Home ইসলাম সালাতুত তারাবীহ’র রাকাত সংখ্যা: প্রামাণ্য আলোচনা

সালাতুত তারাবীহ’র রাকাত সংখ্যা: প্রামাণ্য আলোচনা

।। ইয়াসীন আব্দুর রউফ ।।

ইসলামের দ্বিতীয় খলীফা হযরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রাযি.) এর খেলাফতকাল থেকেই মুসলিম বিশ্বে সালাতুত তারাবীহ বিশ রাকাত হিসেবে পঠিত হয়ে আসছে, এবং এ ব্যাপারে উম্মাহর ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷ এরপরো আমাদের কিছু দ্বীনিভাই সম্ভবত অজ্ঞতাবশতঃ বিষয়টি মোটেই মানতে চান না; তদুপরি তারা জনসাধারণ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রয়াস পান। তাই দ্বীনি স্বার্থে ও বিভ্রান্তি নিরসনের লক্ষ্যে নিম্নে দলীলভিত্তিক সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।

প্রথমত: রাসূল (সা.)এর আমল দ্বারা প্রমাণ। যথা-

عن ابن عباس رضي الله عنه قال:  كان رسول الله صلي الله عليه وسلم يصلي في رمضان عشرين والوتر .

অর্থাৎ- হযরত ইবনে আব্বাস (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, রাসূল সা. রমাজানুল মুবারকে বিশ রাকাত তারাবীহ এবং বিতর পড়তেন৷ দেখুন- মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, হাদীস নং-৭৭৭৪, তাবরানী, হাদীস নং- ১২১০২।

হাদীসটি সনদগত বিচারে দুর্বল হলেও উম্মত যখন হাদীসটি ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে তখন এর দুর্বলতা কেটে গেছে এবং মুতাওয়াতিরের পর্যায়ভুক্ত হয়ে গেছে৷ যেমন আল্লামা বদরুদ্দীন যারকাশী (রাহ.) বলেন-

قال العلامة بدر الدين الزركشي في النكت علي مقدمة.ابن الصلاح مانصه: “إن الحديث الضعيف إذا تلقته الأمة بالقبول، عمل به علي الصحيح حتي ينزل منزلة المتواتر”.

অর্থ- উম্মত যখন যঈফ হাদীসকে সর্বোতভাবে গ্রহণ করে, তখন তা সহীহের মত আমলযোগ্য হয় এমনকি মুতাওয়াতিরের স্তরে উন্নীত হয়ে যায়৷ (আন নুকাত- ১/৩৯০)।

দ্বিতীয়তঃ সাহাবায়ে কেরামের ইজমা এবং উমর (রাযি.) এর যুগ থেকে আজ অদ্যবধি সাহাবা ও উম্মতের আমল; তা হল, হযরত উমর (রাযি.)এর খেলাফতকালে সাহাবায়ে কেরাম (রাযি.) নির্দ্বিধায় ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন যে, তারাবীহ নামায বিশ রাকাত৷ যেমন বর্ণিত হয়েছে –

عن السائب بن يزيد قال: كاموا يقومون علي عهد عمر بن الخطاب رضي الله بعشرين ركعة .

অর্থ- হযরত সায়েব ইবনে ইয়াযীদ থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, উমর (রাযি.)এর খেলাফতকালে সাহাবায়ে কেরাম (রাযি.) রমযান মাসে বিশ রাকা’ত (তারাবীহ) পড়তেন। দেখুন- সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী- ২/৪৯৬, আল্লামা আইনী (রাহ.) বলেন, হাদীসটি সহীহ।

و عن أبي بن كعب رضي الله عنه أن عمر الخطاب رضي الله عنه أمر أبيا أن يصلي بالناس في رمضان، فقال:إن الناس يصومون النهار،ولا يحسنون أن يقرؤوا، فلو قرأت القرآن عليهم بالليل! فقال: يا أمير المؤمنين! هذا شيئ لم يكن! فقال: قد علمت ولكنه أحسن، فصلي بهم عشرين ركعة.

