নূর হোসাইন: জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী বলেছেন, ব্যাপক আত্মত্যাগ ও অগণিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। শত শত মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখেছিলাম। যে দেশে আমরা আমাদের স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবো, ইনসাফ থাকবে, সুবিচার থাকবে, সাম্য ও মমতা থাকবে- আমরা এমন একটি দেশ চেয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখ ও আফসোসের সাথে বলতে হয়- স্বাধীনতার অর্ধ শতাব্দী পেরোলেও আমরা বাস্তবিক স্বাধীনতার স্বাদ আজও পাইনি। ভোটের অধিকার পাইনি, ভাতের অধিকার পাইনি, সম্পদের সুষম বণ্টনের অধিকার পাইনি, ন্যায়-ইনসাফ ও সুবিচার পাইনি। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য কিনে মানুষ সংসার চালানোর স্বাধীনতা ফিরে পায়নি। এই দেশে সত্যিকারের স্বাধীনতা পেতে হলে, সর্বস্তরে ইনসাফ ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজপথে আরেকটি সংগ্রামের প্রয়োজন হবে।
তিনি আরো বলেন, কে ক্ষমতায় আসলো আর কে নামলো সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা দেশের জনগণের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, মত প্রকাশের অধিকার চাই। আমাদের দেশে উৎপাদিত ফসল ন্যায্য মূল্যে মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই। আমরা দূর্নীতিবাজদের টুটি চেপে ধরতে চাই। আমরা আরো চাই এদেশের মানুষ একটা বালিশ সাঁয়ত্রিশ হাজারে না কিনুক। আমরা চাই এদেশের মানুষ রডের বদলে বাঁশ না দেখুক। সর্বোপরি আমরা এদেশের সত্যিকারার্থে উন্নয়ন চাই।
আরও পড়তে পারেন-
- কাবলাল জুমা: কিছু নিবেদন
- দারিদ্র বিমোচনে এনজিওদের থেকে কওমি মাদ্রাসার সফলতা বেশি!
- হজ্ব-ওমরায় গেলে আমরা সেখান থেকে কী নিয়ে ফিরব?
- সমাজে পিতা-মাতারা অবহেলিত কেন
- সংঘাতবিক্ষুব্ধ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ইসলামের সুমহান আদর্শ
ঢাকা উত্তরা যুব জমিয়ত ও ছাত্র জমিয়তের নেতৃবৃন্দের সাথে এক মতবিনিময় সভায় মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সংগ্রাম ইজ্জতের সংগ্রাম, স্বকীয়তা রক্ষার সংগ্রাম, স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের সংগ্রাম। আগামীদিনে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এমন একটা নির্বাচন চাই, যেখানে মানুষ তাদের ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সারা পৃথিবী আমাদের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে থাকবে। আমরা ১৮ কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে সচেষ্ট থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
বক্তব্যে মাওলানা নাজমুল হাসান কাসেমী আরো বলেন, আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি- বাংলাদেশের মানুষ প্রায় ১৫ বছর ধরে ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত। অত্যন্ত লজ্জাজনকভাবে আমাদের এই স্বকীয়তা হারানোর কারণে আজকে আমাদের বিদেশি প্রভুদের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। কেউ তাকাতে হয় সেলফির দিকে, কেউ নৈশভোজের দিকে, কেউ সালাম-মুসাফাহার দিকে, আবার কেউ চুম্বনের দিকে। ভাবখানা এমন যে, কেউ চুম্বন করলো বা সেলফি তুললো তো ব্যাস সমর্থন হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, লজ্জাজনকভাবে যারা এই জাতিকে ডুবাতে চায়- তাদের হুঁশিয়ার করে দিতে চাই, এই বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জাতি। তাদের ইজ্জতকে আর এইভাবে ভূলন্ঠিত হতে দেয়া যাবে না।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