Home ধর্মীয় প্রশ্ন-উত্তর জানের পরিবর্তে জান সদক্বা করার মান্নত প্রসঙ্গে ইসলামের বিধান

জানের পরিবর্তে জান সদক্বা করার মান্নত প্রসঙ্গে ইসলামের বিধান

- উম্মাহ গ্রাফিক্স।

প্রশ্ন: জানের সদকা দেওয়া/দুর্ঘটনা হতে বেঁচে গেলে জানের কোরবানির মান্নত করা জায়েয কিনা? জায়েয হলে কীভাবে দিতে হবে- শরীয়তের আলোকে বিস্তারিত জানানোর জন্য অনুরোধ করছি।

– জাকিয়া ইসলাম, উত্তরা, ঢাকা।

উত্তর: জানের বদলে (হালাল পশুর) জানের দান, সদকা, কুরবানী করার মান্নত করা নিষেধ নয়। তবে উক্ত মান্নত দ্বারা কুরবানীর উপযুক্ত একটি সম্পূর্ণ জন্তু দান করা ওয়াজিব হবে। কেননা, কুরআন মজিদে আল্লাহ তাআলা হযরত ইবরাহীম আ. কর্তৃক তদীয় পুত্র ইসমাঈলের কুরবানীর পরিবর্তে পশু কুরবানী করার কথা উল্লেখ করে বলেন- وَفَدَيْنَاهُ بِذِبْحٍ عَظِيمٍ “আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু”। (সূরা সাফফাত, ১০৭ আয়াত)।

অনুরূপভাবে বিশিষ্ট তাবিঈ ইকরামা (রাহ.) থেকে বর্ণিত-

عن عكرمة ، أن ابن عباس كان أفتى الذي جعل عليه أن ينحر نفسه ، فأمره بمائة من الإبل قال : فقال ابن عباس بعد ذلك : لو كنت أفتيته بكبش لأجزأه أن يذبح كبشا ، فإن الله قال في كتابه : وفديناه بذبح عظيم

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) ফতওয়া দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তির ব্যাপারে, যে নিজের উপর নিজের জান যবেহ করা আবশ্যক করে নিয়েছে, তাকে (তার জানের পরিবর্তে দিয়াত বিধানের আলোকে) একশত উট যবেহ করার হুকুম করেন।

হযরত ইকরামা (রাহ.) বলেন, এ ঘটনার পরে আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, যদি আমি তাকে একটি দুম্বার ব্যাপারে ফতওয়া দিতাম, তাহলে তার জন্য একটি দুম্বা জবেহ করলেই যথেষ্ট হতো। কেননা, আল্লাহ তাআলা স্বীয় কিতাবে বলেছেন– এবং আমি তার পরিবর্তে দিলাম যবেহ করার জন্যে এক মহান জন্তু (একটি দুম্বার কুরবানীর নিয়ম প্রদান করলাম)। (তাফসিরে ইবন কাসীর- ১২/৪৪, মাকতাবাতু আওলাদিশ শাইখ)।

সুতরাং যে ব্যক্তি উক্ত মান্নত করবে সে একটি গরু কিংবা এক বছর বা তার চেয়ে বেশী বয়সী একটি ছাগল বা বকরী গরীব-মিসকীনদের দান করবেন অথবা তা কোন মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিং-এ দান করবেন। তার জন্য এভাবেই তার মান্নত পুরা করা ওয়াজিব।

উল্লেখ্য মান্নত শরিয়তে নিষেধ নয় বটে; তবে পসন্দনীয়ও নয়। শরিয়ত উদ্বুদ্ধ করে নফল সদকার প্রতি; মান্নতের প্রতি নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে, আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত, তিনি বর্ণনা করেছেন- أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ ﷺ يَوْمًا يَنْهَانَا عَنِ النَّذْرِ وَيَقُولُ ‏‏ إِنَّهُ لاَ يَرُدُّ شَيْئًا وَإِنَّمَا يُسْتَخْرَجُ بِهِ مِنَ الشَّحِيحِ রাসূলুল্লাহ (সা.) একদিন আমাদের মান্নত করতে নিষেধ করেছেন। আর বলেছেন, মান্নত কোনো কিছুকে ফেরাতে পারে না। তবে মান্নতের মাধ্যমে কৃপণ ব্যক্তির সম্পদ বের করা হয়। (মুসলিম শরীফ, হাদীস নং- ৪৩২৫)।

পক্ষান্তরে দান-সদকা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন- بَاكِرُوا بِالصَّدَقَةِ ؛ فَإِنَّ الْبَلَاءَ لَا يَتَخَطَّى الصَّدَقَةَ “তোমরা দানের ব্যাপারে তাড়াতাড়ি করবে। কেননা বিপদাপদ তাকে অতিক্রম করতে পারে না”। (বাইহাকী ৭৩৭৪)।

জবাব লিখেছেন- মুফতী মনির হোসাইন কাসেমী

ফাযেলে- দারুল উলূম দেওবন্দ (দাওরা ও ইফতা), মুহাদ্দিস ও মুফতি- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা এবং উপদেষ্টা সম্পাদক- উম্মাহ ২৪ ডট কম।

চাচাতো বোনকে বিবাহ করা যাবে কিনা?