অর্থ- হযরত উবাই ইবনে কা’ব (রাযি.) হতে বর্ণিত,যে উমর (রাযি.) তাঁকে রমযানে তারাবীহর ইমামতি করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং বলেছেন, লোকেরা তো দিনভর সিয়াম-সাধনা করে, কিন্তু তারা তো উত্তমরূপে কুরআন পাঠ করতে পারে না। আপনি যদি রাত্রে তাদেরকে নিয়ে নামাযে কুরআন তেলাওয়াত করতেন!  তখন উবাই (রাযি.) বললেন, হে আমীরুল মু’মিনীন, এমন বিধান তো পূর্বে ছিল না!, উমর (রাযি.) বললেন, হ্যাঁ, সেটা আমি জানি, কিন্তু এই পদ্ধতিটি অধিক সুন্দর৷ পরে উবাই (রাযি.) তাদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত তারাবীহ আদায়  করতেন৷ দেখুন- আহাদীসে মুখতারাহ লিল মাকদিসী, হাদীস নং- ১১৬১, এবং হাদীসটি হাসান।

وعن العرباض بن سارية رضي الله عنه قال، قال رسول الله صلي الله عليه وسلم،وفيه: وإنه من يعش منكم بعدي فسيري اختلافًا كثيراً، فعليكم بسنتي وسنة الخلفاء الراشدين، عضّوا عليها بالنواجذ .

অর্থ- হযরত ইরবায ইবনে সারিয়া (রাযি.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে জীবিত থাকবে,তারা (উম্মতের মাঝে দ্বীনি বিষয়ে) অনেক মতানৈক্য দেখতে পাবে, তখন তোমাদের কর্তব্য হল, আমার আদর্শ ও খোলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শ অনুযায়ী চলা। সুতরাং দৃঢ়প্রত্যয়ে তোমরা তা আঁকড়ে ধর৷ দেখুন- সুনানে কুবরা লিল বায়হাকী, হাদীস নং- ২০৩৩৮, এবং হাদীসটি মুতাওয়াতির পর্যায়ের; এ ব্যাপারে কারো সংশয় নেই।

স্মর্তব্য যে,উমর (রাযি.) ছিলেন ইসলামী খেলাফতের দ্বিতীয় খলীফা, তাই এখানে খলীফার সুন্নত ও ইজমাউল উম্মত একত্রে দুটি প্রমাণ বিদ্যমান ৷ আর রাসূল (সা.) খলীফার সুন্নাত কে আঁকড়ে ধরার নির্দেশ দিয়েছেন। এতদসত্ত্বেও কেউ যদি উমর (রাযি.)এর সুন্নাতের অমান্য করে তাহলে সে রাসূল (সা.)এর হাদীসের অমান্যকারী বলে বিবেচিত হবে। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-ই তো খলীফার আদর্শকে আঁকড়ে ধরার আদেশ করেছেন।

রাকাত মতাবলম্বী ভাইদের দলীল তার জবাব

حدثني إسماعيل، قال حدثني مالك عن سعيد المقبري عن أبي سلمة ابن عبد الرحمن، أنه سأل عائشة رضي الله عنها؛ كيف كانت صلاة رسول الله صلي الله عليه وسلم في رمضان؟ فقالت: ما كان يزيد في رمضان ولا في غيره علي إحدي عشرة، يصلي أربعاً فلا تسل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي أربعاً فلا تسل عن حسنهن وطولهن، ثم يصلي ثلاثا، فقلت يا رسول الله! أتنام قبل أن توتر؟ فقال: يا عائشة! إن عيني تنامان ولاينام قلبي-  صحيح البخاري، باب قيام النبي صلي الله عليه وسلم بالليل في رمضان وغيره .

হাদীসের অর্থ- হযরত আবু সালামা ইবনে আব্দুর রহমান হতে বর্ণিত। তিনি আয়েশা (রাযি.)এর কাছে জানতে চাইলেন, রমযানে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের ধরণ কীরূপ ছিল? তখন আয়েশা (রাযি.) বললেন, তিনি রমযানে কিংবা রমযানের বাহিরে এগারো রাকাতের অধিক নামায পড়তেন না৷ প্রথমে চার রাকাত পড়তেন, এর সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে আমি আর তোমাকে কী বলব! এরপর আবার চার রাকাত পড়তেন, যার সৌন্দর্য ও দীর্ঘতা সম্পর্কে তোমাকে আর কিছু বলার অবকাশ নেই৷ সবশেষে তিন রাকাত (বিতর) পড়তেন৷

আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! বিতর না পড়েই আপনি ঘুমিয়ে যাবেন? তখন রাসূল (সা.) বললেন- হে আয়েশা! আমার চোখ দুটি শুধু ঘুমায়, কিন্তু আমার হৃদয় ঘুমায় না৷ দেখুন- সহীহ বুখারী,দারু ইবনে হাযম, হাদীস নং- ১১৪৭।

