Home আন্তর্জাতিক চিন্তায় বাইডেন, ভোট দেবে না আরব, মুসলিমরা

চিন্তায় বাইডেন, ভোট দেবে না আরব, মুসলিমরা

চিন্তায় বাইডেন, ভোট দেবে না আরব, মুসলিমরা - ছবি : আল জাজিরা

প্রচ্ছদ পৃষ্ঠায় পুরোটা জুড়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছবি। আর তাতে ঘন লাল হরফে লেখা সুস্পষ্ট বার্তা : ‌’তিনি আমাদের ভোট পাবেন না।’

পত্রিকাটির নাম আরব আমেরিকান নিউজ। মিশিগানের ডিয়ারবর্ন থেকে প্রকাশিত দ্বিভাষী এই সাপ্তাহিক পত্রিকায় গত সপ্তাহে এটিই ছিল প্রধান খবর। সেখানে বসবাসরত বিপুলসংখ্যক আরব-ভাষাভাষী লোকজনের বার্তাটি ছিল এমনই।

বাইডেন যখন ২০২৪ সালে আবার নির্বাচনে জয়ের জন্য লড়ছেন, তখন আরব ও মুসলিম আমেরিকান ভোটাররা তাকে কিভাবে দেখছে, সেটা এর মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে।

অনেক ফিলিস্তিনি, আরব এবং মুসলিম আমেরিকান গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধে বাইডেন প্রশাসনের ‘অটল’ সমর্থনে হতাশা প্রকাশ করেছে। তাদের হতাশা লাঘব করার চেষ্টা বাইডেন প্রশাসন করেছে। বেশ কয়েকজন প্রতিনিধি পাঠিয়ে মুসলিম ও আরবদের মন জয় করার চেষ্টা চালানো হয়েছে। কিন্তু বাইডেন প্রশাসনের নীতি পরিবর্তিত না হওয়ায় তাতে লাভ হয়নি কিছুই। অনেকে এমনও বলেছে, প্রয়োজনে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার ক্ষমতায় আসুক, তবুও যেন বাইডেন বিদায় নেন।

গত মাসে আরব আমেরিকান ইনস্টিটিউটের পরিচালিত এক জরিপে দেখা যাচ্ছে, আরব আমেরিকান সম্প্রদায়ের মধ্যে বাইডেনের প্রতি সমর্থন ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। মাত্র ১৭ ভাগ বলেছে, তারা বাইডেনকে সমর্থন দেবে। অথচ ২০২০ সালে বাইডেনের প্রতি তাদের সমর্থন ছিল ৫৯ ভাগ।

একইভাবে গত সপ্তাহের এনবিসি নিউজ জরিপে দেখা যায়, যদি আজ ভোট হয়, তবে সুইয়িং স্টেট মিশিগানের মাত্র ১৬ ভাগ আরব ও মুসলিম জবাবদাতা বাইডেনকে ভোট দেবে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইসরাইলের প্রতি বাইডেনের সমর্থনের কারণে তার জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে। কয়েকটি পর্যায়ে তার নেয়া পদক্ষেপ আরব ও মুসলিমদের ক্ষুব্ধ করেছে। হামাস-ইসরাইল যুদ্ধের একেবারে প্রথমেই ইসরাইলের প্রতি বাইডেন ‘অটল সমর্থন’ ঘোষণা করেন। অথচ গাজায় ন্যূনতম মানবিক সহায়তা নিয়ে তিনি কিছুই বলেননি।

এরপর ইসরাইলে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন বাড়ানোর ঘোষণা দিয়ে ইসরাইলকে আরো ১৪ বিলিয়ন ডলার প্রদান করার জন্য কংগ্রেসকে অনুরোধ করেছেন। আবার ফিলিস্তিনিদের হত্যা নিয়ে যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হচ্ছিল, তার যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন করে তিনি আরেক দফা আরব আমেরিকানদের ক্ষুব্ধ করেন।

আরও পড়তে পারেন-

অধিকন্তু, ১৪ অক্টোবর শিকাগোর কাছে ওয়াদিয়া আল-ফায়ুম নামের ছয় বছরের এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান শিশুকে হত্যা এবং তার মাকে মারাত্মক আহত করার ঘটনায় তিনি অ্যান্টি-সেমিটিজম নিয়ে এসেছিলেন। এটি আরব মুসলিমদের ক্ষোভ আরো বাড়িয়ে দেয়।

বাইডেন এবং তার ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে ভোট না দিয়ে কাকে বেছে নেবে আরব মুসলিমরা?

কারণ রিপাবলিকানরা আরো বেশি ইসরাইলপন্থী। গত সপ্তাহে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা যুক্তরাষ্ট্রে ফিলিস্তিনিদের প্রবেশ বন্ধ করে একটি বিল উত্থাপন করেছে। এমনকি যারা ১ অক্টোবরের পর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে, তাদেরকেও বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে।

রিপাবলিকানদের এ ধরনের কট্টর অবস্থান সত্ত্বেও অনেক আরব মুসলিম আল জাজিরাকে বলেন যে আমরা ‘দুই শয়তানের মধ্যে ছোটটিকে’ বেছে নিয়ে ডেমোক্র্যাটদের ভোট দিতাম। কিন্তু এতে গাজার মৃত্যুর সংখ্যা কমেনি।

মারিয়া হাবিব নামের এক লেবাননি আমেরিকান বলেন, তারা আর ভোট পাবে না। যা হবার হয়ে গেছে। আমি তাদেরকে মূলত এই কারণে ভোট দিতাম যে আমাদের কাছে এর চেয়ে ভালো কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এখন সেটাও শেষ হয়ে গেছে।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।