Home বুক রিভউ আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক লিখিত ‘বিবর্তনবাদ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক লিখিত ‘বিবর্তনবাদ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

উম্মাহ প্রতিবেদক: জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা-ঢাকা’র শায়খুল হাদীস ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সহসভাপতি আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক লিখিত “বিবর্তনবাদ” বইয়ের আনুষ্ঠানিকভাবে মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার কাসেমি মিলনায়তনে মুফতি, মুহাদ্দিস ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের অংশগ্রহণে এই মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

বইটির লেখক আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুকসহ এতে উপস্থিত ছিলেন জামিয়া মাদানিয়া বারিধারার সহযোগী পরিচালক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাফেজ নাজমুল হাসান, সিনিয়র মুহাদ্দিস ও জমিয়তের যুগ্মমহাসচিব মুফতী মনির হোসাইন কাসেমী, সিনিয়র শিক্ষক মুফতী জাকির হোসাইন কাসেমী, মাওলানা সানাউল্লাহ মাহমূদী, মাওলানা মুনির আহমদ প্রমুখ।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা’র সহযোগী পরিচালক ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র সাংগঠনিক সম্পাদক হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান বলেন, যে কোন সংকটময় সময়ে সর্বস্তরের নেতৃত্বের পাশাপাশি জাতিকে দিশা দিতে বইপুস্তক ও দিকনির্দেশনামূলক লেখালেখির ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সিনিয়র, জুনিয়র নেতারা বইপুস্তক ও গবেষণামূলক লেখা পড়েই নিজেদের সঠিক অবস্থান নির্ধারণ করেন এবং কাজের ক্ষেত্রে সহায়তা নেন। বারিধারা মাদ্রাসার শায়েখে সানী আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেব (হাফি.) যে কোন সংকটময় পরিস্থিতি ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সামনে আসলে অতি দ্রুত সে বিষয়ে কলম হাতে তুলে নেন। তাঁর রচনা ও পুস্তিকা থেকে তখন আলোচ্য বিষয়ে সহজেই একটা স্পষ্ট ধারণা বা পথনির্দেশিকা লাভ করা যায়।

হাফেজ মাওলানা নাজমুল হাসান আরো বলেন, বিগত ২০১৩ সাল থেকে জাতীয় শিক্ষার মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, অনার্স ও মাস্টার্স স্তর পর্যন্ত পাঠ্যবইয়ে ‘বিবর্তনবাদ’ বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ‘বিবর্তন মতবাদ’ মানুষ ও বানরের পূর্ব পুরুষ একই সাব্যস্ত করে। তাই এই মতবাদ মুসলমানদের ঈমান-আক্বিদা বিরোধী কুফরী মতবাদ। এই মতবাদে বিশ্বাস করলে ঈমান থাকবে না। কারণ, পবিত্র কুরআনের অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা স্পষ্টভাবে বলেছেন, মানব জাতির উৎপত্তি হযরত আদম (আ.) থেকেই শুরু হয়েছে। বিবর্তন তত্ত্ব মতে শুধু মানুষের আদি পিতা বানর সাব্যস্ত করেই থামে না। বরং এই মহাবিশ্ব, গ্রহ, উপগ্রহ, সমগ্র প্রাণী জগত এবং তরুলতাসহ সকল সৃষ্টি যে অত্যন্ত সুনিপুণ ও সুবিন্যস্তভাবে আল্লাহ তাআলা নিজ কুদরতে সৃষ্টি করেছেন, এই বিশ্বাসটাই আর অক্ষুণ্ন থাকে না।

তিনি বলেন, বিবর্তনবাদ শিক্ষার প্রতিপাদ্য বিষয় হলো- সৃষ্টিকর্তার ধারণা থেকে মানুষকে বের করে দেয়া। কারণ, ডারউইনবাদ বা এভলুশন- এর বক্তব্য- ‘সবকিছু প্রকৃতি থেকে সৃষ্টি হয়েছে। এই পৃথিবী, গ্রহ, উপগ্রহ, মহাজগত, প্রা-ণীক‚ল, সবকিছুই বিভিন্ন রাসায়নিক বিবর্তনের মাধ্যমেই সৃষ্টি হয়েছে। প্রাণের অস্তিত্বও এই প্রক্রিয়ায় প্রথমে প্রোটোভাইরাস, তারপর ভাইরাস, এরপর ব্যাকটেরিয়া। এভাবে একটি থেকে অপরটি, এমন করে করে লক্ষ-কোটি প্রজাতির সমস্ত প্রাণী ও উদ্ভিদজগত সৃষ্টি হয়েছে। এমনই একটা পর্যায়ে বানর, তারপর মানুষ। এভাবে জগতে নতুন নতুন প্রাণী ও প্রজাতির সৃষ্টি হয়। এর অর্থ দাঁড়ায়- মহান সৃষ্টিকর্তার অস্তিত্ব, কিয়ামত, হাশর, বিচার, পুলসিরাত, বেহেস্ত, দোযখসহ ইসলামী আক্বীদা-বিশ্বাসের সব কিছুই কাল্পনিক ও অবাস্তব চিন্তা। (নাউজুবিল্লাহ)।

মাওলানা নাজমুল হাসান বলেন, শায়খুল হাদীস আল্লামা উবায়দুল্লাহ ফারুক সাহেব তাঁর নতুন “বিবর্তনবাদ” বইয়ে এই ইস্যুটিকে অত্যন্ত প্রাঞ্জল ভাষায় সহজবোধ্য যুক্তি-প্রমাণের আলোকে তুলে ধরেছেন। তিনি অত্যন্ত সহজভাবে বইটিতে প্রমাণ করেছেন, কেন বিবর্তনবাদ মতবাদ কুফরী মতবাদ এবং বিবর্তনবাদে বিশ্বাস করলে কেন ঈমান থাকবে না। আমি মনে করি, বইটি সময়ের চাহিদা অনুপাতে অত্যন্ত মূল্যবান এক উপহার। কারণ, বিবর্তনবাদের মতো জটিল ঈমানবিরোধী মতবাদ অনেক সাধারণ মুসলমান বুঝে ওঠতে পারেন না। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, সাধারণ মুসলমানদেরকে বিজ্ঞানের মোড়কে বিবর্তনবাদকে হাজির করে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। ফারুক সাহেব এই পুস্তিকা অধ্যয়ন করলে এ ধরণের ধোঁকায় প্রতারিত হওয়ার আর ঝুঁকি থাকবে না। মূল্যবান বইটি রচনার জন্য আমি লেখককে অভিনন্দন ও মোবারকবাদ জানাই। আমি মনে করি, বইটি প্রতিটি মুসলমানের, বিশেষ করে তরুণ আলেম ও ছাত্রদের জন্য অধ্যয়ন করা খুবই জরুরী।