প্রিয় পাঠক! দেখুন,  উক্ত হাদীসের ভাষ্য সুস্পষ্ট যে, এ হাদীসে রাসুল সা. এর তাহাজ্জুদের বিবরণ দেয়া হয়েছে, তারাবীহর বিবরণ নয়৷ কারণ, উক্ত হাদীসে তো এমন নামায আলোচিত হয়েছ যে নামায রমযানুল মোবারকে এবং রমযানের বাহিরেও পড়া হয়, আর রমযানেও রমযানের বাহিরে (রাত্রে) যে নামায পড়া হয় তা হচ্ছে তাহাজ্জুদ, তারাবীহ নয়, সুতরাং সালাতুত তারাবীহর রাকা’ত সংখ্যার ক্ষেত্রে এমন হাদীস দ্বারা দলীল প্রদান করা কতটুকু যৌক্তিক, তা ভেবে দেখবার দায়িত্ব বিজ্ঞ পাঠকের হাতে৷ সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হল যে, বিতর এক রাকাত নয়; তিন রাকাত।

আবার কেউ বলে থাকেন তারাবীহ ভিন্ন কিছু নয়, বরং সারা বছরে যেটা তাহাজ্জুদ হিসেবে পড়া হয়, রমাযানুল মুবারকে সেটাই তারাবীহ হয়ে যায়৷ কিন্তু পূর্বে উল্লেখিত যে হাদীসে তারাবীহর জামা’তের কথা আলোচিত হয়েছে, তাতে প্রতীয়মান হয় যে, এটি ভিন্ন নামায, নইলে ওমর (রাযি.)এর নতুন করে জামা’তবন্দী করার কি তাৎপর্য রইলো? আরেকটি হাদীস লক্ষ্য করুন-

ﺣﺪﺛﻨﺎ ﻋﺒﺪ اﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻳﻮﺳﻒ، ﻗﺎﻝ: ﺃﺧﺒﺮﻧﺎ ﻣﺎﻟﻚ، ﻋﻦ اﺑﻦ ﺷﻬﺎﺏ، ﻋﻦ ﻋﺮﻭﺓ ﺑﻦ اﻟﺰﺑﻴﺮ، ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺃﻡ اﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺭﺿﻲ اﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ: ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ اﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺻﻠﻰ ﺫاﺕ ﻟﻴﻠﺔ ﻓﻲ اﻟﻤﺴﺠﺪ، ﻓﺼﻠﻰ ﺑﺼﻼﺗﻪ ﻧﺎﺱ، ﺛﻢ ﺻﻠﻰ ﻣﻦ اﻟﻘﺎﺑﻠﺔ، ﻓﻜﺜﺮ اﻟﻨﺎﺱ، ﺛﻢ اﺟﺘﻤﻌﻮا ﻣﻦ اﻟﻠﻴﻠﺔ اﻟﺜﺎﻟﺜﺔ ﺃﻭ اﻟﺮاﺑﻌﺔ، ﻓﻠﻢ ﻳﺨﺮﺝ ﺇﻟﻴﻬﻢ ﺭﺳﻮﻝ اﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ، ﻓﻠﻤﺎ ﺃﺻﺒﺢ ﻗﺎﻝ: «ﻗﺪ ﺭﺃﻳﺖ اﻟﺬﻱ ﺻﻨﻌﺘﻢ ﻭﻟﻢ ﻳﻤﻨﻌﻨﻲ ﻣﻦ اﻟﺨﺮﻭﺝ ﺇﻟﻴﻜﻢ ﺇﻻ ﺃﻧﻲ ﺧﺸﻴﺖ ﺃﻥ ﺗﻔﺮﺽ ﻋﻠﻴﻜﻢ ﻭﺫﻟﻚ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ» صحيح البخاري، باب تحريض النبي صلي الله عليه وسلم علي قيام الليل والنوافل من غير إيجاب .

