Home ইসলাম কিভাবে অজু করব

কিভাবে অজু করব

।। মাওলানা সাখাওয়াত উল্লাহ ।।

নামাজের জন্য অজু করা জরুরি। অজু ছাড়া নামাজ হয় না। আর সর্বক্ষণ অজু অবস্থায় থাকা পুণ্যের কাজ। পরকালে তা উচ্চমর্যাদার অধিকারী হওয়ার মাধ্যম। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৭৩, তিরমিজি, হাদিস : ৫৫)

অজু শব্দের আভিধানিক অর্থ সৌন্দর্য ও পবিত্রতা। (তারিফাত : ১/৮৪)

ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায় অজু হলো, মুখমণ্ডল ও হাত-পা পানি দ্বারা ধৌত করা এবং মাথা মাসেহ করা। (তারিফাত : ১/৮৪)

অজু বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য তিনটি শর্ত আছে। শর্তগুলো একই সঙ্গে বিদ্যমান না থাকলে অজু শুদ্ধ হবে না।

এক. যেসব অঙ্গ অজুর মধ্যে ধৌত করা আবশ্যক, সেসব অঙ্গের পুরো অংশে পানি পৌঁছাতে হবে। (মুসলিম, হাদিস : ৩৫৯)

দুই. এমন কোনো বস্তু অজুর অঙ্গে থাকতে পারবে না, যেগুলো চামড়া পর্যন্ত পানি পৌঁছাতে প্রতিবন্ধক। যেমন—মোম, আঠা ইত্যাদি। (বায়হাকি, শুআবুল ঈমান, হাদিস : ৩৬৭)

তিন. অজু ভেঙে যায়—এমন কোনো কিছু না হওয়া। অজু করার সময় অজু ভেঙে যাওয়ার মতো কোনো কিছু সংঘটিত হলে অজু শুদ্ধ হবে না। পুনরায় করতে হবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক : ১/১৮১)

আরও পড়তে পারেন-

অজুর ফরজ চারটি—সম্পূর্ণ মুখ বা চেহারা একবার ধৌত করা। উভয় হাত কনুইসহ একবার ধৌত করা।

মাথার চার ভাগের এক ভাগ মাসেহ করা। উভয় পা টাখনুসহ একবার ধৌত করা। এ ছাড়া অজুর আরো কিছু বিধান আছে, সেগুলো সুন্নত ও মুস্তাহাব বিধান। নিম্নে অজুর পুরো কাঠামো ধারাবাহিকভাবে উল্লেখ করা হলো—

১. নামাজি ব্যক্তি প্রথমে মনে মনে অজুর নিয়ত করবে।

২. ‘বিসমিল্লাহ’ বলে অজু শুরু করবে।

৩. তিনবার দুই হাত কবজি পর্যন্ত ধুয়ে নেবে। হাতে ঘড়ি, চুড়ি, আংটি প্রভৃতি থাকলে তা হিলিয়ে তার নিচে পানি পৌঁছাবে। আঙুল দিয়ে আঙুলের ফাঁকগুলো খেলাল করবে।

নখে নখ পালিশ বা কোনো ধরনের পুরু পেন্ট থাকলে তা তুলে না ফেলা পর্যন্ত অজু হবে না। পক্ষান্তরে মেহেদি বা আলতা লেগে থাকা অবস্থায় অজু-গোসল হয়ে যাবে।

৪. তারপর ডান হাতে পানি নিয়ে তিনবার কুলি করবে।

৫. অতঃপর পানি নিয়ে নাকের গোড়ায় লাগিয়ে টেনে নিয়ে বাম হাত দ্বারা নাক ঝাড়বে। এরূপ তিনবার করবে। তবে রোজা অবস্থায় থাকলে সাবধানে নাকে পানি টানবে, যাতে গলার নিচে পানি না চলে যায়।

৬. অতঃপর মুখমণ্ডল (এক কান থেকে অপর কানের মধ্যবর্তী এবং কপালের চুলের গোড়া থেকে দাড়ির নিচের অংশ পর্যন্ত অঙ্গ) তিনবার পানি লাগিয়ে দুই হাত দ্বারা ধৌত করবে।

এক লোট পানি দাড়ির মধ্যে দিয়ে দাড়ির ফাঁকে ফাঁকে আঙুল চালিয়ে তা খেলাল করবে।

৭. অতঃপর প্রথমে ডান হাত আঙুলের ডগা থেকে কনুই পর্যন্ত এবং অনুরূপ বাম হাত তিনবার (প্রত্যেকবার পুরো হাতে পানি ফিরিয়ে রগড়ে) ধৌত করবে।

৮. অতঃপর একবার মাথা মাসাহ করবে; নতুন পানি দ্বারা দুই হাতকে ভিজিয়ে আঙুলগুলো মুখোমুখি করে মাথার সামনের দিক (যেখান থেকে চুল গজানো শুরু হয়েছে সেখান) থেকে পেছন দিক (গর্দানের যেখানে চুল শেষ হয়েছে সেখান) পর্যন্ত স্পর্শ করে পুনরায় সামনের দিকে নিয়ে এসে শুরুর জায়গা পর্যন্ত পূর্ণ মাথা মাসাহ করবে।

৯. অতঃপর আর নতুন পানি না নিয়ে ওই হাতেই দুই কান মাসাহ করবে; শাহাদতের (তর্জনি) দুই আঙুল দ্বারা দুই কানের ভেতর দিক এবং দুই বুড়ো আঙুল দ্বারা দুই কানের পিঠ ও বাহির দিক মাসাহ করবে।

১০. অতঃপর প্রথমে ডান পা ও পরে বাম পা গাঁট পর্যন্ত তিনবার করে রগড়ে ধোবে। কড়ে আঙুল দ্বারা পায়ের আঙুলের ফাঁকগুলো খেলাল করে রগড়ে ধৌত করবে।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।