Home সম্পাদকীয় সুবর্ণচরের যে পৈশাচিকতা বিবেকবোধকে কাতর করেছে!

সুবর্ণচরের যে পৈশাচিকতা বিবেকবোধকে কাতর করেছে!

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশজুড়েই যে নারী ধর্ষণের অপরাধ অনেক বেড়ে গেছে, সে সম্পর্কে নিশ্চয়ই নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তা সত্ত্বেও মাঝেমধ্যে কিছু ঘটনায় ব্যাপক আলোড়ন ওঠে। জনগণ ভীত ও স্তম্ভিত না হয়ে পারে না। এ রকম একটি ঘটনাই ঘটেছে নোয়াখালির সুবর্ণচর উপজেলার মধ্যম বাগ্যা গ্রামে, যে ঘটনার পৈশাচিকতা সারাদেশবাসীর বিবেকবোধকে কাতর করেছে। ইতিমধ্যে ধর্ষণ অনেকাংশে ‘স্বাভাবিক’ বিষয়ে পরিণত হলেও মধ্যম বাগ্যার ঘটনাটি আলোড়ন তুলেছে বিশেষ কারণে। আর সে কারণটি হলো, নৌকায় ভোট না দিয়ে ধানের শীষে ভোট দেয়ার ‘অপরাধে’ একজন সিএনজি চালকের স্ত্রীকে গণধর্ষণের শিকার বানিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা। 

ওই নারী এবং তার স্বামী-সন্তানদের হাসপাতালে নেয়ার পর ঘটনা সম্পর্কে জানাজানি হয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়েছে সারাদেশেই। প্রতিবাদের ঝড় উঠতেও সময় লাগেনি। নোয়াখালি এবং আরো কিছু অঞ্চলের পাশাপাশি রাজধানীতেও প্রতিবাদী সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে বিভিন্ন দল ও মানবাধিকার সংগঠন। দেশজুড়ে এই প্রতিবাদের মুখে ২ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ তিনজন ধর্ষককে গ্রেফতার করেছে। নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার কারণে একজন গৃহবধূকে গণধর্ষণের অসহায় শিকার দুই কারণে উদ্বেগজনক মনে হয়েছে আমাদের কাছে।

এক. স্বাধীন ভোটাধিকার আজ হুমকির মধ্যে পড়েছে। দুই. ধর্ষণ আজ সহজ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এভাবে অসংখ্য নারীর স্বাভাবিক জীবন ধ্বংস করার প্রতিটি ক্ষেত্রে অপরাধ প্রমাণিত হলেও কোনো ধর্ষকেরই এ পর্যন্ত শাস্তি হচ্ছে না। ধর্ষকরা উল্টো বরং ‘লাই’ পাচ্ছে। এজন্যই দেশজুড়ে ‘তুফান সরকার’দের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। এখানে প্রসঙ্গক্রমে বগুড়ার শ্রমিক লীগ নেতা তুফান সরকারের কথা স্মরণ করা দরকার। ২০১৭ সালের প্রথমার্ধে বগুড়ার কলেজ ছাত্রী সোনালীকে তার বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করেছিল তুফান সরকার। তুলে নেয়ার কাজটি করেছিল তার সশস্ত্র ক্যাডাররা। সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, অপরাধী রাজনৈতিক ঘরানার হলেই তার ক্ষেত্রে  সুবিচার পাওয়া যায় না।

আমরা মনে করি না যে, কেবলই জনাকয়েক ধর্ষককে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়াই অপরাধ দমন ও নির্মূল করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে আরো কঠিন এবং প্রকৃত অর্থে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ কোনো শাস্তি দেয়া যায় কি না সে ব্যাপারে আইন বিশারদদের সঙ্গে পরামর্শ করা দরকার। আমরা চাই, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা হোক যার ফলে কেউ কোনো নারীকে ধর্ষণের চিন্তা পর্যন্ত করার সাহস না পায়। একই কথা অন্য সব অপরাধের ক্ষেত্রেও চিন্তা করা দরকার। সরকারের উচিত ঘটনাক্রমে কঠোর শাস্তি দেয়ার বহুবার উচ্চারিত ধমকের পুনরাবৃত্তি করার পরিবর্তে বাস্তবে কিছু করে দেখানো। কারণ, এই তুফান সরকাররা সারাদেশেই ছড়িয়ে রয়েছে। ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয় থাকায় তারা অপরাধও করে বেড়াচ্ছে দুর্দান্ত দাপটের সঙ্গেÑ যার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া গেছে নোয়াখালির সুবর্ণচরে। এজন্যই আমরা মনে করি, ধর্ষণের মতো ভয়ংকর অপরাধ দমন ও নির্মূল করতে হলে সবার আগে তুফান সরকারদের মতো লোকদের আইনের আওতায় আনা দরকার।

সবচেয়ে উদ্বেগের বিষয় হলো, অপরাধী রাজনৈতিক ঘরানার হলেই তার ক্ষেত্রে  সুবিচার পাওয়া যায় না। আমরা মনে করি না যে, কেবলই জনাকয়েক ধর্ষককে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নেয়াই অপরাধ দমন ও নির্মূল করার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। ধর্ষণের মতো নিকৃষ্ট অপরাধের ক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে আরো কঠিন এবং প্রকৃত অর্থে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি’ কোনো শাস্তি দেয়া যায় কি না সে ব্যাপারে আইন বিশারদদের সঙ্গে পরামর্শ করা দরকার। আমরা চাই, এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান করা হোক যার ফলে কেউ কোনো নারীকে ধর্ষণের চিন্তা পর্যন্ত করার সাহস না পায়। একই কথা অন্য সব অপরাধের ক্ষেত্রেও চিন্তা করা দরকার।

সরকারের উচিত ঘটনাক্রমে কঠোর শাস্তি দেয়ার বহুবার উচ্চারিত ধমকের পুনরাবৃত্তি করার পরিবর্তে বাস্তবে কিছু করে দেখানো। কারণ, এই তুফান সরকাররা সারাদেশেই ছড়িয়ে রয়েছে। ক্ষমতাসীনদের প্রশ্রয় থাকায় তারা অপরাধও করে বেড়াচ্ছে দুর্দান্ত দাপটের সঙ্গে; যার সর্বশেষ প্রমাণ পাওয়া গেছে নোয়াখালির সুবর্ণচরে। এজন্যই আমরা মনে করি, ধর্ষণের মতো ভয়ংকর অপরাধ দমন ও নির্মূল করতে হলে সবার আগে তুফান সরকারদের মতো লোকদের আইনের আওতায় আনা দরকার।