হাদীসের অর্থ- উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রাযি.) হতে বর্ণিত, যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন এক রাতে মসজিদে নববীতে নামায আদায় করলেন৷ তখন একদল সাহাবায়ে কেরামও তাঁর অনুসরণ করে নামায পড়লেন৷ এর পরদিনও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায পড়লেন। তখন সাহাবায়ে কেরামের সংখ্যা আরো বেড়ে গেল৷ অনুরূপভাবে এরপর তৃতীয়-চতুর্থ রাতেও তাঁরা সমবেত হলেন। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেদিন আর তাঁদের মাঝে তাশরীফ নিলেন না।

যখন সকাল হল, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবায়ে কেরামকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি তোমাদের গত রাতসমূহের কার্যকলাপ প্রত্যক্ষ করেছি। কিন্তু গতরাতে তোমাদের মাঝে না আসার কারণ হল, আমার আশংকা হচ্ছিল যে এই নামায আবার তোমাদের উপর ফরয হয়ে যায় কি না৷ আর এটা ছিল রমাযানুল মোবারকের ঘটনা৷ দেখুন- সহীহুল বুখারী, হাদীস নং- ১১২৯।

প্রিয় পাঠক! দেখুন, এই হাদীসের ভাষ্যদ্বারা প্রতীয়মান হচ্ছে যে, সালাতুত তারাবীহ এক স্বতন্ত্র নামায; তাহাজ্জুদ নয়৷ কারণ, সাহাবায়ে কেরাম তো নবীজী (সা.)এর সারা বছরের রাতের নামায দেখেছেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে তাঁরা জামাতবদ্ধ হননি৷ বরং তাঁরা রমাযানে রাসূলের নতুন ইবাদাত প্রত্যক্ষ করে তাঁর সাথে জামাতবদ্ধ হয়েছেন৷ আর এটা যে রমাযানুল মুবারকের ঘটনা, তা তো হাদীসের শেষাংশে সুস্পষ্ট৷ এরপর রাসূল (সা.) নিয়মিত পড়েননি; যাতে এই নামায উম্মতের উপর ওয়াজিব না হয়ে যায়৷ পক্ষান্তরে তাহাজ্জুদ নামায তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর ওয়াজিব ছিল৷ তাহাজ্জুদ নামায তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনো ছাড়েননি৷ তাই এই দুই নামাযের ভিন্নতা বুঝতে তো আর কারো সংশয় থাকার কথা নয়।

সাহাবায়ে কেরাম এবং যুগ পরম্পরায় মুসলিম উম্মাহর আমল

এছাড়া সুদীর্ঘ চৌদ্দশত বছর যাবত ধারা পরম্পরায় উম্মতের মাঝে সালাতুত তারাবীহ বিশ রাকাতই পঠিত হয়ে আসছে৷ ইসলামের সবচেয়ে তীর্থস্থান, পবিত্রভূমি হারামাইন শারীফাইন, তথা- মক্কা মুকাররমা ও মাদীনা মুনাওয়ারাতেও এখনো এই আমলের ধারা বিদ্যমান৷ নিরবচ্ছিন্নভাবে সালাতুত তারাবীহ বিশ রাকা’ত পঠিত হচ্ছে৷ এবং তিন রাকা’ত বিতিরসহ মোট তেইশ রাকা’তের আমল সেখানে এখনো চলছে। মুহাদ্দিসীনে কেরামের পরিভাষায় এই যুগ পরম্পরায় বর্ণিত আমলকে বলা হয় আমালে মুতাওয়াতির বা আমালে মুতাওয়ারাস৷ যে হাদীস মৌখিক বর্ণনাসূত্রের সাথে সাথে এই আমালে মুতাওয়াতির বা আমালে মুতাওয়ারাসের সূত্রে বর্ণিত হয়, সে হাদীসের উপর আমলযোগ্যতা ও অকাট্যতা শুধু মৌখিক সূত্রে বর্ণিত হাদীসের চেয়ে বহুগুণে বেড়ে যায়৷ (বিশ রাকা’ত তারাবীহর মৌখিক হাদীস পূর্বে বর্ণিত হয়েছে৷) এমন আমলগুলো শিআ’রে ইসলাম বা ইসলামের নিদর্শনে পরিণত হয়৷ এমন আমল অস্বীকারকারীর ঈমান আশংকাজনক৷ যেমন- মিসওয়াক।

