Home স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় টেস্টিং কম বলেই কি সংক্রমণের সংখ্যা কম?

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ায় টেস্টিং কম বলেই কি সংক্রমণের সংখ্যা কম?

ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে, কিন্তু সে তুলনায় প্রতিবেশী দেশগুলোর সংক্রমণের হার বেশ কম। কারণ টা কী ?

জুন মাস থেকেই ভারতে ভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে – মোটামুটি যে সময়টায় দেশটিতে কঠোর লকডাউন তুলে নেয়া হয়েছিল।

ভারতে জনসংখ্যা ১৩০ কোটি – তাই দেশটিতে মোট সংক্রণমণের সংখ্যাটাও বড়। তাতে বিস্ময়ের কিছু নেই। কিন্তু দেশটিতে সংক্রমণের হার বাড়ছে ব্যাপকভাবে এবং উদ্বেগজনক হারে।

কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে মে এবং জুন মাসে সংক্রমণের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছানোর পর এখন আক্রন্তের সংখ্যা কমে আসছে।

বাংলাদেশে দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় জুন মাসের মাঝামাঝি। জুলাই মাসের শেষ দিক থেকে তা কমে আসছে।

পাকিস্তানে জুন মাসে করোনাভাইরাস সংক্রমণ সর্বোচ্চ স্তরে পৌঁছেছিল। তখন প্রতিদিন ৬ হাজার করে নতুন সংক্রমণ নিশ্চিত হচ্ছিল।

কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে সে সংখ্যা কমে দৈনিক কয়েকশ’তে নেমে এসেছে। সেখানে পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর স্কুলও খুলেছে।

নেপালে সার্বিকভাবে করোনাভাইরাস সংক্রমণের সংখ্যা কম ছিল। তবে তা শীর্ষ চূড়ায় পৌঁছেছিল জুন মাসে। তার পর তা কমছিল, কিন্তু এখন আবার বাড়ছে।

আফগানিস্তানে দৈনিক সংক্রমণ এখন খুবই কমে গেছে। তবে দেশটির সরকারি পরিসংখ্যানের নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে।

শ্রীলংকায়ও সংক্রমণ খুবই কম। এপ্রিল থেকে এখানে সংক্রমণে কয়েক দফায় উর্ধগতি দেখা গেছে কিন্তু সংখ্যার দিক থেকে তা অপেক্ষাকৃত কম।দেশটিতে কড়া কোয়ারেন্টিন ও লকডাউন, এবং কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করা হয়েছে।

ভারত এখন টেস্টিংএর সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়িয়েছে। ২১শে আগস্ট সেখানে একদিনে ১০ লক্ষ টেস্ট করা হয়েছিল।

ভাইরোলজিস্ট ড. রশিদ জামিল বলছেন, জনসংখ্যার অনুপাতে হিসেবে এটা তেমন বড় সংখ্যা নয়, তবে মিলিয়নপ্রতি টেস্টের সংখ্যা্র দিক থেকেও এটা কম।

ভারতে এ পর্যন্ত ৬ কোটি টেস্ট করা হয়েছে। পাকিস্তানে করা হয়েছে ত্রিশ লক্ষ।

কিন্তু এই দেশগুলোতে অন্য অনেক দেশের তুলনায় টেস্টিং করা হয়েছে অনেক কম।

পাকিস্তান ও বাংলাদেশে টেস্টিংএর মাত্রা কমে গেছে। তা না হলে এটা করোনা পজিটিভ কেসের সংখ্যার ওপর একটা প্রভাব ফেলতো।

আরও পড়তে পারেন-

বাংলাদেশে সরকার জুলাই মাসে করোনাভাইরাস টেস্টের জন্য উচ্চ ফি বেঁধে দেয় – আর তার পর দেশটিতে টেস্টের সংখ্যা কমে যায়।

তা ছাড়া দেশটিতে ভুয়া করোনা নেগেটিভ টেস্ট সার্টিফিকেট বিক্রি নিয়ে একটি কেলেংকারিও হয়েছে।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিটি নিশ্চিত করোনাভাইরাস কেসের বিপরীতে ১০ থেকে ৩০টি টেস্টের যে মাত্রা বেঁধে দিয়েছে – দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো সেই মানদন্ডে ভালো করেনি।

তবে নেপাল এবং ভারত এখন সেই মানদন্ডে পৌঁছেছে।

রাশিয়া এবং জাপানের জনসংখ্যা বাংলাদেশের মতই। কিন্তু তারা অনেক ব্যাপকভাবে টেস্ট করছে।

রাশিয়ায় প্রতি ৩৯ জনে একজন এবং জাপানে ২৮ জনে একজন করোনাভাইরাস পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে।

কিন্তু বাংলাদেশ প্রতি পাঁচটি টেস্টে একজন করোনা পজিটিভ পাচ্ছে – যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানদন্ডের নিচে।

দক্ষিণ এশিয়ায় করোনাভাইরাসে মৃত্যুহার কম কেন?

ভারতে করোনাভাইরাসে সর্বমোট মৃত্যুর সংখ্যা এখন পৃথিবীতে তৃতীয় সর্বোচ্চ, কিন্তু আক্রান্তদের গুরুতর অসুস্থ বা মৃত্যু হবার অনুপাত বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় কম।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও মৃত্যুর মোট সংখ্যা বা আনুপাতিক হার পৃথিবীর অন্য অঞ্চলগুলোর চেয়ে কম।

এখানে উপাত্তের নির্ভরযোগ্যতা বা অনেক মৃত্যুর খবর না পাওয়াকে বিবেচনায় নিলেও – এ পার্থক্য চোখে পড়ার মত, বলছেন ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ প্রফেসর কামরান সিদ্দীকি।

তার মতে, এর সবচেয়ে বেশি সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হলো – ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্রের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার জনগোষ্ঠীগুলোতে তরুণতরদের সংখ্যা বেশি। – বিবিসি বাংলা

উম্মাহ২৪ডটকম: এফইউবি

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।