Home ইসলাম উম্মতের দুঃসময়ের কাণ্ডারী হযরত উসমান বিন আফফান (রাযি.)

উম্মতের দুঃসময়ের কাণ্ডারী হযরত উসমান বিন আফফান (রাযি.)

।। মাওলানা মামুনুল হক ।।

হযরত উমর (রাযি.) নিজের পরবর্তি খলীফা নির্বাচনের জন্য তৎকালীন সময়ের শ্রেষ্ঠ ছয় জন সাহাবীকেই দায়িত্ব দিয়েছিলেন। শেষতক ৬ জন ঘুরে দায়িত্বটা হযরত আব্দুর রহমান বিন আউফ (রাযি.)এর হাতে অর্পিত হয়। হাদীস ও ইতিহাসের পাঠক মাত্রেরই জানা থাকার কথা, তিনি কতটা সতর্কতা ও সচেতনতার সাথে দায়িত্বটি পালন করেছিলেন।

মূলতঃ খলীফা হওয়ার জন্য হযরত উসমান (রাযি.) এবং হযরত আলী (রাযি.) প্রায় সমান সম্ভাবনার পাত্র ছিলেন। অন্য চারজনের চেয়ে এই দু’জনের অগ্রগণ্যতা ছিল অনেকটাই স্পষ্ট ৷ তবে এই দু’জনের মধ্য থেকে একজনকে বাছাই করা ছিল খুবই কঠিন। আব্দুর রহমান বিন আউফ (রাযি.) এই কাজটি করেছিলেন সুচাররূপে। মদীনার প্রতিজন আহলে রায় সাহাবীর সঙ্গে একান্তে গিয়ে গিয়ে তিনি পরামর্শ করেছেন। তিনদিন পর্যন্ত রাত দিন বিরতিহীন পরিশ্রম করে তিনি কাজ সমাধা করেছেন এবং শেষ পর্যন্ত সকলের পরামর্শক্রমে তৃতীয় খলীফা হিসাবে হযরত উসমান (রাযি.)এর নাম ঘোষণা করেন।

সুতরাং এ কথা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলা যায়, যতটা যাচাই বাছাই, জনমত ও পরামর্শের আলোকে হযরত উসমান (রাযি.)এর খেলাফত নির্বাচন হয়েছিল, খেলাফতের ইতিহাসে সেটি এক বিরল ঘটনা। অধিকাংশ সাহাবী উসমান (রাযি.)কে শেরে খোদা আলী (রাযি.)এর তুলনায় খেলাফত তথা নেতৃত্বের জন্য অধিক উপযুক্ত বিবেচনা করেছিলেন। ‘হযরত উসমান (রাযি.) সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন, তাঁর নেতৃত্ব দুর্বল ছিল’, এমন কথা শুধু উসমান (রাযি.)কেই নয়, বরং সকল সাহাবীকেই অভিযোগের কাঠগড়ায় দাঁড় করায়।

[ দুই ]

হুদায়বিয়ার উমরার সফরে মক্কাবাসীর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগে হযরত উসমানই (রাযি.) ছিলেন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের শ্রেষ্ঠ অবলম্বন। এ কাজের জন্য হযরত উমর (রাযি.) নিজে অপারগতা প্রকাশ করে উসমান (রাযি.)এর নাম প্রস্তাব করেছিলেন।

হযরত ইবনে উমর বলেন, মক্কা উপত্যকায় যদি হযরত উসমান (রাযি.)এর চেয়ে অধিক সম্মানিত কেউ থাকতেন, তাহলে নবীজী (সা.) তাঁকেই পাঠাতেন। কিন্তু কূটনৈতিক আলোচনার জন্য হযরত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত উসমান (রাযি.)কেই নির্বাচন করেছিলেন। হযরত উসমান (রাযি.)এর নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে মুনাফিকরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে, এমন কথা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য।

– মাওলানা মামুনুল হক, জনপ্রিয় তরুণ ইসলামী ব্যক্ত্বি, লেখক, গবেষক ও মুহাদ্দিস- জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া, মুহাম্মাদপুর ঢাকা।