Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের কতিপয় আদব

পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের কতিপয় আদব

।। মাওলানা মুহাম্মদ ওমর কাসেমী ।।

পবিত্র কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করার জন্যে কোন প্রকার নিয়তের প্রয়োজন নেই। তবে কোন ব্যক্তি যদি নামাজের বাইরে কোন কাজের উদ্দেশ্যে কুরআন তেলাওয়াতের মান্নত করে, তখন তেলাওয়াতের সময় অবশ্যই উক্ত কাজের নিয়ত করা জরুরী। নিয়ত করা ব্যাতীত উক্ত মান্নত থেকে কখনই অব্যাহতি পাবে না বা দায়িত্ব মুক্ত হবে না। (জাওয়াহের, আল ইতকান ফী উলুমিল কুরআন ১ম খন্ড)।

মাসয়ালাঃ হদসে আকবার অর্থাৎ, স্ত্রী সহবাস, হায়েয নেফান, স্বপ্নদোষ কিংবা যৌন চরিতার্থে বীর্যস্খলনসহ ইত্যাদি যে সব কারণে গোসল ফরয হয়, এমতাবস্থায় কুরআন পড়া এবং কুরআন স্পর্শ করা উভয়টাই হারাম।

মাসআলা: হদসে আসগর অর্থাৎ, যে সকল অপবিত্রতার কারণে গোসল ফরয হয় না বটে। কিন্তু শুধু বা তায়াম্মুম এর মাধ্যমে পবিত্রতা অর্জন করা ফরয হয়। এমতাবস্থায়ও পবিত্র কুরআন নগ্ন হাতে স্পর্শ হারাম। তবে কোন পবিত্র বস্তু দিয়ে স্পর্শ করা এবং স্পর্শবিহীন মুখস্থ বা দেখে দেখে পড়া জায়েয আছে।

বিঃ দ্রঃ হদসে আসগর অবস্থাতেও যে পবিত্র কুরআন স্পর্শ করা জায়েয নেই এটা সকল সাহাবা (রাযি.) এবং চার ইমামসহ সমস্ত হক্কানী উলামায়ে কেরাম এর ঐক্যমত। এতে সন্দেহের কোনই অবকাশ নেই। সুরা ওয়াক্বিয়ার আয়াতটি এর সমর্থনে প্রমাণ হিসেবে পেশ না করা গেলেও ক্ষতি নেই। ছহীহ হাদীসসমূহে এ বিষয়ে সুস্পাট বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।

অতএব, হাদীসই প্রমাণ হিসেবে যথেষ্ট বলে বিবেচিত হে একটি মহল মনে করে যে, কুরআন স্পর্শ করার জন্যে হৃদসে আসগর থেকেও যদি পবিত্রতার শর্তারোপ করা হয় তখন সর্বদা পবিত্র নয় বলে জনসাধারণ কুরআন থেকে অনেক দূরে চলে যাবে। পরিণামে কুরআন ও মানুষের মাঝে বিমূর্খতা, দূরত্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটবে, যা কাম্য নয়। এহেন উক্তি ও চিন্তা চেতনা কতটুকু অবাস্তব অযৌক্তিক এবং পবিত্র কুরআনের সাথে প্রকাশ্য অবমাননা তথা সুস্পষ্ট হাদীসের খেলাফ তা হয়ত পাঠক মহলের কাছে অজ্ঞাত নয়।

অতএব, যারা এই ধরনের চিন্তা চেতনায় বিভোর, তাদেরকে বলব এসব মূর্খ ও অসুস্থ মানসিকতা পরিহার করতঃ বাস্তব এবং সত্য উপলব্ধি ও অন্বেষণে সক্রিয়ভাবে এগিয়ে আসুন।

মাসআলাঃ অজুর সাথে মুখস্থ কুরআন শরীফ পড়া মুস্তাহাব। কেননা কুরআন তিলাওয়াত হচ্ছে সর্বোত্তম জিকির। একটি হাদীসে বর্ণিত আছে নবী (সা.) অপবিত্র অবস্থায় আল্লাহর জিকির করা অপছন্দ করতেন।

