।। শায়খ আহমাদুল্লাহ ।।
সালাতের সময় ডানে জান্নাত, বামে জাহান্নাম এবং পেছনে আজরাইল; এসব কি হাদিসের ভিত্তিতে বলা হয়?
না, এগুলো হাদিসের ভিত্তিতে বলা হয় বলে আমার মনে হয় না। এগুলো আমরা অনেক আলেমদের কাছ থেকে অনেক মৌলভি সাহেবদের থেকে শিখেছি বা শুনেছি। তারা এগুলো বলেছিলেন, হয়েতো নামাযীদের মনোযোগ ধরে রাখান জন্যে। এটা যাস্ট নামাযীদের মনোযোগ ধরে রাখতে সৎ উদ্দেশ্যে একটা বুদ্ধি বের করা।
কিন্তু আমি যদি এ বিশ্বাস রাখি যে, আমার ডানে জান্নাত আছে, বামে জাহান্নাম আছে, তাহলে সে ক্ষেত্রে সেটা সঠিক হবে না। এটা ভুল হবে, এটা বেদাতের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
অতএব, ঐ উক্তিটা আমরা সচেতনরা মনে রাখব না। আপনার বামে এমন কোন ব্যক্তি দাঁড়িয়ে আছেন যে, লোকটা অনেক বড় আলেম, আমলদার মানুষ। আপনি নিয়ত করলেন যে, আমার বামে জাহান্নাম আছে। চিন্তা করুন, ব্যাপারটা কেমন হলো! আবার আপনার ডানে দেখা গেলো একটা বড় চোর অথবা একটা বড় দুর্নিতিভাজ দাঁড়িয়ে আছে। আপনি নিয়ত করলেন যে, আমার ডানে জান্নাত আছে। তাহলে ব্যাপারটা পুরোই উল্টা হয়ে গেলো না!
এজন্য নামাজে দাঁড়ালে ডানে জান্নাত বামে জাহান্নাম এবং পেছনে মালাকুল মউত থাকার ভাবনা করার এরকম কোন কথা হাদিসে বলা হয়নি। অথবা এমন ভাবনা মনে রাখতে হবে, এরকম কোন কথার নির্দেশ নেই। আপনাকে নামাজের মধ্যে মনে রাখতে হবে, আপনি কি পড়ছেন, আল্লাহর সাথে কথা বলছেন, আর আল্লাহকেই শুধু স্মরণ রাখবেন।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
আল্লাহ বলেছেন, তোমরা আমার স্মরণের জন্য নামায পড়। স্মরণ করব আল্লাহকে, মালাকুল মউতকে স্মরণ করার জন্য নামায নয়। মালাকুল মউতকে স্মরণ হলে ভালো। কিন্তু মালাকুল মউতকে স্মরণ করার জন্য নামায আসেনি।
এজন্য সালাতে শুধুমাত্র মনে থাকবে আল্লাহ রাব্বুল আল-আমীনকে। যত কথা বলতেছেন, প্রশংসা করতেছেন, দুয়া পড়তেছেন, আরো ছানা-সিফাত যা পড়তেছেন সবগুলো আল্লাহকে বলতেছেন। অতএব, স্মরণ হবে শুধুমাত্র আল্লাহর। সুতরাং ডানে জান্নাত, বামে জাহান্নাম এসমস্ত মনে করার কোন দরকার নেই। এগুলো হয়তো এক সময় হুজুরগণ এই জন্য বলেছেন যে, নামাযে মনোযোগী হওয়ার যাস্ট একটা বুদ্ধি হিসেবেই এটা বলেছেন । কিন্তু এ বুদ্ধিটা হাদিস থেকে বর্ণিত নয়। পেছনে মালাকুল মউত বলতে বুঝাতে চেয়েছেন যে, আমাদের যে কোন মুহূর্তে সময় শেষ হয়ে গেলে আমাদের জান কবজ করে ফেলবে। সেই হিসেবে মনে করা হয় আর কিছু না। কিন্তু এরকম কোন ধারণা নামাজের মধ্যে নিয়ে নামাজ আদায় করতে হবে; এটা সঠিক নয়।
– শায়খ আহমাদুল্লাহ, ইসলামী স্কলার ও চেয়ারম্যান আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন।
অনুলিখনে- ইফতিখার আহমদ (আতিক)
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