Home শিক্ষা ও সাহিত্য হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বয়ানে যা বলেছেন আল্লামা সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী

হাটহাজারী মাদ্রাসার ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বয়ানে যা বলেছেন আল্লামা সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী

[গত ২ আগস্ট মঙ্গলবার দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ ইসলামী শিক্ষাকেন্দ্র আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা সফর করেছেন আওলাদে রাসূল হযরত মাওলানা হোসাইন আহমদ মাদানী (রাহ.)এর সুযোগ্য সাহেবজাদা আল্লামা সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী (দা.বা.)।

সফরকালে তিনি মাকবারায়ে জামেয়ায় শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.), শায়খুল হাদীস আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী (রহ.), মুফতিয়ে আযম আল্লামা আবদুচ্ছালাম চাটগামী (রহ.)সহ সেখানে শায়িত অন্যান্য আসাতিজায়ে কেরাম (রহ.)এর কবর যিয়ারত করেন। এরপর জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর মহাপরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (দা.বা.)এর সাথে সাক্ষাত ও মতবিনিময় করেন এবং তাঁর সম্মানে দেয়া মধ্যাহ্নভোজে শরীক হন। বিকেল ৪টায় তিনি জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর কেন্দ্রীয় মসজিদ জামে বায়তুল কারীমে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করেন। এ সময় তাঁর পাশে উপবিষ্ট ছিলেন দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া (দা.বা.), সহযোগী পরিচালক আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন (দা.বা.), মুহাদ্দিস আল্লামা ফোরকান আহমদ (দা.বা.) এবং সাহেবজাদা সাইয়্যেদ মাওলানা হাসান আসজাদ মাদানী (দা.বা.)। দারুল উলূম হাটহাজারীর ছাত্রদের উদ্দেশ্যে আল্লামা আসজাদ মাদানীর বয়ানের চুম্বকাংশ নিম্নে পত্রস্থ করা হল]

হামদ-সালাতের পর আল্লামা আসজাদ মাদানী বলেন, আজ প্রখর রোদের উত্তাপ উপেক্ষা করে তালিবুল ইলম ভাইয়েরা যেভাবে আমাকে সারিবদ্ধভাবে আন্তরিকতার সঙ্গে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন, তাতে আমি অনেক সম্মানিতবোধ করেছি। আল্লাহ আপনাদেরকে এই ভালোবাসার উত্তম প্রতিদান দান করুন এবং আমাদেরকে এখানে যেরূপ একত্রে সমবেত করেছেন, ঠিক সেভাবে জান্নাতেও একসাথে রাখুন। আমিন।

তিনি আরো বলেন, আমি ইতোপূর্বে বাংলাদেশে যতোবার এসেছি ততো বার আল্লামা শাহ আহমদ শফি সাহেব (রহ.) উপস্থিত থাকতেন, আমাকে অনেক সমাদর করতেন। আজ আমি যখন এখানে আসছিলাম, তখন মনে মনে ভাবতেছিলাম যে আল্লামা শফি সাহেব (রহ.) তো নেই, হুজুররা সবাই নামায পড়ে বিশ্রাম নিবেন। আমাকে কে সঙ্গ দিবেন? কে আমার সাথে কথা বলবেন? কিন্তু আপনারা আমার প্রতি যে আকাশছোঁয়া ভালোবাসা প্রদর্শন করেছেন, তা কখনো ভুলবার মতো নয়। আমি অনেক অভিভূত ও বিস্মিত। আল্লাহ তাআলা আপনাদেরকে বরকতময় হায়াত দান করুন।

জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারীর ছাত্রদেরকে উদ্দেশ্যে আল্লামা আসজাদ মাদানী বলেন, মনে রাখবেন শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) অনেক উঁচুমাপের যোগ্যবান ছিলেন। তিনি হযরত মাদানী (রহ.)এর খেদমতে ছিলেন এবং তাঁর হাতে বাইয়াত গ্রহণ করছেন। হযরত মাদানি (রহ.) তাঁকে তরবিয়ত ও দীক্ষা দিয়েছেন। এভাবে আল্লামা আহমদ শফী (রহ.)এর ভেতরে হযরত মাদানি (রহ.)এর যোগ্যতা ও ফুয়ূজাত প্রবেশ করেছে।

