Home জাতীয় সর্বস্তরে সুন্নাহ চালুর মেহনত করতে হবে: আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক

সর্বস্তরে সুন্নাহ চালুর মেহনত করতে হবে: আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক

উম্মাহ প্রতিবেদন: রাজধানীর অন্যতম বিখ্যাত দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র দারুল হাদীস মিলনায়তনে দাওরায়ে হাদীস সমাপনী বর্ষের ছাত্রদের সিহাহ সিত্তার প্রধান গুরুত্বপূর্ণ হাদীসগ্রন্থ বুখারী শরীফ সানী’র আখেরী দরস গত শনিবার (৯ মার্চ) বা’দ মাগরীব সম্পন্ন হয়েছে। দরসদান করেন জামিয়ার শায়খে সানী প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক। এ সময় পুরো দারুল হাদীস মিলনায়তন জুড়ে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। ছাত্ররা শিক্ষাজীবনের শেষপ্রান্তের স্মৃতিময় আখেরী দরসে আবেগঘন পরিবেশে গভীর মনোযোগের সাথে শরীক হন।

শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক (হাফি.) দরসদান শেষে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে দিক-নির্দেশনা ও উপদেশমূলক বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যের শুরুতে তিনি উলূমে নবুওয়াতের ফযীলত, গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার উপর বক্তব্য রাখেন। এরপর তিনি ছাত্রদের প্রশংসা করে বলেন, আপনারা দ্বীনের বৃহৎ পরিসরে খেদমত করার মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য নিয়েই দুনিয়াবী শিক্ষা ও খ্যাতির সম্ভাবনাকে পরিত্যাগ করে মাদ্রাসা শিক্ষাকে বেছে নিয়েছেন। কিন্তু এই উদ্দেশ্যে সফল ও কামিয়াব হতে হলে অবশ্যই আপনাদেরকে পরিপূর্ণ দ্বীন মেনে চলতে হবে এবং উম্মাহকে দ্বীনের পথে দাওয়াত দিতে হবে। নিজে, নিজের পরিবার, সমাজ ও দেশে দ্বীন কায়েমের জন্য চেষ্টা, সাধনা ও মেহনত করে যেতে হবে। সকল স্তরে সুন্নাহ চালু করার মেহনত করতে হবে। দুনিয়াবী ও আখেরাতের সকল সমস্যা, সংকট-এর সমাধান সুন্নাহ’য় রয়েছে। যে কোন সমস্যা সামনে আসলে আপনারা সুন্নাহর মধ্যে সমাধান খুঁজে নিবেন।

তিনি বলেন, ইসলাম হলো শান্তির ধর্ম, মানবতার ধর্ম, ইনসাফের ধর্ম। পরিবার, সমাজ ও দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা ও ইনসাফ কায়েম করতে হলে মানব রচিত উদ্দেশ্যমূলক আইনের পরিবর্তে কুরআনী হুকুমত কায়েম করতে হবে। কুরআনে হুকুমতে শুধু মুলসলমানরা নয়, অমুসলিমসহ সকল নাগরিকই পরিপূর্ণ ইনসাফ ও নিরাপত্তার সাথে বসবাস করার সুযোগ লাভ করেন।

শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক ছাত্রদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, মনে রাখবেন- কুরআন-হাদীস ও ইসলামের মৌলিক ইলম হাসিল করার জন্য আমাদের আকাবির ও পূর্বসূরীগণ সীমাহীন মেহনত-পরিশ্রম ও সাধনা করে গেছেন। নানা বিভ্রান্তি, অপব্যাখ্যা চিনতে ও বুঝার যোগ্যতা অর্জন করে সহীহ ইলমে দ্বীন হাসিল করতে হলে অক্লান্ত মেহনত- পরিশ্রম ও সাধনা করতে হবে। আর ইলম অর্জনের পাশাপাশি পরিপূর্ণরূপে নিজেদের আমল-আখলাকের মধ্যেও তার অনুশীলন শুরু চালু করবেন। নিয়মিত জামাতে নামায আদায় করবেন, প্রতিদিন কুরআন তিলাওয়াত করবেন। রাত ১০টার মধ্যে ঘুমিয়ে পড়ে গভীর রাতে ওঠে তাহাজ্জুদ পড়ে ফজরের আগে যিকির-আযকারে রত থাকবেন। চলাফেরার সবপর্যায়ে সুন্নাতের পাবন্দীর উপর গুরুত্ব দিয়ে চলবেন। এভাবে যদি মেহনত-সাধনা করে দ্বীনের উপর, সুন্নাহ’র উপর চলেন, ইনশাআল্লাহ কওম-মিল্লাতের যোগ্য রাহবার ও খাদেম হয়ে সম্মান-শ্রদ্ধার্জনের সাথে দ্বীনের বহুমুখী কাজ আঞ্জাম দিতে পারবেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে ইসলাম ও মুসলমানদের নানামুখী সংকট ও দুর্দিনে কওম আপনাদের নেতৃত্বের অপেক্ষায় আছে। আর আপনারা দ্বীনের উপর, সুন্নাহ’র উপর চলতে সক্ষম হলে তবেই কওমের পীপাসা নিবারণ করতে পারবেন।

দরস ও হিদায়াতী বয়ান শেষে এক আবেগঘন আখেরী মুনাজাত পরিচালনা করেন শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক। তিনি মুনাজাতে ছাত্রদের কামিয়াবী ও দ্বীনের উপর চলতে মহান আল্লাহর সাহায্য কামনা করেন। তিনি সকলের সুখ-শান্তিম, নিরাপত্তা, ইজ্জত ও সফল জীবনের জন্য দোয়া করেন। ঈমান, ইসলাম ও সুন্নাহ’কে যিন্দা করতে ও সর্বস্তরে কায়েম করতে সকলে যেন আত্মত্যাগের সাথে কাজ করতে পারেন, সে জন্য দোয়া করেন। এ সময় সারা দারুল হাদীস মিলনায়তনে এক গভীর আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

হেফাজতকে কটাক্ষ করা নাসিমের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন আল্লামা কাসেমী