শরহে মুনিয়া গ্রন্থে কুরআন তেলাওয়াতের নিয়মাবলী বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লেখ করা হয় যে, তিলাওয়াতকারী অঞ্জু গোসল ইত্যাদীর মাধ্যমে পবিত্র হয়ে উত্তম পাক বস্ত্র পরিধান করতঃ ক্বিবলা মুখী হয়ে পূর্ণ ভদ্রতা সৌজন্যতা সহকারে তিলাওয়াত করবে। তবে স্পর্শ বিহীন মুখস্থ কিংবা দেখে দেখে হৃদসে আনগর অবস্থায় তিলাওয়াত করা জায়েজ আছে, মাকরূহ হবে না। এই মর্মে একটি হাদীসও বর্ণিত আছে।

ইমামুল হারামাইন রেওয়ায়েত করেছেন যে, নবী (সা.) কখনো কখনো হদসে আসগর অবস্থায়ও কুরআন তিলাওয়াত করেছেন।

মাসাআলাঃ যদি কুরআন তিলাওয়াত অবস্থায় বায়ু বের হওয়ার কোন সম্ভাবনা বা আশংকা হয় তবে বায়ু বের হওয়ার সময় তিলাওয়াত বন্ধ রাখবে।

মাসাআলাঃ জুনুবী ব্যক্তি এবং হায়েয-নেফাসওয়ালী মহিলাদের কুরআন তিলাওয়াত, স্পর্শ ইত্যাদি হারাম যা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে কুরআনের প্রতি দৃষ্টিপাত করা এবং অস্তরে অন্তরে কুরআন জারী রাখা জায়েয আছে। ইতকান গ্রন্থে এ প্রসঙ্গে আর একটি মাসআলা উল্লেখ করা হয়েছে যে, কারো মুখ যদি অপবিত্র হয় তবে ঐ অপবিত্র নাপাক মুখ দিয়ে পবিত্র কুরআন পাঠ করা মাকরূহ। অন্য এক বর্ণনা অনুযায়ী হারাম। (আল ইতকান ফী উলুমিল কুরআন)।

মাসআলাঃ তিলাওয়াতকারী অত্যন্ত গাম্ভীর্য, সৌজনা ও বিনয়ের সাথে ক্বিবলামুখী হয়ে কুরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ হচ্ছে সর্বোচ্চ সম্মানিত বস্তু। অতএব সামর্থ এবং শক্তির শেষসীমা পর্যন্ত তার ইজ্জত, ইকরাম ও সম্মান রক্ষা করা প্রতিটি নর-নারীর অপরিহার্য দায়িত্ব এবং কর্তব্য। (আল ইতকান ফী উলুমিল কুরআন)।

ইবনে মাজাহ শরীফে হযরত আলী (রাযি.) কর্তৃক একটি হাদীস বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ ফরমান হে লোক সকল! তোমাদের মুখ হচ্ছে পবিত্র কুরআনের চলার পথ। অতএব তোমরা একে মিসওয়াকের মাধ্যমে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন রাখ । (ইবনে মাযাহ শরীফ, আল ইতকান ফী উলুমিল কুরআন)।

মাসআলাঃ কুরআন তেলাওয়াতের পুর্বে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়া মুস্তাহাব। মহান প্রভু ফরমান, যখন তোমরা কুরআন পড়বে তখন আল্লাহ তাআলার দরবার বিতারিত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবে। (সুরা নাহল)।

শরহে মুনিয়া গ্রন্থে উল্লেখ আছে, তিলাওয়াতের পূর্বে আউযুবিল্লাহ এবং বিসমিল্লাহ পড়বে। তবে তেলাওয়াতের মধ্যভাগে যদি দুনিয়াবী কোন কাজের কারণে তিলাওয়াত বন্ধ হয় তখন পুনাতেলাওয়াতের সময় শুধু আউযুবিল্লাহ পড়াই যথেষ্ট।

