Home রাজনীতি যারা কাশ্মীরকে ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তারা ইতিহাস জানে না: আল্লামা নূর...

যারা কাশ্মীরকে ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তারা ইতিহাস জানে না: আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব ও হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর সভাপতি আল্লামা নূর হুসাইন কাসেমী বলেছেন, বিশ্বব্যাপী মুসলমানদের উপর আধিপত্যবাদি ও পুঁজিবাদী শক্তি নিপীড়ন ও দমন-পীড়ন চালাচ্ছে। তারপরও ইসলামের অগ্রযাত্রা কোন অপশক্তি থামিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি বলেন, কাশ্মীর একটি স্বাধীন ভূখণ্ড, কাশ্মীর ভারতের অংশ নয়। যারা কাশ্মীরকে ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে তারা ইতিহাস জানে না।

আল্লামা কাসেমী আরো বলেন, কাশ্মীর আজ হাহাকার করছে। নিজেদের অধিকার, মর্যাদা ও নিরাপত্তার জন্য কাশ্মীরি জনতার বুকফাটা আর্তনাদ দেখার কেউ নেই। বিশ্বসম্প্রদায় ও জাতিসংঘকে একদিন এই ন্যায্য অধিকার ও ভারতীয় নিপীড়নের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণে জবাবদিহীতার কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।

তিনি বলেন, শুধু কাশ্মীর নয়, দুনিয়াজুড়ে মুসলমানরা আজ নির্যাতিত, অবহেলিত। দুনিয়াব্যাপী নির্যাতিত মুসলমানদের অধিকার আদায়ে মাঠে ময়দানে কৌশল ও বুদ্ধিমত্তার সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে।

তিনি বলেন, ১৯৪৮ সালের জাতিসঙ্গের চুক্তি লঙ্ঘন করে ৩৭০ ধারা বাতিলপূর্বক গায়ের জোরে ভারত সরকার কাশ্মীরি নিরাপদ বনি আদমের উপর জুলুম নির্যাতন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আয়োজন করছে। অবিলম্বে তাদের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার ফেরত দিতে হবে। জুলুম নির্যাতন বন্ধ করতে হবে। ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাপনের সুযোগ করে দিতে হবে। তাদের মৌলিক অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত শান্তিপ্রিয় ও অধিকার সচেতন জনতা দূর্বার আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ঈমানী চেতনার বলিয়ান হয়ে নির্যাতিত কাশ্মীরিদের মানবাধিকার রক্ষা ও আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বিকল্প নেই। কাশ্মীরের জনগণ স্বাধীনতা চাইলে উপমহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক দল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম তাদের সাথে থাকবে।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, জমিয়তের নেতাকর্মীদের আল্লামা শিহাব উদ্দিনের মতো একেকজন সিপাহশালা’র হয়ে সকল বাঁধা উপেক্ষা করে সংগঠনের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে হবে।

গতকাল শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেলে কানাইঘাট উপজেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের উদ্যোগে পৌরসভাস্থ ইউনিক কমিউনিটি সেন্টারে শায়খুল হাদীস মাওলানা শিহাব উদ্দিন (রহ.) এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জমিয়ত মহাসচিব উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে সিলেট জেলা জমিয়তের সভাপতি আল্লামা শায়খ জিয়াউদ্দিন বলেন, বর্তমানে বিভক্তির সময় নয়, সকলের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ প্লাটফর্মে থেকে ইসলাম ও মুসলমানের নেতৃত্ব দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জমিয়তের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক বলেন, মধ্যরাতের ভোটে নির্বাচিত সরকারের চুরি এবং গ্রামের সাধারণ চোরের চুরি সমান অপরাধ। আমরা যদি গ্রামের চোরের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হই, তাকে প্রতিহত করি, তাহলে অবশ্যই এর চেয়ে বড় চোর যারা দেশ ও রাষ্ট্রকে চুরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এই দেশ আমাদের, এখানে আমাদের বসবাস করতে হবে। সুতরাং রাজনীতির মাঠ অন্যদের হাতে দিয়ে আমরা হাত গুটিয়ে বসে থাকবো – এটা কোন বিবেকবান মানুষের কাজ নয়। কাজেই রাজনীতির মাঠে উলামায়ে কেরামকে তৌহিদী ও ইনসাফকামী জনতাকে সাথে নিয়ে ঈমান ও ইসলাম বাঁচাতে এগিয়ে আসতে হবে।

জমিয়তের প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীন বলেন, হিন্দুত্ববাদি মোদি সরকার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের সাথে সাথে কাশ্মীরের অবস্থা ৩৪৮ সালের পরিস্থিতিতে চলে গেছে। কাশ্মীর এখন আইনত কোনভাবেই ভারতের সাথে যুক্ত নেই। ভারত কাশ্মীরে বর্তমানে যা করছে, তার সবই বে-আইনী ও জবরদখল মূলক। কাশ্মীরীদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ভারতীয় দখলমুক্ত করতে বিশ্বের সকল ন্যায় ও ইনসাফকামী মানুষকে সোচ্চার হতে হবে।

উপজেলা জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের সভাপতি মাওলানা শফিকুল হকের সভাপতিত্বে, সাধারণ সম্পাদক মুফতি এবাদুর রহমান ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমানের যৌথ পরিচালনায় কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সহ-সভাপতি মাওলানা শায়খ জিয়া উদ্দিন।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ হুসাইন আহমদ, স্বাগত বক্তব্য রাখেন কানাইঘাট উপজেলা জমিয়তের সহ সভাপতি মাওলানা নুর আহমদ ক্বাসেমী।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন- সিলেট মহানগর জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ফখরুজ্জামান, কানাইঘাট পৌর বিএনপির সভাপতি কাউন্সিলর শরিফুল হক, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা জমিয়তের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা গোলাম আম্বিয়া কয়েস, জেলা জমিয়তের প্রচার সম্পাদক মাওলানা সালেহ আহমদ শাহবাগী, জমিয়ত নেতা জাকারিয়্যা আল হেলাল, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হাজী জসিম উদ্দিন, উপজেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি এবাদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য ছাব্বির আহমদ, চতুল ঈদগাহ মাদ্রাসার মুহাদ্দিস মাওলানা তবারক আলী, শায়খ শিহাব উদ্দিনের পুত্র মাওলানা নজমুদ্দীন, উপজেলা যুবদলের সেক্রেটারী খসরুজ্জামান, ছাত্র জমিয়ত ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি হাফিজ আব্দুর রহমান নাদিম, জেলা ছাত্র জমিয়তের সাধারণ সম্পাদক হাফিজ ফয়েজ উদ্দিন, উপজেলা ছাত্র দলের সভাপতি রুহুল আনিন, মাওলানা নজরুল ইসলাম, আব্দুশ শাকুর সাদিক প্রমুখ। -বিজ্ঞপ্তি।