মিসওয়াকের আমলের কথা মৌখিক হাদীসের পাশাপাশি আমালে মুতাওয়ারাসের সূত্রে বর্ণিত৷ তাই মিসওয়াকের আমল শিআ’রে ইসলাম হিসেবে বিবেচ্য৷ এখন যদিও মিসওয়াক করা হচ্ছে সুন্নাত, কিন্তু অস্বীকারকারীর ঈমান আশংকাজনক৷ সালাতুত তারাবীহও এমন একটি শিআ’রে ইসলাম, যার ঐতিহ্য উম্মাতে মুসলিমাহ অবিচ্ছিন্ন ধারায় আজও পালন করে আসছেন৷ আর কোনো বিষয়ে যদি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দু’টি বাহ্যত পরস্পর বিরোধী হাদীস পাওয়া যায়, এবং দেখা যায় যে, একটি হাদীসের উপর সাহাবায়ে কেরামের আমল প্রতিষ্ঠিত; অপরটির উপর নয়, তাহলে সাহাবায়ে কেরামের আমলকৃত হাদীস অনুযায়ী আমল করাই হবে উম্মতের কর্তব্য৷ কারণ, রাসূলের হাদীসের ব্যাপারে তাঁরাই সর্বাধিক জ্ঞাত৷ তাঁরা রাসূলের দরবারে থেকে হাদীসের প্রেক্ষাপট দেখেছেন৷ সুতরাং কোন হাদীস পালনীয়, তা তাঁরাই ভালো জানেন৷ আবার সাহাবায়ে কেরামের মাঝেই যদি দু’টি মত থাকে, তাহলে বড় বড় সাহাবী যেমন-  আবু বকর (রাযি.), ওমর (রাযি.) অনুরূপ সাহাবীদের মত ও পথই হবে অগ্রগণ্য৷ কারণ, তাঁরা তো রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাহচর্য বেশি লাভ করেছেন৷ –বিস্তারিত দেখুন: আল্লামা হায়দার হাসান খান টুংকী (রাহ.) রচিত “আমালে মুতাওয়ারাসের প্রমাণ্যতা” শীর্ষক পুস্তিকাটি, যা আল্লামা আবদুর রশীদ নূমানী (রাহ.) কৃত আল ইমামু ইবনু মাজাহ ওয়া কিতাবুহুস সুনান গ্রন্থের ৮৬-৯০ পৃষ্ঠায় সংযোজিত৷ আরো জানতে উক্ত গ্রন্থের ৮৪-৯০ এর আলোচনা দ্রষ্টব্য। ইমাম আবু দাউদ (রাহ.) লিখেছেন-

قال أبو داود: إذا تنازع الخبران عن النبي صلي الله عليه وسلم،ينظر بما أخذ به أصحابه.

অর্থ- যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত দু’টি হাদীস (বাহ্যত) পরস্পর বিরোধপূর্ণ হয়, তখন দেখতে হবে সাহাবায়ে কেরাম কোনটির উপর আমল করেছেন৷ দেখুন- সুনানে আবু দাউদ, পৃষ্ঠা: ২৫৬,হিন্দুস্তানী মুদ্রণ৷ হাদীস নং- ১৮৫১, মুহরিম শিকারের গোস্ত খাওয়া সম্পর্কিত পরিচ্ছেদ। ইমাম আবু বকর জাসসাস (রাহ.) স্বীয় আহকামুল কুরআন গ্রন্থে লিখেছেন-

متي روي عن النبي عليه السلام خبران متضادان، وظهر عمل السلف بأحدهما، كان الذي ظهر عمل السلف به أولي بالإثبات..

অর্থ- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যখন  দু’টি বিপরীতমুখী বর্ণনা পাওয়া যায়, এবং একটির উপর পূর্বসূরীদের আমল দেখা যায়, তাহলে যেটির উপর পূর্বসূরীদের আমল, সেটিই অধিক সুসংহত৷ (আহকামুল কুরআন- ১/১৮)। আল্লামা ইবনে আবদুল বার মালেকী (রাহ.) ইস্তিযকার’ গ্রন্থে লিখেছেন-

ﺭﻭﻯ ﻣﺤﻤﺪ ﺑﻦ اﻟﺤﺴﻦ ﺃﻧﻪ ﺳﻤﻊ ﻣﺎﻟﻜﺎ ﻳﻘﻮﻝ ﺇﺫا ﺟﺎء ﻋﻦ اﻟﻨﺒﻲ – ﻋﻠﻴﻪ اﻟﺴﻼﻡ – ﺣﺪﻳﺜﺎﻥ ﻣﺨﺘﻠﻔﺎﻥ ﻭﺑﻠﻐﻨﺎ ﺃﻥ ﺃﺑﺎ ﺑﻜﺮ ﻭﻋﻤﺮ ﻋﻤﻼ ﺑﺄﺣﺪ اﻟﺤﺪﻳﺜﻴﻦ ﻭﺗﺮﻛﺎ اﻵﺧﺮ ﻛﺎﻥ ﻓﻲ ﺫﻟﻚ ﺩﻻﻟﺔ ﻋﻠﻰ ﺃﻥ اﻟﺤﻖ ﻓﻴﻤﺎ ﻋﻤﻼ ﺑﻪ، كذا في الاستذار لابن عبد البر، باب ترك الوضوء مما مست النار.

