Home ফিকহ ও মাসায়েল সাধারণ মুসলমানদের পারস্পরিক হকসমূহ

সাধারণ মুসলমানদের পারস্পরিক হকসমূহ

।। মুফতি জাকির হোসাইন কাসেমী ।।

আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও অপরিচিত সাধারণ মুসলমানদেরও কিছু হক্ রয়েছে। ইমাম ইস্পাহানী (রাহ্.) “তারগীব ওয়া তারহীব” নামক গ্রন্থে হযরত আলী (রাযি.)এর বরাত দিয়ে নিম্ন লিখিত হকসমূহের উল্লেখ করেছেন।

(১) মুসলমান ভাই হিসেবে অপর মুসলমানের অন্যায়, ত্রুটিবিচ্যুতি ক্ষমা করে দেওয়া।
(২) অপর মুসলমানের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া।
(৩) মুসলমান ভাইয়ের দোষ গোপন করে রাখা।
(৪) তাদের ওজর আপত্তি কবুল করা।
(৫) তাদের কষ্ট লাঘব করতে চেষ্টা করা।
(৬) সর্বদা তাদের হীত কামনা করা।
(৭) তাদের নিরাপত্তা প্রদান করা ও ভালবাসা।
(৮) তাদের দায়িত্ব পালনে সহায়তা করা।
(৯) অসুস্থ অবস্থায় সেবা শুশ্রƒষা করা।
(১০) মারা গেলে জানাযায় শরীক হওয়া।

(১১) দাওয়াত কবুল করা।
(১২) তাদের দেওয়া হাদিয়া তুহ্ফা গ্রহণ করা।
(১৩) তাদের ইহ্সান বা দয়ার প্রতিদান দিয়ে দিতে চেষ্টা করা।
(১৪) তাদের পক্ষ থেকে দেওয়া দানের শুকরিয়া আদায় করা।
(১৫) সুযোগ মত তাদের সাহায্য সহযোগিতা করা।
(১৬) তাদের বালবাচ্চা ও পরিবারের হিফাযত করা।
(১৭) তাদের অভাব মোচন করতে চেষ্টা করা।
(১৮) তাদের আবেদন নিবেদনের প্রতি কর্ণপাত করা।
(১৯) তাদের সুপারিশ গ্রহণ করা।
(২০) কোন বিষয়ে নৈরাশ না করা।

(২১) হাঁচি দিয়ে “আল্-হামদুলিল্লাহ্” বললে জবাবে “ইয়ারহামু কাল্লাহ্” বলা।
(২২) হারানো জিনিস পেলে প্রকৃত মালিককে পৌঁছিয়ে দেওয়া।
(২৩) সালামের জবাব দেওয়া।
(২৪) নম্রতা ও ভদ্রতার সাথে কথাবার্তা বলা।
(২৫) মুসলমান ভাইয়ের প্রতি ইহ্সান করা।
(২৬) কারো উপর ভরসা করে ক্বসম খেলে তা পুরণ করা।
(২৭) অত্যাচারিত হলে সাহায্য করা ও অত্যাচারিকে প্রতিহত করা।
(২৮) হৃদ্যতা ও সৌহার্দ্য স্থাপন করা ও শত্রুতা বা বিদ্বেষ পোষণ না করা।
(২৯) তিরস্কার-ভর্ৎসনা না করা।
(৩০) নিজের জন্য যা পছন্দীয় অপরের জন্যও তা পছন্দ করা।

আরও পড়তে পারেন-

অন্যান্য হাদীসে আরও কিছু হক বৃদ্ধি করা হয়ছে

(৩১) সাক্ষাত হলে সালাম দেওয়া। মুসাফাহা করাও উত্তম।
(৩২) কোন কারণে পারস্পরিক মনোমালিন্য হলে তিন দিনের বেশী কথা বন্ধ করে না থাকা।
(৩৩) মুসলমান ভাইয়ের ব্যাপারে কু-ধারণা না করা।
(৩৪) হিংসা-বিদ্বেষ না রাখা।
(৩৫) যথাসম্ভব ‘আমর বিল মা’রূফ ও নাহি আনিল মুনকার’ বা সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে থাকা।
(৩৬) ছোটদের প্রতি স্নেহ ও বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা।
(৩৭) পরস্পরের মধ্যে কলহ-বিবাদ সৃষ্টি হলে মীমাংসা করে দেওয়া।
(৩৮) গীবত বা পরনিন্দা ও অগোচরে কারো দোষচর্চা না করা।
(৩৯) কোন প্রকার ক্ষতি সাধন না করা। চাই সম্মানের হোক বা ইজ্জত আব্রু হোক।
(৪০) যানবাহনে উঠতে না পারলে বা মাল-সামানা উঠাতে না পারলে সাহযোগিতা করা।

(৪১) যানবাহনে উঠতে এরূপ সহযোগিতা করার পর খালী সীটে নিজে না বসে অপরকে বসতে সহযোগিতা করা।
(৪২) তিনজন একত্রে থাকলে একজনকে বাদ দিয়ে দুইজন কথা না বলা।

একথা স্মরণ রাখতে হবে যে, যাদের হক উপরে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো ছিল বিশেষ হক। এই সাধারণ হকসমূহে উপরে বর্ণিত আত্মীয় স্বজনগণও শামিল।

লেখক: সিনিয়র শিক্ষক, জামিয়া মাদানিয়া বারিধারা-ঢাকা, খতীব- তিস্তা গেট জামে মসজিদ, টংগী, গাজীপুর, অর্থ সম্পাদক- জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এবং উপদেষ্টা- উম্মাহ ২৪ ডট কম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।