Home জাতীয় সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারের নতজানু ভূমিকা বেদনাদায়ক ও লজ্জার: আল্লামা কাসেমী

সীমান্ত হত্যা বন্ধে সরকারের নতজানু ভূমিকা বেদনাদায়ক ও লজ্জার: আল্লামা কাসেমী

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশী নিহতের ঘটনা উদ্বেগজনক হারে বেড়ে গেছে। কিন্তু সরকার এসব সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে কড়া প্রতিবাদ ও কার্যকর কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, এমনটা আমরা দেখছি না। এসব সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বর্ডার গার্ডের তরফ থেকেও পতাকা বৈঠক করে বিএসএফের কাছ থেকে লাশ গ্রহণ ছাড়া ভরসা রাখার মতো কোন তৎপরতা চোখে পড়ে না। বরং কখনো কখনো বর্ডার গার্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ এসব হতভাগ্য নিহত বাংলাদেশীদেরকে চোরাচালানী বা অবৈধ গরুব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে প্রকারান্তরে বিএসএফের নিষ্ঠুরতার পক্ষেই যেন সাফাই গেয়ে যান। বিএসএফ’র সীমান্ত হত্যাকাণ্ড বন্ধে রাষ্ট্রের এমন নতজানু ভূমিকা গভীর বেদনাদায়ক ও লজ্জার।

আজ (২৬ আগস্ট) এক বিবৃতিতে জমিয়ত মহাসচিব আরো বলেন, গত ১১ জুলাই সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দেওয়া তথ্য মতে আওয়ামী লীগ শাসনামলে গত ১০ বছরে বিএসএফ সীমান্তে ২৯৪ জন বাংলাদেশীকে হত্যা করেছে। সর্বশেষ গত ২৩ আগস্ট রাত ১১টায় মৌলভীবাজারের বড়লেখা সীমান্তে আব্দুর রউফ (২৫) নামে এক বাংলাদেশীকে বিএসএফ হত্যা করে লাশ নিয়ে যায়। এসব ঘটনায় বিএসএফ’র তরফ থেকে দাবি করা হয়, নিহতরা অবৈধ অনুপ্রবেশ, চোরাচালান বা গরু পাচারের সাথে জড়িত ছিল। নিহতদের কেউ অস্ত্রধারী ছিল বা সশস্ত্র আক্রমণ করেছে, এমন দাবি বিএসফও কখনো করেনি।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, বিশ্বের কোথাও এমনটা আমরা দেখি না যে, কেবল অবৈধ সীমান্ত পারাপার বা চোরাচালানের জন্য নিরীহ মানুষ হত্যার মতো নিষ্ঠুরতা ঘটে। ভারত-চীন বা ভারত-পাকিস্তান বর্ডারেও সীমান্তে এমন হত্যাকাণ্ডের খবর দেখা যায় না। বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীরা যে হারে পাখী শিকারের মতো নির্বিঘ্নে বাংলাদেশীদেরকে হত্যা করে চলেছে, বিশ্বে এমন ঘটনা নজিরবিহীন।

তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের তরফ থেকেই সরকারীভাবে বার বার বলা হচ্ছে, উভয় দেশের মধ্যে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিরাজ করছে। সাম্প্রতিক ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় জানলাম, সেই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ‘বিশেষ ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে’ উন্নিত হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারী মাসের শুরুতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন ভারত সফরের পূর্বে উভয়ে দেশের সম্পর্ককে ‘স্বামী-স্ত্রীর মতো’ বলে অভিহিত করেছেন।

জমিয়ত মহাসচিব বলেন, ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের সাথে সমমর্যাদা ও সমঅধিকারের ভিত্তিতে সুসম্পর্ক থাকাটাই আমাদের কাম্য। কিন্তু সীমান্তে বাংলাদেশীদেরকে লাগাতার হত্যা করে যাবে, আর বাংলাদেশ সুসম্পর্ক রক্ষার জন্য চুপচাপ সয়ে যাবে; আমরা এমনটা চাই না। আমরা চাই সীমান্তে বাংলাদেশের স্বার্থ ও নাগরিকদের জানমালের হেফাজতে বর্ডার গার্ডের জাওয়ানরা বীরের মতো ভূমিকা রাখুক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সীমান্তে যে কোন আগ্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক। -বিজ্ঞপ্তি।

নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েই মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে: আল্লামা কাসেমী