মাসআলাঃ চিত হয়ে শায়িত অবস্থায় মুখস্থ কুরআন শরীফ পড়া জায়েজ আছে। তবে কথা হচ্ছে উভয় পা মিলিত হতে হবে। উভয় পা মিলানো ব্যতীত লম্বা করে ছড়িয়ে-বিছিয়ে কুরআন পড়া চরম বেআদবী। এটা কুরআন মজীদের সাথে অসম্মানী করার নামান্তর। শায়িত অবস্থায় কুরআন পড়া জায়েয হওয়া হাদীস থেকেই প্রমাণিত। যেমন একটি হাদীসে বর্ণিত আছে, রাসুল (সা.) শয়ন কক্ষে কুরআন তিলাওয়াত করতেন। (কবিরী)।

অন্য একটি হাদীসে হযরত আয়েশা (রাযি.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সা.) যখন প্রত্যেক রাতে শয্যা গ্রহণ করতেন, তখন দুই হাতের তালু একত্রিত করতেন অতঃপর তাতে কুলহু আল্লাহু আহাদ, কুল-আউযু বিরাব্বিল ফালাক ও কুল আউযু বিরাব্বিন নাস পড়ে ফুঁ দিতেন। অতঃপর তা দ্বারা আপন শরীরের যা সম্ভবপর হত মাসেহ করতেন। তিনি এই মাসেহ করা মাথা ও চেহারা এবং শরীরের সম্মুখভাগ হতে আরম্ভ করতেন এবং এরূপ তিনি তিন বার করতেন। (বুখারী, মুসলিম)।

মাসআলাঃ একদা হযরত বাক্কালী (রহ.) কে এই মর্মে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, নামাজ নিষিদ্ধ সময়সমূহে কুরআন তিলাওয়াত করা উত্তম নাকি দরূদ শরীফ কিংবা তাসবীহ তাহলীল? উত্তরে বললেন, দরূদ শরীফ কিংবা আল্লাহ তাআলার তাসবীহ তাহলীল পড়াই উত্তম। (কবিরী)।

মাসআলাঃ পথ চলা অথবা কোন কাজে মশগুল থাকা অবস্থায় মুখস্থ তিলাওয়াত করা জায়েয আছে । তবে শর্ত হচ্ছে, সমস্ত ধ্যান-ভাবনা একমাত্র কুরআনের প্রতি হতে হবে। অন্য কোন কাজ কর্মে কিংবা চলার পথে কোন প্রকার মনোযোগ থাকতে পারবে না। (শরহে মুনিয়া)।

মাসআলাঃ খোলা উন্মুক্ত হাম্মামখানায় যেখানে কোন উলঙ্গ, অর্ধ্ব উলঙ্গ মানুষ থাকে, এরূপ হাম্মামখানায় উচ্চ, নিম্ন উভয় স্বরে কুরআন পাঠ জায়েয হবে। পক্ষান্তরে যদি হাম্মামখানা উন্মুক্ত না হয় কিংবা উলঙ্গ বা অর্ধ্ব উলঙ্গ কেউ থাকে, সেক্ষেত্রে উচ্চস্বরে পড়া জায়েয হবে না। তবে অনুচ্চ অর্থাৎ, মনে মনে তিলাওয়াত করতে পারবে। (আল ইতকান ফী উলুমিল কুরআন)।

মাসআলাঃ অপরিচ্ছন্ন অপবিত্র স্থানে কুরআন পড়া মাকরূহ। (শরহে মুনিয়া)।

মাসআলাঃ গোরস্থান কিংবা কবর এর সন্নিকটে বসে কুরআন পড়ার বিষয়ে ফকীহ উলামায়ে কেরামগণ থেকে বিভিন্ন মতামত রয়েছে। তবে ইমাম মুহাম্মদ (রহ.)এর উক্তি অনুযায়ী যাকে পরবর্তি উলামায়ে ইসলাম গ্রহন করেছেন এবং এটাই অধিক ছহীহ বলে মত ব্যক্ত করেছেন। সেটা হচ্ছে এ ব্যাপারে শরীয়তের দৃষ্টিতে কোন নিষেধাজ্ঞা নেই।