অর্থ- ইমাম মুহাম্মাদ ইবনুল হাসান (রাহ.) বর্ণনা করেছেন যে, তিনি ইমাম মালেক রহ.কে বলতে শুনেছেন: যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে দু‘টি (বাহ্যত) বিরোধপূর্ণ হাদীসের বর্ণনা আসে, এবং আমাদের নিকট এটি পৌঁছে যে, আবু বকর (রাযি.) ওমর (রাযি.) দু’টির একটির উপর আমল করেছেন, এবং অপরটি ছেড়ে দিয়েছেন৷ তাহলে সেটি এবিষয়েরই প্রমাণ বহন করবে যে: তাঁদের আমলকৃত হাদীসটিই যথার্থ৷ দেখুন- আল ইস্তিযকার লিবনি আবদিল বার- ১/১৭৫।

ইবনে হাজার আসকালানী (রাহ.) ফাতহুল বারী’তে লিখেছেন-

ﻭﺣﻜﻰ اﻟﺒﻴﻬﻘﻲ ﻋﻦ ﻋﺜﻤﺎﻥ اﻟﺪاﺭﻣﻲ ﺃﻧﻪ ﻗﺎﻝ ﻟﻤﺎ اﺧﺘﻠﻔﺖ ﺃﺣﺎﺩﻳﺚ اﻟﺒﺎﺏ ﻭﻟﻢ ﻳﺘﺒﻴﻦ اﻟﺮاﺟﺢ ﻣﻨﻬﺎ ﻧﻈﺮﻧﺎ ﺇﻟﻰ ﻣﺎ ﻋﻤﻞ ﺑﻪ اﻟﺨﻠﻔﺎء اﻟﺮاﺷﺪﻭﻥ ﺑﻌﺪ اﻟﻨﺒﻲ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﺮﺟﺤﻨﺎ ﺑﻪ ﺃﺣﺪ اﻟﺠﺎﻧﺒﻴﻦ. فتح الباري، باب من لم يتوضأ من لحم الشاة. مكتبة الصفا.

ইমাম বায়হাকী (রাহ.) ইমাম দারেমী (রাহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বলেছেন: যখন কোন অধ্যায়ের হাদীসগুলো পরস্পর বিরোধপূর্ণ দেখা যাবে, এবং কোনটি প্রাধান্য পাবে তা নির্ণয় করা সম্ভব না হয়, তাহলে আমরা দেখব যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের (ওফাতের) পরে খোলাফায়ে রাশেদীন কোনটির উপর আমল করেছেন৷ সে অনুযায়ী একটিকে অপরটির উপর প্রাধান্য দেব৷ (ফাতহুল বারী, ১/৩৯১)।

এসব উক্তিমালার সারকথা হচ্ছে, আমালে মুতাওয়াস – বা পূর্বসূরীদের অব্যাহত ধারা পরম্পরায় বর্ণিত আমল – অন্যতম দলীল। এবং এটি আমলের সুসংহত পন্থা৷ আর বিশ রাকা’ত সালাতুত তারাবীহ মৌখিক সূত্রের পাশাপাশি আমালে মুতাওয়ারাস এর সূত্রে গ্রণ্থিত৷ সুতরাং সালাতুত তারাবীহ বিশ রাকাত হওয়াই সুসংহত।

পক্ষান্তরে আট রাকা’ত সালাতুত তারাবীহের আমালে মুতাওয়ারাস ইতিহাস দেখাতে পারবে না, বরং সেটা আমলের কর্মপন্থায় বর্তমান সময়েরই একটি নতুন সংযোজন৷ যার বয়স খুব বেশি হবে না৷

যে সকল মহামনীষী তারাবীহ ২০ রাকাতপথের পথিক ছিলেন

খলীফাতুল মুসলিমীন হযরত উমর রাযি.। হযরত উসমান রাযি.। হযরত আলী রাযি.। হযরত উবাই ইবনে কা’ব রা.৷ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ (রাযি.)। মোটকথা- উমর (রাযি.)এর খেলাফতকালে যে সকল সাহাবায়ে কেরাম জীবিত ছিলেন তাঁদের প্রত্যেকেরই অভিমত হচ্ছে তারাবীহ বিশ রাকাত৷ কারণ, এ ব্যাপারে তখন সকল সাহাবায়ে কেরামের ইজমা-ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে৷

