Home ফিকহ ও মাসায়েল থার্টি ফার্স্ট নাইটের অশ্লীলতা রোধে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

থার্টি ফার্স্ট নাইটের অশ্লীলতা রোধে তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

।। মাওলানা নূর হোসাইন সবুজ ।।

হেলায়-খেলায় কিংবা কাজে-কর্মে যে যেভাবেই দিন পার করছি না কেন, আমাদের জীবন কিন্তু অতিবাহিত হচ্ছে। দিন পেরিয়ে সপ্তাহ, সাপ্তাহ পেরিয়ে মাস, আর মাস পেরিয়ে বছরও অতিবাহিত হচ্ছে। এই যে- সকালে পূর্ব আকাশে পৃথিবীকে আলোকিত করে সূর্য ওঠে, শেষ বিকেলে পশ্চিমাকাশে ডুবে গিয়ে পৃথিবীকে অন্ধকার করে দেয়, আবার রাতের আকাশে চাঁদ ওঠে, তারকাগুলো মিটিমিটি জ্বলে। কি নিখুঁত পরিচালিত হচ্ছে পৃথিবী। কোন ত্রুটি নেই, খুঁত নেই। সবকিছু চলছে নিরবধি। এই সুন্দর পৃথিবী যিনি পরিচালনা করছেন তিনি না জানি কত সুন্দর।

মুসলিম উম্মাহ সৃষ্টি ও স্রষ্টা নিয়ে চিন্তাভাবনা করতে করতে জীবন পার করে দেয়। আমাদের কাজই তো হল, নিজেদের নিয়ে ভাবা, রবকে নিয়ে ভাবা এবং নিজেদেরকে উন্নতির শিখরে পৌঁছে দেয়া। দিনের পর দিন নিজেদের ছাড়িয়ে যাওয়া।

তবুও যুগে যুগে মুসলমানরা ইসলাম ও মুসলমানদের চিরশত্রু ইহুদী-খ্রিস্টানদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ভুল পথে পা বাড়িয়ে দেয়। ইহুদী-খ্রিস্টানদের ধোকায় পড়ে তাদের ঈমানী দৃঢ়তা হোচট খায় দারুণভাবে। শক্ত, সবল ঈমানের অধিকারী মুমিনরাও প্রতারিত হয়। তবে কিছু সংখ্যক মুসলমানের হোঁচট খাওয়া কিংবা প্রতারিত হওয়া একথা প্রমান করে না যে, ইসলামের মূলনীতি ও বৈশিষ্ট্য সংরক্ষণে ইসলাম কোন প্রকার শিথিলতাকে প্রশ্রয় দেয়।

তথ্য প্রযুক্তির উন্নতির এই যুগে বর্তমানে সবাই সচেতন। সর্বোচ্চ সচেতনতার পরেও স্রোতের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে ইয়াহুদী-খৃষ্টানদের ধোকায় প্রভাবিত হয়ে ভুল পথে পা বাড়িয়ে হাজারো গুনাহে লিপ্ত হচ্ছে মুসলিম তরুণ প্রজন্ম। এজন্য আমাদের আরো সতর্কতা কাম্য।

আল্লাহ ও রাসূল (সা.) অসন্তুষ্ট হন এমন কর্ম থেকে আমাদের বিরত থাকা উচিত। আমাদের বিগত সময়গুলোর জন্য ক্রন্দন করা উচিত। আফসোস করা উচিত। সামনের সময়গুলোর জন্য নিজে সচেতন হওয়া এবং অন্যকে সচেতন করা উচিত।

আরও পড়তে পারেন-

এইতো আর ক’দিন বাদেই থার্টি ফার্স্ট নাইট। এই রাতকে কেন্দ্র করে নানা অশ্লীলতার ছড়াছড়ি। দেশের নামীদামী হোটেলগুলো, ঢাকার টিএসসি, রমনা পার্ক, গুলশান-বনানীর লেক, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাইভ কনসার্টে গিয়ে নাচ, গান-বাজনা ও অন্যান্য অবৈধ কাজে লিপ্ত হবে হাজারো তরুণ-তরুণীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আঙ্গিনায়, ঢাকা শহরের বাসাবাড়ির ছাঁদে আতশবাজি, ডিজে পার্টি, ফানুশ উড়ানো’সহ নানা উচ্ছৃঙ্খলতা প্রদর্শন হয় এই রাতে। কোন মুসলমান তরুণ-তরুণীরা এধরণের গর্হিত কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে না। কেননা ইসলাম এধরণের গর্হিত কাজ কখনোই সমর্থন করে না।

আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন “আল্লাহ তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার অবাধ্য এবং যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয় দেয়” (মুসনাদে আহমাদ)

আমাদের দেশে থার্টি ফার্স্ট নাইটের নামে যে অশ্লীলতার আসর হয় এগুলো মাদকাসক্ত, ব্যভিচার ও অশ্লীলতার দিকে আহবান করে। এজন্য নিজের পরিবার-পরিজন, আত্নীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশিকে সতর্ক করতে হবে কেননা হাদিসে এসেছে- “এক কথায় তোমরা সবাই দায়িত্বশীল, আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে।” (বুখারী-মুসলিম)

তরুণরা দেশের চালিকাশক্তি। তরুণরা একটু সচেতন হলেই জাতিকে বাঁচানো সম্ভব এজন্য তরুণ প্রজন্মকে রাখতে হবে শক্তিশালী ভূমিকা। এখন থেকে পাড়া-প্রতিবেশি, বন্ধুবান্ধবকে সচেতন করতে হবে। প্রয়োজনে পাড়া-মহল্লায় টিম বানিয়ে অশ্লীলতা রোধ ও তরুণদের সচেতন করতে হবে। এর দায়িত্ব তরুণদেরই নিতে হবে।

মহান আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে থার্টি ফার্স্ট নাইটের অশ্লীলতা থেকে বেঁচে থাকার তাওফিক দান করুন এবং আল্লাহর বিধান মেনে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন, আমিন

লেখক: তরুণ আলেম, কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।