আরও পড়তে পারেন-

শরহে মুনিয়া গ্রন্থে উক্ত মতের স্বপক্ষে একটি হাদীসও দলিল হিসেবে উল্লেখ করেছে। ইমাম বাইহাকী (রহ.) হযরত ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, মৃত ব্যক্তিকে দাফনের পরমূহুর্তে সমবেত লোকজনের মুস্তাহাব হচ্ছে- সুরা বাকারার প্রথমাংশ এবং শেষাংশ পাঠ করা।

তেমনি হযরত মা’কাল ইবনে ইয়াসার (রাযি.) কর্তৃক সুরা ইয়াসিনের ফযীলত সম্পর্কীয় বর্ণিত হাদীসের এক অংশে নবী (সা.) ইরশাদ ফরমান, তোমরা তোমাদের মৃতদের উপর এ সুরা ইয়াসিন) পাঠ কর। (রহুল মা’আনী, মাজহারী, মিশকাত) এই হাদীসের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে যে, মৃত ব্যক্তি অর্থে মৃত আসন্ন ব্যক্তি এবং বাস্তবে মৃত ব্যক্তি উভয় হতে পারে।

তারতীলের সাথে কুরআন পাঠের ফযীলত ও গুরুত্ব

তারতীলের সাথে (বিশুদ্ধরূপে) কুরআন তিলাওয়াত করা মাসুনন। তারতীল এর অর্থ হচ্ছে, সহজ ও সঠিকভাবে বাক্যসমূহ এমনভাবে উচ্চারণ করা যেন বাক্য তার সমস্ত হাকীকত এবং সিফাতের সাথে উচ্চারিত হয়। (মাযহারী, ১০ম খন্ড)।

তারতীল এর সাথে কুরআন পড়ার বিষয়ে পবিত্র কুরআন ও হাদীসে বিভিন্ন জায়গায় অত্যন্ত গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। স্বয়ং মহান আল্লাহ স্বীয় হাবীব (সা.) কে নির্দেশ দিচ্ছেন, হে নবী (সা.) কুরআন আবৃত্তি করুন সুবিন্যস্তভাবে এবং স্পষ্টভাবে। (সুৱা মুজ্জাম্মিল)।
আয়াতের উদ্দেশ্য হচ্ছে যে, দ্রুত কুরআন তিলাওয়াত করবেন না বরং সহজভাবে এবং অর্ন্তনিহিত অর্থ সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করে উচ্চারণ করবেন। (কুরতুবী)।

অন্য স্থানে আল্লাহ ইরশাদ ফরমান, আমি এমনিভাবে অবতীর্ণ করেছি এবং ক্রমে ক্রমে (তারতীলের সাথে) আবৃত্তি করেছি, আপনার অন্তকরণকে মজবুত করার জন্যে । (সূরা ফুরকান, আয়াত-৩২)।

দ্বিতীয় এক জায়গায় ঘোষণা ফরমান, আমি কুরআনকে যতিচিহ্নসহ পৃথক পৃথকভাবে পাঠের উপযোগী করেছি। যাতে আপনি একে লোকদের কাছে ধীরে ধীরে পাঠ করেন এবং আমি একে যথাযথভাবে অবতীর্ণ করেছি। (সূরা বনী ইসরাইল আয়াত- ১০৩)।