মাযহাব মতে সালাতুত তারাবীহ ২০ রাকা

ইমাম চতুষ্ট তথা চার মাযহাবের ইমামগণ; তাঁরা সকলেই বিশরাকা’ত তারাবীহ আদায় করতেন৷ তারাবীহ প্রসঙ্গে তাঁদের অভিমত নিজ নিজ মাযহাবের নির্ভরযোগ্য কিতাব থেকে সংক্ষিপ্তাকারে নিম্নে উল্লেখ করছি।

ইমামে যম আবু হানীফা (রাহ.)এর অভিমত:

.  اﻟﻔﺼﻞ اﻷﻭﻝ ﻓﻲ ﻋﺪﺩ اﻟﺮﻛﻌﺎﺕ، ﻓﺈﻧﻬﺎ ﻋﺸﺮﻭﻥ ﺭﻛﻌﺔ ﺳﻮﻯ اﻟﻮﺗﺮ ﻋﻨﺪﻧﺎ.

অর্থ- প্রথম পরিচ্ছেদ, তারাবীহর রাকা’ত সংখ্যা সংক্রান্ত৷ আমাদের (হানাফীদের) নিকট বিতর ছাড়াই তারাবীহ বিশ রাকা’ত৷ (আল মাবসূত, শামসুল আইম্মাহ সারাখসী হানাফী (৪৮৩ হি.) কৃত- ২/১৪৪)।

ইমাম মালেক (রাহ.)এর অভিমত:

ﻭاﺧﺘﻠﻔﻮا ﻓﻲ اﻟﻤﺨﺘﺎﺭ ﻣﻦ ﻋﺪﺩ اﻟﺮﻛﻌﺎﺕ اﻟﺘﻲ ﻳﻘﻮﻡ ﺑﻬﺎ اﻟﻨﺎﺱ ﻓﻲ ﺭﻣﻀﺎﻥ: ﻓﺎﺧﺘﺎﺭ ﻣﺎﻟﻚ ﻓﻲ ﺃﺣﺪ ﻗﻮﻟﻴﻪ، ﻭﺃﺑﻮ ﺣﻨﻴﻔﺔ، ﻭاﻟﺸﺎﻓﻌﻲ، ﻭﺃﺣﻤﺪ، ﻭﺩاﻭﺩ: اﻟﻘﻴﺎﻡ ﺑﻌﺸﺮﻳﻦ ﺭﻛﻌﺔ ﺳﻮﻯ اﻟﻮﺗﺮ، ﻭﺫﻛﺮ اﺑﻦ اﻟﻘﺎﺳﻢ ﻋﻦ ﻣﺎﻟﻚ ﺃﻧﻪ ﻛﺎﻥ ﻳﺴﺘﺤﺴﻦ ﺳﺘﺎ ﻭﺛﻼﺛﻴﻦ ﺭﻛﻌﺔ ﻭاﻟﻮﺗﺮ ﺛﻼﺙ.

অর্থ- রমাযানুল মোবারকে মানুষ কত রাকা’ত তারাবীহ পড়বে এর পছন্দনীয় সংখ্যার ব্যাপারে আইম্মায়ে কেরামের মতভেদ রয়েছে৷ ইমাম মালেক (রাহ.) এর একটি মত, ইমাম আবু হানীফা, ইমাম শাফেঈ, ইমাম আহমদ, ও দাউদ (রাহ.) প্রমুখের পছন্দনীয় মত হচ্ছে: বিশ রাকা’ত পড়া৷ ইবনুল কাসিম ইমাম মালেকের এক সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, তিনি বিতির ছাড়াই ছত্রিশ রাকা’ত (তারাবীহ) পছন্দ করেন৷ এবং বিতর তিন রাকা’ত৷ দেখুন- বিদায়াতুল মুজতাহিদ ওয়া নিহায়াতুল মুকতাসিদ, আল্লামা ইবনে রুশদ হাফীদ মালেকী [৫৯৫ হি.] কৃত- ১/২১৯।

ইমাম শাফেঈ (রাহ.)এর অভিমত:

