Home ইসলাম কুরআনের সঙ্গে যার যতটা ও সান্নিধ্য থাকবে সে ততটা সম্মান ও মর্যাদার...

কুরআনের সঙ্গে যার যতটা ও সান্নিধ্য থাকবে সে ততটা সম্মান ও মর্যাদার অধিকারী হবেন: আল্লামা জুনায়েদ আল-হাবীব

খতীবে বাঙ্গাল আল্লামা জুনায়েদ আল-হাবীব।

লাইলাতুল কদর কোরআন নাযিলের রাত। পবিত্র রমযান মাসের এ রাত্রে পবিত্র মক্কায়ে মুকাররমার হেরা পর্বতের গুহায় আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকে ফেরেশতাদের সরদার হযরত জিবরাইল (আ.)এর মাধ্যমে বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)এর প্রতি মহাগ্রন্থ আল-কুরআন অবতীর্ণ হয়।
আসমানী সকল সহিফার মধ্যে কুরআন সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ আসমানি কিতাব। কারণ, এই কিতাব নাযিল হয়েছে আখেরী নবী সর্বশ্রেষ্ঠ নবী নবীগণের ইমাম রাসূলদের সরদার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব হযরত মুহাম্মাদ মুস্তফা আহমদ মুজতবা (সা.)এর প্রতি।
এই কুরআনের স্পর্শ বড়ই সৌভাগ্যের। হযরত জিবরাইল (আ.) এই কুরআন বহন করার কারণে ফেরেশতাদের সরদার হওয়ার গৌরভ লাভ করেছেন। মরুর দেশ জাজিরাতুল আরব এই কুরআনের স্পর্শেই পবিত্র আরব ভূমির সম্মান লাভ করেছে।
তাগুতের আখড়া পাপের আকর শিরক ও কুফরের শীর্ষ তীর্থস্থান, বাক্কা, এই কুরআনের তাজাল্লিতে পবিত্র মক্কা নগরীতে রূপান্তরিত হয়েছে। এই কুরআনের পরশে সল্পমূল্যের কাপড়ের গিলাফ বুকে জড়ানোর সম্মান পেয়েছে। এই কুরআনের ছোঁয়ায় সাধারণ কাঠের রেহাল সম্মানের চুমু খাচ্ছে।
সর্বোপরি কুরআনের সংস্পর্শে একটি সাধারণ রাত, লাইলাতুল ক্বদর বা শবে-কদর রজনীর সম্মানে বিভূষিত হয়েছে। যার ফযীলত সম্পর্কে দয়াময় আল্লাহ মহাগ্রন্থ আল কুরআনে সূরাতুল কদর নামে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাযিল করেছেন। যার মাধ্যমে এই রজনীর গুরুত্ব বুঝে আসে।
কুরআনের সঙ্গে যার যতটুকু সম্পর্ক ও সান্নিধ্য থাকবে, তিনি ততটুকু সম্মানিত ও মর্যাদার অধিকারী হবেন। প্রিয় হাবীব (সা.) বলেন, যার অন্তরে কুরআনের সামান্যতম অংশও নেই সে যেন জনমানবহীন এক বিরান বাড়ীর মতো। তাই আমাদের উচিত কুরআনের মাসে বেশি বেশি পরিমানে কালামে পাক তিলাওয়াত করা।
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়শা সিদ্দীকা (রাযি.) রাসূল (সা.)কে আরয করলেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)! আমি যদি লাইলাতুল কদর সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে ওই রাতে আমি আল্লাহর কাছে কী দোয়া করব? হযরত রাসূল (সা.) বললেন, তুমি বলবে, “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী”।

আমাদের থেকে এক এক করে রমযানুল মুবারক বিদায় নিচ্ছে। কিন্তু আমরা কে কতটুকু রমজানের খায়র-বরকত ও ফযীলতকে কাজে লাগাতে পারছি, তার কোনই খবর নেই। কারণ, হতে পরে আগামী বৎসরের রমযান আসার আগেই আমি দুনিয়া থেকে চলে যেতে পারি! তাই আমাদের উচিত প্রতিটি রমযান এইভাবে কাটানো যে, হতে পারে এটাই আমার জীবনের শেষ রমযান।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে রমযানুল মুবারকের মাহাত্ম্য বুঝে তার ক্বদর করার তাওফীক দান করুক। আমীন।

লেখক: আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসীরে কুরআন ও আলেমে-দ্বীন, যুগ্মমহাসচিব- হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।