Home ইসলাম আল্লাহর স্মরণ যেভাবে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়

আল্লাহর স্মরণ যেভাবে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়

।।  মুফতি সফিউল্লাহ ।।

আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম মাধ্যম হলো জিকির। জিকির অত্যন্ত সহজ আমল। জিকিরের চেয়ে সহজ কোনো আমল নেই। আল্লাহর জিকির ও স্মরণে ঈমানদারের অন্তর প্রশান্ত হয়।

খাঁটি ঈমানদার সব সময় জিকিরে নিমগ্ন থাকে। জিকির যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে করা যায়। শোয়া-বসা, পবিত্র-অপবিত্র অবস্থায়ও কোনো না কোনো জিকির বিধিসম্মত থাকে। জিকির শব্দের অর্থ স্মরণ করা, বর্ণনা করা ইত্যাদি।

ইসলামের পরিভাষায় আল্লাহর স্মরণকে জিকির বলা হয়। সব ইবাদতের রুহ হচ্ছে আল্লাহর জিকির। এ জন্য আল্লাহ বান্দাদের সর্বাবস্থায় বেশি পরিমাণে তাঁর জিকির করার নির্দেশ দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহকে বেশি পরিমাণে স্মরণ করো এবং সকাল সন্ধ্যায় তাঁর পবিত্রতা ঘোষণা করো। ’ (সুরা : আহজাব, আয়াত : ৪১-৪২)

এখানে আল্লাহর পবিত্রতা ঘোষণা বলতে জিকিরের কথা বলা হয়েছে। অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘যারা দাঁড়িয়ে, বসে ও শায়িত অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করে এবং চিন্তা-গবেষণা করে আসমান ও জমিন সৃষ্টি বিষয়ে, (তারা বলে) হে পরওয়ারদিগার! এসব তিনি অনর্থক সৃষ্টি করেননি।’ (সুরা : আলে-ইমরান, আয়াত : ১৯১)

আল্লাহর জিকিরকারীর উপমা হলো জীবিত ব্যক্তি, আর যে জিকির করে না তার উপমা হলো মৃত ব্যক্তি। তাই অন্তরকে সজীব ও প্রাণবন্ত রাখার জন্য জিকিরের বিকল্প নেই। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে এবং যে আল্লাহর জিকির করে না তাদের দৃষ্টান্ত হলো জীবিত ও মৃতদের মতো। (বুখারি, হাদিস : ৬৪০৭)

জিকিরের মাধ্যমে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘যারা পরহেজগার, শয়তান যখন তাদের কুমন্ত্রণা দেয়, তখন তারা আল্লাহকে স্মরণ করে। ততক্ষণাৎ তাদের চোখ খুলে যায়।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ২০১)

আল্লাহ পাকের জিকিরের অসংখ্য পথ ও পদ্ধতি রয়েছে। মহানবী (সা.) সেগুলো আমাদের জানিয়েছেন। এর যেকোনো একটি অবলম্বন করলেই জিকির সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে সবচেয়ে উত্তম জিকির হলো, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। (তিরমিজি, হাদিস : ৩৩৮৩)

আরও পড়তে পারেন-

মানুষ যখন ডিপ্রেশনে থাকে, চরম বিরক্তিকর অবস্থায় সময় কাটায়, মন যখন ছটফট করে, পেরেশানিতে থাকে, তখন আল্লাহর জিকিরের মাধ্যমেই অন্তর প্রশান্তি লাভ করে। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে, আল্লাহর স্মরণে তাদের অন্তর প্রশান্ত হয়। জেনে রেখো, আল্লাহর স্মরণেই শুধু হৃদয় প্রশান্ত হয়।’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২৮)

জিকির ভালো ও দ্রুত ঘুমের জন্যও উত্তম একটি মাধ্যম। আবুল আহওয়াস থেকে বর্ণিত, আবদুল্লাহ (রা.) বলেছেন, আল্লাহর জিকির করলে শয়তানের পক্ষ থেকে ঘুম এসে যাবে। তোমরা চাইলে অনুশীলন করে দেখতে পারো। তোমাদের কেউ যখন শয্যাগত হয়ে ঘুমাতে ইচ্ছা করে, তখন সে যেন মহামহিম আল্লাহর জিকির করে।’ (আদাবুল মুফরাদ, হাদিস : ১২২০)

মহান আল্লাহ মুসলিম উম্মাহকে বেশি পরিমাণে জিকির করার তাওফিক দান করুন, আমিন!

লেখক : শিক্ষক, জামিয়া মিফতাহুল উলূম, নেত্রকোনা

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।