ﻗﺎﻝ: ﻓﺄﻣﺎ ﻗﻴﺎﻡ ﺷﻬﺮ ﺭﻣﻀﺎﻥ ﻓﺼﻼﺓ اﻟﻤﻨﻔﺮﺩ ﺃﺣﺐ ﺇﻟﻲ ﻣﻨﻪ ﻭﺭﺃﻳﺘﻬﻢ ﺑﺎﻟﻤﺪﻳﻨﺔ ﻳﻘﻮﻣﻮﻥ ﺑﺘﺴﻊ ﻭﺛﻼﺛﻴﻦ ﻭﺃﺣﺐ ﺇﻟﻲ ﻋﺸﺮﻭﻥ؛ ﻷﻧﻪ ﺭﻭﻱ ﻋﻦ ﻋﻤﺮ، ﻭﻛﺬﻟﻚ ﻳﻘﻮﻣﻮﻥ ﺑﻤﻜﺔ ﻭﻳﻮﺗﺮﻭﻥ ﺑﺜﻼﺙ.

অর্থ- ইমাম শাফেয়ী (রাহ.) বলেন, রমাযানের রাত্রে ইবাদাতের ক্ষেত্রে একাকি নামায পড়াই আমার নিকট পছন্দনীয়৷ আমি মদীনাবাসীকে (বিতর সহ) উনচল্লিশ রাকা’ত পড়তে দেখেছি৷ কিন্তু আমার কাছে বিশ রাকা’ত অধিক পছন্দনীয়৷ কারণ, এটিই ওমর (রাযি.) থেকে বর্ণিত৷ অনুরূপ আমল মক্কাবাসীদের৷ এবং তারা তিন রাকাত বিতর পড়ে থাকেন৷ দেখুন- মুখতাসারুল মুযানী৷ ইমাম মুযানী শাফেয়ী (২৬৪ হি.) কৃত৷ পৃষ্ঠা- ১১৪।

ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রাহ.)এর অভিমত:

اﻟﻀﺮﺏ اﻟﺮاﺑﻊ: ﻣﺎ ﺗﺴﻦ ﻟﻪ اﻟﺠﻤﺎﻋﺔ ﻭﻫﻮ ﺛﻼﺛﺔ ﺃﻧﻮاﻉ: أﺣﺪﻫﺎ: اﻟﺘﺮاﻭﻳﺢ ﻭﻫﻲ ﻋﺸﺮﻭﻥ ﺭﻛﻌﺔ ﺑﻌﺪ اﻟﻌﺸﺎء ﻓﻲ رمضان.

অর্থ- চতুর্থ প্রকার হল এমন নামায, যা জামা’তে আদায় করা সুন্নাত৷ তা তিন প্রকার৷ এর প্রথমেই হল বিশ রাকা’ত বিশিষ্ট তারাবীহ৷ যা রমাযানুল মোবারকে ইশার পরে পড়া হয়৷ দেখুন- উমদাতুল ফিকহ, আল্লামা ইবনে কুদামা হাম্বলী [৬২০ হি.] কৃত, পৃষ্ঠা- ২৮।

তাহলে আমরা দেখতে পেলাম যে, ইমাম চতুষ্টয়ের সর্বসম্মত অভিমত হল- তারাবীহ বিশ রাকাত৷ শুধু ইমাম মালেক (রাহ.) ছত্রিশ রাকাত পছন্দ করেছেন৷ তবে বিশ রাকাতের উপরও তাঁর একটি মত পাওয়া যায়৷ পক্ষান্তরে আট রাকাতের মত চার ইমামের কারো কাছ থেকেই পাওয়া যায়নি৷

তাই আমরা এখানে বিশ রাকা’তের দলীল হিসেবে পেলাম, এক- রাসূলের আমল৷ দুই- খলীফাতুল মুসলিমীনের সিদ্ধান্ত, আর স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খলীফার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন৷ তিন- সাহাবায়ে কেরামের ইজমা’৷ আর ইজমা শরীয়তের একটি দলীল৷ চার- পূর্বসূরীদের আমল-(আমালে মুতাওয়ারাস)৷ পাঁচ- চার মাযহাবের ইমামগণের ঐকমত্য৷ আর কোনো বিষয়ে চার মাযহাবের ইমামগণ একমত হলে সেটি সন্দেহাতীত পালনীয় আমল বলে প্রমাণিত হয়৷ এমন বিষয়ে উম্মতের কোনরূপ দ্বিধা-সংকোচ থাকার অবকাশ থাকে না৷ সুতরাং দলীল ও অনুস্মরণীয় হিসেবে এতটুকুই যথেষ্ট৷

লেখক তরুণ আলেম-দ্বীন, শিক্ষক- জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা, ঢাকা