জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সাংগঠনিক সম্পাদক ও হেফাজতে ইসলামের নায়েবে আমীর মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী বলেছেন, মাহে রমজান দেখেতে দেখতে আখেরী দশকও শেষ হতে চলেছে। আর মাত্র কয়েক দিন পরই রমহতের মাস রমজান আমাদের কাছ থেকে বিদায় নিবে। গতকাল থেকেই ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। এই সময়ে অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় বা গ্রামে বাড়িতে অবস্থান করবেন। সুতরাং যার যার এলাকায় এই মোবারক সময়টাকে মুসলিম ঐক্য, ভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা ও মানবিকতার চর্চায় কাজে লাগাতে সচেষ্ট হতে পারলে এতে আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের যিন্দেগী সফল ও স্বার্থক হতে সহায়ক হবে।
তিনি বলেছেন, রমজানের বাকী এই অল্প কয়দিনে নিজ নিজ এলাকায় স্থানীয় রোজাদারদেরকে নিয়ে সম্মিলিতভাবে ইফতার আয়োজনে সচেষ্ট হোন। এর মাধ্যমে সামাজিক সম্পর্ক মজবুত হবে। উলামা-মাশায়েখ ও সকল শ্রেণী-পেশার মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। পাশাপাশি বেহায়াপনা, নগ্নপনা ও বিজাতীয় সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রতিরোধসহ সকল প্রকার অনৈসলামিক কর্মকাণ্ড দূর করার ব্যাপারে সুদৃঢ় ঐক্য গড়ে ওঠবে।
মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেন, উলামায়ে কেরামকে বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ড, সেবামূলক কাজ ও দারিদ্র দূরিকরণে উদ্যোগী ভূমিকায় আরো বেশী সম্পৃক্ত হতে হবে। পাশাপাশি পবিত্র রমযানে অধিক হারে নামায আদায়, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, দান-সদকাসহ ব্যাপক পরিসরে ইবাদত-বন্দেগী পালন এবং সকল প্রকার অন্যায়, অপরাধ ও গুনাহ থেকে দূরে থাকার দাওয়াত সাধারণ মুসলমানদের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। গীবত তথা পরনিন্দা থেকে দূরে থাকতে হবে।
আজ (২৭ মার্চ) বৃহস্পতিবার সংবাদপত্রে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, রমজান মাসে দেশের প্রায় সকল ক্বওমী মাদ্রাসার শিক্ষা বিভাগ ছুটি থাকে। বিশেষ করে রমজানের শেষ দশকে অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় ছুটিতে থাকেন। পবিত্র রমজানের এই সময়ে তরুণ আলেম ও মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে দাওয়াতী কাজের পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার লোকজনসহ সর্বস্তরের মুসলমানদেরকে নিয়ে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের মাধ্যমে ব্যাপক গণসংযোগে নেমে পড়তে হবে।
উলামা-মাশায়েখ ও দ্বীনদার বিত্তশালীগণ স্থানীয় পর্যায়ে উদ্যোগ নিয়ে গরীব-এতীম, শ্রমিক-মজদুর, ছাত্র, যুবক, ব্যবসায়ীদেরকে নিয়ে এলাকা ভিত্তিক ঘন ঘন ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে সমাজের এসব শ্রেণী-পেশার মুসলমানদেরকে একত্রিত করে তাদের সাথে ভ্রাতৃত্ববোধ ও সম্প্রীতির বন্ধনকে আরো মজবুত করতে সচেষ্ট হবেন। সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের দুঃখ-দুর্দশা, অভাব-অভিযোগ মনোযোগ দিয়ে শুনে সাধ্যমতো সহযোগিতার চেষ্টা করবেন এবং সহমর্মিতা প্রকাশ করে তাদেরকে সাহস যোগাবেন। এর ফলে উলামায়ে কেরাম, ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও তরুণ আলেমদের সাথে দেশের সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন ও জনসম্পৃক্ততা আরো মজবুত হবে। মাঠ পর্যায়ে ইসলাম এবং দেশ, জাতি ও শান্তির পক্ষে কাজ করায় যেমন গতি আসবে, তেমনি এসব ক্ষেত্রে যে কোন আপদকালীন সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়াও সহজ হবে। পাশাপাশি উলামা-মাশায়েখদের সাথে সর্বস্তরের মুসলমানদের সামাজিক সম্পর্ক আরো মজবুত হবে।
মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী আরো বলেন, দেশের উলামা মাশায়েখগণ আল্লাহ-রাসূল, কুরআন-হাদীস ও ইসলামের মৌলিক বিধানের মর্যাদা রক্ষায় যেমন সোচ্চার থাকবেন, তেমনি দেশ, সমাজ ও গণমানুষের স্বার্থ নিয়েও আলেম সমাজ ও ইসলামী রাজনৈতিক কর্মীদেরকে কাজ করতে হবে। মানুষের দুঃখ-দুর্দশা লাঘব, দরিদ্রদূরিকরণ ও বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডে উলামায়ে কেরামকে আরো বেশী সম্পৃক্ত হতে হবে। এতে করে দেশের জনগণ আলেমদেরকে ঈমান-আক্বিদার হেফাজতের পাশাপাশি আদর্শ দেশ ও সমাজ গঠনেও যোগ্য প্রতিনিধিত্বকারী হিসেবে সাদরে গ্রহণ করে নিবেন।
উম্মাহ২৪ডটকম: আইএ