Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন সুখ ক্ষণস্থায়ী, তৃপ্তি গভীর থেকে আসে

সুখ ক্ষণস্থায়ী, তৃপ্তি গভীর থেকে আসে

।। মুফতি মেনক ।।

এক. সুখী হওয়া এবং সন্তুষ্ট থাকা দুটি ভিন্ন জিনিস। সুখ ক্ষণস্থায়ী, এটি আসে এবং যায়, প্রধানত বাইরে থেকে আসে। তৃপ্তি আসে গভীর জায়গা থেকে। আপনার পরিস্থিতি যাই হোক না কেন সর্বশক্তিমান আপনাকে যা দিয়েছেন তাতে আপনি শান্তিতে আছেন। আপনি তাকে সম্পূর্ণরূপে বিশ্বাস করেন।

দুই. আপনি ক্রমাগত যা চিন্তা করেন তাই হয়ে উঠুন। আপনি যদি মনে করেন আপনি পারবেন না, আপনি সম্ভবত এটি করতে পারবেন না। যদি মনে করেন আপনি একজন ব্যর্থ, আপনি শেষ পর্যন্ত জীবনে উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারবেন না। আপনি যদি সবসময় নেতিবাচক চিন্তাভাবনা করেন তবে আপনি নেতিবাচক ফলাফলের সাথে শেষ হবেন। আপনার চিন্তাকে রক্ষা করুন।

পূনশ্চ: এক. আপনার নিজের জীবন সম্পর্কে অভিযোগ করবেন না। প্রতিটি ঝড় আপনাকে আরও শক্তিশালী করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল, কারণ সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে এসব আসে আর সমস্ত জিনিস আপনার নিজের ভালোর জন্য সর্বদা একে অপরের পরিপূরক হয়। প্রতিবার যখন আপনি অভিযোগ করার জন্য প্রলুব্ধ হন, তখন অন্যদের কথা মনে আনুন যারা আপনার চেয়ে আরও বেশি মাত্রায় লড়াই করছেন। তাদের জন্য প্রার্থনা করুন!

দুই. আপনার অহংবোধ এর উপর নজর রাখুন। আপনি যা করেন সবই সবসময় ঠিক এমনটিই কি আপনার মনে হয়? আপনি কি সর্বদা অন্যকে ভুল হওয়ার কারণে চাপ দিচ্ছেন? আপনার যখন সংশোধন করা দরকার তখন সেই জিনিসের উপর আপনি স্থির থাকা উচিৎ নয়। আপনি দোষ ও লজ্জাতে আচ্ছন্ন হয়ে আছেন। সতর্ক হোন। এই সমস্ত আপনাকে একটি বড় রকমের জগাখিচুড়ি অবস্থায় ফেলতে পারে। আপনার অহংবোধকে নিয়ন্ত্রণে আনুন। দয়াবান এবং ক্ষমাশীল হন।

আরও পড়তে পারেন-

তিন. আপনি যে অবস্থার মধ্যে যান না কেন, জেনে রাখুন যে বিশ্বজগতের পালনকর্তার পক্ষে কোন কিছুই খুব বড় নয়। এমন কোন প্রতিশ্রুতি নেই যা তিনি পূর্ণ করতে পারবেন না, এমন কোন প্রার্থনা নেই তিনি যাতে সাড়া দিতে পারবেন না, এমন কোনও বাধা নেই তিনি যা সরাতে পারবেন না, এমন কোনও হৃদয় নেই তিনি যা সংশোধন করতে পারবেন না, এমন কোনও অসুস্থতা নেই তিনি যার নিরাময় করতে পারবেন না। এভাবে তালিকাটি দীর্ঘ হতেই থাকবে! উজ্জিবীত থাকুন; মনোনিবেশ করুন!

চার. বৃদ্ধিপ্রবণতা সাধারণত অস্বস্তিকর হয়। এটি প্রতিরোধ করা মানুষের স্বভাব কারণ এটি আপনাকে স্বস্তিকর অবস্থা থেকে অন্য এক অবস্থায় নিয়ে যায়। সুতরাং নিজেকে নিয়ে এত কঠিন হবেন না। নিজেকে কিছু ক্ষেত্রে কাটছাট করুন, আর প্রার্থনা করুন। আপনি যদি নিজের মন এতে নিবিষ্ট করেন তবে আগে বা পরে আপনি গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন!

পাঁচ. আপনার জীবন থেকে নির্দিষ্ট কিছু মানুষকে সরিয়ে দেবার বিষয়ে সর্বশক্তিমানের উপর আস্থা রাখুন। কারণ তারা আর আপনার উদ্দেশ্য অর্জনের পথে সহায়ক নন। এটিকে মেনে নিন এবং তাঁকে আপনার জীবনের পরবর্তী বিকাশে নতুন লোক আনতে দিন। এটিকে আপনার কাছে উদ্বেগজনক মনে হতে পারে তবে তিনি জানেন যে তিনি কী করছেন। এটি আপনার বিশ্বাসেরই একটি স্তর!

[জিম্বাবুয়ের ড. মুফতি ইসমাইল মেনক এ সময়ের অন্যতম প্রসিদ্ধ ইসলামী স্কলার। তিনি মদিনায় ইসলামের ওপর উচ্চতর পড়াশোনা এবং অলডারগেট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সোশ্যাল গাইডেন্সের ওপর ডক্টরেট করেছেন। ড. মেনক তার গভীর জ্ঞান, বাস্তব পদ্ধতি এবং বুদ্ধি ও কৌতুক মেশানো উপস্থাপনার জন্য বিশেষভাবে খ্যাত ও জনপ্রিয়]

অনুবাদ: মাসুমুর রহমান খলিলী

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।