Home ইসলাম মসজিদ বন্ধ রাখার বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা কী

মসজিদ বন্ধ রাখার বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা কী

।। হাদি-উল-ইসলাম ।।

মসজিদ তালাবদ্ধ রাখার ব্যাপারে ইসলামী শরিয়তের বিধান হলো মসজিদ মুসলমানের ইবাদতের স্থান ও দ্বিন শিক্ষার অন্যতম জায়গা। মসজিদ শুধু নামাজের জন্য নয়, বরং জিকির-আজকার, কোরআন তিলাওয়াত ও দ্বিনি শিক্ষার জন্য। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যেসব গৃহ (মসজিদসমূহ) সমুন্নত করতে এবং যার ভেতর তাঁর জিকির করতে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন, সেখানে সকাল-সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করে এমন মানুষ, যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ও ক্রয়-বিক্রয় আল্লাহর স্মরণ, সালাত কায়েম ও জাকাত দেওয়া থেকে বিরত রাখে না…।’ (সুরা : নুর, আয়াত : ৩৬-৩৭)

হাদিসে এসেছে, আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, মসজিদ হলো নামাজ, জিকির ও কোরআন পড়ার জন্য। ে(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৫৪৮)

তাই নিয়ম হলো ফরজ নামাজের সময় ছাড়াও মসজিদকে প্রয়োজন মোতাবেক ইবাদত, তালিম ও জিকিরের জন্য উন্মুক্ত রাখা। বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মসজিদ বন্ধ রাখা ঠিক নয়। আল্লামা ইবনুল হুমাম (রহ.) বিনা প্রয়োজনে মসজিদ বন্ধ রাখাকে ‘মানুষকে মসজিদ থেকে বাধা প্রদান করার অন্তর্ভুক্ত করেছেন।’ তিনি আয়াত দ্বারা দলিল পেশ করেছেন।

আরও পড়তে পারেন-

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তার চেয়ে বড় জালিম আর কে, যে আল্লাহর মসজিদগুলো তাঁর নাম নিতে বাধা প্রদান করে এবং সেগুলো ধ্বংস সাধনে প্রয়াসী হয়।’ (সুরা : বাকারা, আয়াত : ১১৪)

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, সব সময় মসজিদ খোলা রাখলে মসজিদের মালপত্র সংরক্ষণের বিষয়টি ঝুঁকির মধ্যে পড়ে। বিষয়টি বিবেচনা করে কোনো কোনো ইসলামী আইনজ্ঞ নিরাপত্তার প্রয়োজনে নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় মসজিদ বন্ধ রাখাকে জায়েজ বলেছেন। তাই এ ধরনের প্রয়োজনে অন্য সময় মসজিদ বন্ধ রাখার অবকাশ আছে।

কিন্তু সে ক্ষেত্রেও নামাজের পরপরই বন্ধ করবে না, বরং জামাত শেষ হয়ে যাওয়ার পরও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ সময় খোলা রাখবে। যেন পরে আসা ব্যক্তিরা ফরজ আদায় করতে পারে। জামাতের পরে যারা একটু সময় নিয়ে নফল ইবাদত করতে চায় তাদের জন্যও যেন সুযোগ থাকে।

উল্লেখ্য, কোনো কোনো মসজিদে দেখা যায়, জামাত শেষ করার সামান্য পরই মসজিদের মুয়াজ্জিন বা খাদেমরা মসজিদে অবস্থানরত মুসল্লিদের বের হয়ে যাওয়ার জন্য তাড়া দিতে থাকেন, যা কিছুতেই সমীচীন নয়। আর যেখানে নামাজের নির্ধারিত সময় ছাড়া অন্য সময়ও ইবাদত ও দ্বিনি তালিমের উদ্দেশে মুসল্লিদের মসজিদে ব্যাপক আসা-যাওয়া থাকে, ওই সব মসজিদ খোলা রাখার ব্যবস্থা করা কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব।

এ জন্য প্রয়োজনে মালপত্র সংরক্ষণ করা ও মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য অতিরিক্ত খাদেম নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে। আর কোনো কোনো ক্ষেত্রে পুরো মসজিদ খোলা রাখা সম্ভব না হলে অন্তত মসজিদের কোনো অংশ অথবা বারান্দা (বাতি-পাখাসহ) খোলা রাখার ব্যবস্থা করা আবশ্যক।

এটাও মনে রাখতে হবে, মসজিদে যেসব দ্বিনি কাজ করা হবে, তা ইসলামের বিধান মোতাবেক হওয়া জরুরি এবং মসজিদ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে হওয়া আবশ্যক। এ ক্ষেত্রে যেমন ইসলামী শরিয়তের কোনো বিধান লঙ্ঘন করা জায়েজ নয়, তেমনি মসজিদের বৈধ ও স্বীকৃত কোনো নিয়ম লঙ্ঘন করাও ঠিক নয়। (ফাতহুল কাদির : ১/৩৬৭; আল বাহরুর রায়েক : ২/৩৩; ফাতাওয়া হিন্দিয়া : ১/১০৯; রদ্দুল মুহতার : ১/৬৫৬; রুহুল মাআনি : ১০/৬৫)

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।