Home রাজনীতি অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিন: বিক্ষোভ সমাবেশে আল্লামা কাসেমী

অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিন: বিক্ষোভ সমাবেশে আল্লামা কাসেমী

জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী বলেছেন, গত বছরের ২৯ ডিসেম্বর রাতে ভোট চুরি হয়েছে, আর ৩০ ডিসেম্বর দিনে ভোট ডাকাতি হয়েছে। এটা গোপন কিছু নয়, দেশের সর্বস্তরের জনতা এটা জানে। যারা ভোট চুরি ও ডাকাতি করে ক্ষমতায় এসেছে, তারা অবৈধ, তাদের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই।

তিনি আরো বলেন, আজকে দ্রব্যমূল্যের যে ঊর্ধ্বগতি, জনগণ এক শাসরুদ্ধকর পরিস্থিতিতে আছে।দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি কেন? কারণ, এই সরকার নির্বাচিত সরকার নয় বলে নৈতিকভাবে দুর্বল। যে কারণে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক, আইন-শৃঙ্খলা, অন্যায়-অপরাধ ও দেশ পরিচালনার কোন কিছুর উপরই তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই। তারা কীভাবে আইন-শৃঙ্খলা, সুবিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করবে? তারা নিজেরাই তো বেআইনী ও অবৈধ।

তিনি বলেন, আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিন। দেশের জনগণকে আর কষ্ট দিবেন না। অন্যথায় এই আন্দোলন থামবে না, বরং অবৈধ সরকারের পতনের লক্ষ্যে এই আন্দোলন দুর্বার গতিতে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়বে।

আজ (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানী ঢাকার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’র এক বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এসব কথা বলেন।

দলের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফীর সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক মাওলানা জয়নুল আবেদীনের সঞ্চালনায় সমাবেশে দলীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরো বক্তব্য রেখেছেন- সহসভাপতি মাওলানা জুনায়েদ আল-হাবীব, যুগ্মমহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, মুফতি মনির হোসাইন কাসেমী, সহকারী মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মতিউর রহমান গাজীপুরী, সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা নাসির উদ্দীন মুনির, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আব্দুল গাফফার ছয়গরী প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, এই সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের বেশি কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না, বরং এই অবৈধ সরকারে থেকে যারা মন্ত্রীত্ব করেছেন, তারাই এই সারকারের শত শত অনিয়ম, অন্যায়ের কথা বলে যাচ্ছেন। এই সরকারের মন্ত্রী রাশেদ খান মেননেন কথা সকলেই শুনেছেন। গত ১০ বছরে বাংলাদেশ থেকে ৯ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এই বাইরে আরো শত শত দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। এই লুটপাট যে কতটা ভয়াবহ মাত্রায় হয়েছে, দেশবাসী ক্যাসিনো কাণ্ডের কিঞ্চিৎ প্রকাশ হওয়াতেই অনুমান করেছে। ব্যবসায়ীদের সাথে সরকারী যোগসাজসে দফায় দফায় দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে জনগণের পকেট কেটে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হচ্ছে।

মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী আরো বলেন, এই সরকার গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতি করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছে। এই সরকার জনগণের সরকার নয়। এই সরকারের হাতে জনগণের জান, মাল, ইজ্জত, আব্রু কোন কিছুর মায়া নেই। তারা শুধু ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতি করে ক্ষ্যন্ত হয়নি, বরং তারা দেশের আইন-শৃঙ্খলা ও বিচার ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করে জনগণের উপর ডাকাতের ভূমিকায় নেমেছে। ক্রসফায়ারের নামে শত শত মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যা করেছে, শত শত মানুষকে গুম করেছে, হাজার হাজার নিরপরাধ মানুষকে জেলে পুরেছে, হামলা-মামলার শিকার করেছে। ন্যায়, ইনসাফ, সাম্য ও অধিকার প্রতিষ্ঠার যে মহান লক্ষ্য নিয়ে দেশ স্বাধীন হয়েছিল, এই সরকার তার সবকিছুই ধ্বংস করেছে। এই জালেম সরকারের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে মুক্ত করা পর্যন্ত সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে থাকতে হবে।

জমিয়ত সহসভাপতি আল্লামা জুনায়েদ আল-হাবীব বলেন, ১৯৭১ সালে ৩০ লাখ মানুষের শাহাদাত ও মা-বোনদের ইজ্জতের বিনিময়ে পাকিস্তানী জুলুম-অত্যাচার ও স্বৈরাচারী শাসনের কবল থেকে দেশ স্বাধীন করা হয়েছে ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতি করে অবৈধ ফ্যাসিবাদি সরকারের চুরি, ডাকাতি ও লুটপাটের জন্য দেশ ছেড়ে দিতে নয়। ক্রসফায়ার, গুম, খুন, হামলা-মামলা ও অর্থনৈতিক লুটপাটের শিকার হওয়ার জন্য নয়। আমাদেরকে এই ভোট চোর ও ভোট ডাকাত অবৈধ শাসককে হটিয়ে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বিজয়ী হওয়া পর্যন্ত সর্বাত্মক আন্দোলনে রাজপথে নেমে আসতে হবে।

তিনি প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ক্ষমতা, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাবের পাহারা ছেড়ে আপনার দলীয় নেতাকর্মীদেরকে নিয়ে রাজপথে নেমে আসুন। তারপর আপনার জনপ্রিয়তা যাছাই করুন।