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

কারওয়ান বাজারের মাংস বিক্রেতা মতিউর রহমান বলেন, “গরুর মাংস বিক্রি কমে গেছে। আগে যারা দুই কেজি মাংস নিতেন, এখন তারা নেন এক কেজি। অর্ধেকেরও বেশি কম বিক্রি হচ্ছে।”

এদিকে গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু সয়াবিন তেলের নতুন দাম ঘোষণা করেন। তাতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৪ টাকা বাড়ানো হয়েছে।

ফলে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের নতুন দাম হয়েছে ১৬৭ টাকা। তবে ঘোষণা হলেও নতুন দামের তেল এখনও বাজারে আসেনি।

কারওয়ান বাজারের ইয়াসিন জেনারেল স্টোরের বিক্রয়কর্মী আলী হোসেন বলেন, “নতুন দামের তেল এখনও বাজারে না আসায় আগের দামেই সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে।”

সূত্র- টিবিএস।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

[দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন]