Home শীর্ষ সংবাদ মুহাম্মদপুর ওয়াযাহাতি জোড়ে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী যা বলেছেন!

মুহাম্মদপুর ওয়াযাহাতি জোড়ে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী যা বলেছেন!

মোশাররফ মাহমূদ (উম্মাহ প্রতিনিধি): মাওলানা সাদ কেন্দ্রিক তাবলীগ জমাতের চলমান সংকট নিরসনে গতকাল (২৮ জুলাই) সকাল ৮টা থেকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিশেষ ওয়াযাহাতি জোড়। এতে দাওয়াত ও তাবলীগের জিম্মাদার ও সাথীগণসহ শরীক হয়েছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা উলামা-মাশায়েখগণ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উলামায়ে কেরামের মুরুব্বী হেফাজত আমীর ও দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

শীর্ষস্থানীয় উলামায়ে কেরামের মধ্যে আরো শরীক ছিলেন, জামিয়া শরইয়্যাহ মালিবাগ মাদরাসার প্রিন্সিপাল পীরে কামেল আল্লামা আশরাফ আলী, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক, মারকাযুদ দাওয়া আল-ইসলামিয়া ঢাকা-এর আমিনুত তালিম মাওলানা আবদুল মালেক, কিশোরগঞ্জ জামিয়া ইমদাদিয়ার মুহতামিম আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ, শাইখ জাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক মুফতি মিযানুর রহমান সাঈদ, জামিয়া রাহমানিয়ার প্রিন্সিপাল মাওলানা মাহফুজুল হক, বসুন্ধরা ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারের প্রধান মুফতি এনামুল হক, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার সহকারী পরিচালক হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান’সহ সহস্রাধিক উলামায়ে কেরাম।

জোড়ে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেছেন, আজকের এই সম্মেলন থেকেই আমাদেরকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, তাবলীগ জামাআত যুগ যুগ ধরে দেওবন্দী আকাবীরদের দেখানো যেই নিয়মে পরিচালিত হয়ে আসছে, সেই নিয়ম বহাল রাখার বিষয়ে কোন ছাড় দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের ওলামায়ে কেরাম যদি এই ফিতনাবাজদেরকে উৎখাতে সফল না হন, তাহলে বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমানদেরকে এরা গোমরাহ করে ছাড়বে।

মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী আরো বলেন, হযরত মাওলানা আরশাদ মাদানী (হাফি.) এই মাওলানা সা’দ সম্পর্কে পরিষ্কার বলেছেন, “ইয়ে আদমী জাহেল হায়”, অর্থাৎ- এই লোক পথভ্রষ্ট। তিনি বলেন, মাওলানা আরশাদ মাদানীর কথা আলোচনায় আসায় তাঁর সাথে সংশ্লিষ্ট একটা ছোট ঘটনা আমার মনে পড়েছে। আমি সংক্ষেপেই ঘটনাটি আপনাদের সামনে বর্ণনা করবো।

মাওলানা আরশাদ মাদানী (দা.বা.)এর বাংলাদেশের কোনো এক সফরে আমার সাথে সাক্ষাত হয়েছিলো । সাক্ষাতে তিনি আমাকে এই ঘটনাটা বলেছিলেন যে, “বাংলাদেশে আসার আগে তিনি নিজামুদ্দীন গিয়েছিলেন। পৌনে এক ঘণ্টা আলোচনা করেছেন সা’দ সাহেবের সাথে। এই আলোচনার শেষ পর্যায়ে হযরত আরশাদ মাদানী সাহেব সা’দ সাহেবকে শুধু একটা প্রশ্ন করে জবাব চাইলেন যে, আপনার উস্তাদ মাওলানা ইবরাহীম দেওলা সাহেব, মাওলানা ইয়াকুব সাহেব, মাওলানা আহমদ লাট সাহেব কেন আপনাকে পরিত্যাগ করেছেন? মাওলানা ইবরাহীম ও মাওলানা ইয়াকুব সাহেব আপনার উস্তাদ, আপনার বাবার উস্তাদ। এই বুযুর্গ আলেমগণ কেন নিজামুদ্দীন ছেড়ে চলে গেলেন জবাব দিন? কিন্তু মাওলানা সা’দ মাওলানা আরশাদ মাদানী (হাফি.)এর এই প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেননি। এ সময় সা’দ সাহেবের শ্বশুর মাওলানা সালমান সাহেবও সেখানে বসা ছিলেন। তিনি বললেন, এই প্রশ্ন যথাযথই এবং এই প্রশ্নের সন্তোষজনক কোন জবাবও নেই।

এই ঘটনা বর্ণনা করে মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী বলেন, বিভিন্নভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, এই লোক পথভ্রষ্ট। তার পথভ্রষ্টতায় বাংলাদেশের কয়েকজনও আক্রান্ত হয়ে এই পথভ্রষ্টতাকে বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছেন। সাদপন্থীরা বাংলাদেশে নতুন ফিতনা সৃষ্টি করতে লিপ্ত। সুতরাং এই বিষয়ে আলেম সমাজের নমনীয় হওয়া বা ছাড় দেওয়ার কোনই সুযোগ নেই। ওলামায়ে কেরামের আজকের এই মহতী মজলিসে যে সিদ্ধান্ত হবে, তা আমরা সকলে নির্দ্বিধায় মেনে নেবো ইনশাল্লাহ। পরম করুণাময় আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর মর্জি মতো হক্বের উপর চলার তাওফীক দান করুন।