জ্বীন ও ইনসান জাতিদ্বয়ের উদ্দেশ্যে আল্লাহ তাআলার তারতীলের নির্দেশ এবং ঘোষণা একবারই যথেষ্ট ছিল। কিন্তু এর গুরুত্ব অত্যন্ত ব্যাপক, এটা উপলব্ধি করানোর লক্ষ্যেই বিভিন্নভাবে তাকিদ দিয়ে বিভিন্ন আয়াত অবতীর্ণ করেছেন। হাদীসের কিতাব সমূহেও তারতীলের সাথে কুরআন আবৃত্তি এর গুরত্বের উপর বহু হাদীস নবী (সা.) থেকে বর্ণিত রয়েছে সে সব হাদীস থেকে কয়েকটি হাদীস এখানে উল্লেখ করা হবে, ইনশাআল্লাহ।

(১) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমার (রাযি.) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (সা.) ইরশাদ ফরমান (কিয়ামতের দিন) কুরআন পাঠকারীকে বলা হবে পাঠ করতে থাক এবং উপড়ে উঠতে থাক, অক্ষর-অক্ষর, শব্দ-শব্দ, স্পষ্টভাবে পাঠ করতে থাক। যেভাবে দুনিয়াতে স্পষ্টভাবে পাঠ করতে। তোমার স্থান শেষ আয়াতের নিকটে যা তুমি পাঠ করবে। (আহমদ, তিরমিযী, আবু দাউদ, নাসায়ী)।

(২) তাবেয়ী ইয়ালা ইবনে মামলাক থেকে বর্ণিত, তিনি একদা উদ্দুল মুমিনীন হযরত উম্মে ছালমা (রাযি.) কে নবী (সা.) এর কুরআন পাঠ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন দেখা গেল তিনি তা প্রকাশ করেছেন অক্ষর-অক্ষর, পৃথক পৃথক করে। (তিরমিযী)।

(৩) তাবেয়ী হযরত ইবনু জুরাইজ তাবেয়ী ইবনু আবি মুলাইকা হতে তিনি হযরত উম্মে ছালমা (রাযি.) থেকে বর্ণনা করেন যে, বিবি উন্মে ছালমা (রাযি.) বলেন যে, রাসুল (সা.) বাক্যে পূর্ণ ছেদ দিয়ে কুরআন পাঠ করতেন। তিনি বলতেন আলহামদুলিল্লাহি রাব্বিল আলামীন। অতঃপর বিরতি দিতেন। অতঃপর বলতেন আর রাহমানির রাহীম অতঃপর বিরতি দিতেন। (তিরমিযী, মাযহারী)।

যথাসম্ভব সুললিত স্বরে তেলওয়াত করাও তারতীলের অন্তর্ভূক্ত। হযরত আবু হুরাইরা (রাযি.) এর বর্ণিত হাদীসে রাসুল (সা.) বলেন, যে সশব্দে সুললিত কণ্ঠে তিলাওয়াত করেন তার কেরাতের মত অন্য কারও তিলাওয়াত আল্লাহ শুনেন। (মাজহারী, মাআরিফুল কুরআন মুফতী শফী)।

হযরত আলকামা (বহ.) এক ব্যক্তিকে সুমধুর সুরে তিলাওয়াত করতে দেখে বললেন, সে তারতীলের সাথে কুরআন পড়ছে। আমার পিতা মাতার তার জন্যে উৎসর্গ হোন। (কুরতুবী)।

তবে পরিস্কার ও বিশুদ্ধ উচ্চারণসহ শব্দের অন্তনিহিত অর্থ চিন্তা করে তদ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়াই আসল তারতীল। হযরত হাসান বসরী (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসুল (সা.) এক ব্যক্তিকে একটি আয়াত পাঠ করে ক্রন্দন করতে দেখে বলেছিলেন, আল্লাহ তাআলা আয়াতে যে তারতালের আদেশ করেছেন এটাই সেই তারতীল। (আল ইতকান ফী উলুমিল কুরআন)।

  • মাওলানা মুহাম্মদ ওমর কাসেমী, উস্তাদুল হাদীস ও ওয়াল ফিক্বহ- আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।