Home ইসলাম অপরাধীর সঙ্গে মহানবী (সা.) যেমন আচরণ করতেন

অপরাধীর সঙ্গে মহানবী (সা.) যেমন আচরণ করতেন

আলেমা মুশফিকা আফরা: রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর দয়া ও কল্যাণকামিতা ছিল সব মানুষের জন্য। তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হতো না সমাজের অপরাধীরাও; বরং তাদের প্রতি ছিল তার বিশেষ মমত্ব ও কল্যাণকামিতা। কারো ভেতর কোনো অপরাধপ্রবণতা দেখা দিলে তা সংশোধনে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করতেন। নিম্নে তাঁর অনুসৃত চারটি নীতি তুলে ধরা হলো।

১. মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা : অপরাধ প্রবণতা কমাতে মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসার কথা বলে আধুনিক অপরাধ বিজ্ঞান। রাসুলুল্লাহ (সা.) অপরাধ প্রবণতা দূর করতে এই পদ্ধতিকে গুরুত্ব দিতেন। তিনি এমনভাবে অপরাধের স্বরূপ উন্মোচন করতেন যে মানুষের অপরাধ স্পৃহা দূর হয়ে যেত। যেমন এক যুবক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে ব্যভিচারের অনুমতি চাইলে তিনি বললেন, তোমার মা, মেয়ে, বোন, ফুফি ও খালার সঙ্গে কেউ এমন করুক এটা কি তুমি পছন্দ করবে? সে বলল, না, এটা কেউ পছন্দ করবে না। তখন রাসুল (সা.) তাকে বললেন, মানুষও তার আপনজনের সঙ্গে ব্যভিচার পছন্দ করে না। অতঃপর তিনি তার পাপমুক্তি ও আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য দোয়া করলেন। (মুসনাদে আহমদ : ৫/২৫৬)

২. আত্মসম্মানে আঘাত নয় : রাসুল (সা.)-এর সময়ে কেউ কোনো অপরাধ করলে তিনি তার নাম উল্লেখ না করেই মানুষকে সতর্ক করতেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে যখন তার কোনো সাহাবির ব্যাপারে কোনো অভিযোগ পৌঁছাত, তখন তিনি বলতেন না অমুকের কী হলো; বরং তিনি বলতেন, মানুষের কী হলো তারা এমন কাজ করে!’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৮৮)

আরও পড়তে পারেন-

৩. অপরাধ কর্মের প্রচারণা নয় : মহানবী (সা.) সামাজিকভাবে অপরাধীর দোষ-ত্রুটি ও অপরাধের প্রচার নিষিদ্ধ করেছেন। যেন ব্যক্তি অনুতপ্ত হয়ে ফিরে আসার সুযোগ পায়। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার কোনো মুসলিম ভাইয়ের দোষ গোপন করল, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন করবেন। আর যে তার কোনো মুসলিম ভাইয়ের দোষ প্রকাশ করে দেবে, আল্লাহ তার দোষ প্রকাশ করে দেবেন; এমনকি তাকে নিজ ঘরে অপমানিত করবেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২৫৪৬)

৪. সংশোধনের সুযোগ দান : কেউ অপরাধ করলে তার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে তাকে আত্মসংশোধনের সুযোগ দিতে বলেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে নবীজি (সা.) ব্যভিচারে লিপ্ত দাসীকে দুবার সংশোধনের সুযোগ দান করার কথা বলেছেন। এর পরও সংশোধন না হলে তাকে বিক্রি করে দিতে বলেছেন। (সহিহ বোখারি, হাদিস : ২২৩৪)

৫. ক্ষমা লাভের আশ্বাস : মহানবী (সা.) বললেন, ভালো কাজ করো, পাপ পরিহার করো, আল্লাহ তোমার পাপকে পুণ্যে পরিণত করবেন। আবু তুয়াইল (রা.) বললেন, আমরা বিশ্বাসঘাতকতা ও পাপাচারও? রাসুল (সা.) বললেন, হ্যাঁ! আল্লাহ মহান। কোনো কিছু তার সীমার ঊর্ধ্বে নয়।’ (সুনানে তিবরানি, হাদিস : ৭২৩৫)

আল্লাহ সবাইকে পাপ পরিহারের তাওফিক দিন। আমিন।

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।