তিনি বলেন, আমার আযীয তুলাবা, হযরত মাদানী (রহ.) তৎকালীন যুগে তার সমবয়সী আলেমদের মাঝে সবচেয়ে মমতাজ ছিলেন। কোন বৈশিষ্ট্যের কারণে তিনি মমতাজ ছিলেন? দু’টি বৈশিষ্ট্যের কারণেই তিনি মমতাজ ছিলেন। এক. তিনি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শতভাগ রাসূলুল্লাহ (সা.)ও তাঁর সাহাবীগণের পদাঙ্ক অনুসরণ করার চেষ্টা করেছেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টা রাসূলের অনুসরণ করেছেন। রাসূল (সা.)এর সুন্নাতের বাইরে এক কদমও উঠাতেন না। এই একটি বৈশিষ্ট্যের কারণে তিনি সমবয়সীদের মাঝে সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ রূপে বিবেচিত হতেন। তাঁর অন্যান্য সমবয়সীদের মাঝেও এই গুণ ছিল, কিন্তু তাঁর সমপরিমাণ কারও মাঝে ছিলো না।

তিনি স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমি যখন দাওরা পড়তেছিলাম তখন জুমার গোসল সম্পর্কে রাসূল (সা.) থেকে তিনটি হাদিস পেয়েছি- (১) জুমার পূর্বে গোসল করা, (২) জুমার দিন যে কোন সময় গোসল করা, (৩) জুমার পূর্বে এমন সময় গোসল করা যাতে করে সেই গোসল দিয়ে জুমার নামায আদায় করা যায়। এখন এই তিনটি অবস্থার মধ্যে কোনটি সবচেয়ে অধিক সাওয়াবের? এই নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিলে তৎকালীন যুগের সকল মুফতি ও মুহাদ্দিসগণ এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেন যে, হযরত হুসাইন আহমদ মাদানি (রহ.) যেই মতের উপর আমল করে সেই মতটিই সবচেয়ে বেশি সাওয়াবের হবে। অতএব, পরে হযরত (রহ.)কে দেখা গেল যে, তিনি যখন শেষ বয়সে গাড়িতে করে জুমায় যেতেন তখন মাঝপথে মুসল্লীরা তাঁকে এমন অবস্থায় দেখতে পেতেন যে, তখন তাঁর দাঁড়ি বেয়ে পানির ফোঁটা ঝরছে। এতে এটা সুস্পষ্ট হয় যে, তিনি জুমার দিন জুমার গোসল দিয়েই জুমার নামাজে শরিক হতেন।

এ পর্যায়ে আল্লামা আসজাদ মাদানী পবিত্র কুরআনের আয়াত তিলাওয়াত করেন-

قل ان كنتم تحبون الله فاتبعوني يحببكم الله ويغفرلكم ذنوبكم

অর্থাৎ- যদি তোমরা আল্লাহর ভালোবাসা পেতে চাও তাহলে রাসূলুল্লাহ (সা.)এর অনুকরণ ও অনুসরণ করো। কারণ, অনুসরণ তো স্রেফ আদেশ পালনকে বলা হয়। অতএব, আল্লাহর ভালোবাসা পেতে হলে রাসূলের অনুসরণ করতে হবে। অর্থাৎ- নিজের জীবনকে এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে, যেনো একটি কদমও রাসূল (সা.)এর সুন্নাতের বাইরে না যায়। তবেই রাসূলের ভালোবাসা কুড়িয়ে নিতে পারবে। আর রাসূলের ভালোবাসা অর্জন করতে পারলে আল্লাহ তাআলা তোমাদেরকে ভালোবাসবে এবং আল্লাহ তোমাদের পাপ মোচন করবে। পাপ মোচন করলে কী হবে? আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে চিরসুখের জান্নাত দান করবেন। এটিই আসল সফলতা।

জামিয়ার তুলাবাদেরকে উদ্দেশ্যে করে আল্লামা সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী বলেন, হে আমার ভাইয়েরা! আল্লামা আহমদ শফী (রহ.) এত বড় গুণী কীভাবে হয়েছেন? হযরত মাদানি (রহ.)এর খেদমতে থেকেই হয়েছেন। তাঁরা এত বেশি গুণের অধিকারী ছিলেন যে, এখন পর্যন্ত আমরা তাদের থেকে উপকৃত হতেই আছি, উপকৃত হতেই আছি। তাঁরা আল্লাহর কাছে এতো বড় দামি কীভাবে হলেন? একমাত্র ইত্তেবায়ে সুন্নাতের কারণে। আমরাও তাঁদের মতো রাসূল (সা.) ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনী অনুসরণ করে চলতে পারলে তাদের মতো মর্যাদাবান হতে পারবো, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, আমি যখন একবার হজ্জে গিয়েছিলাম তখন একজন অনেক লম্বা গড়নের মানুষ আমার কাছে এসে আমার হাঁটুর উপর মাথা রেখে কাঁদতে শুরু করলেন। এমনভাবে কাঁদলেন যে, আমার হাঁটু চোখের অশ্রুতে ভিজে যায়। আমি তাঁকে বললাম তুমি কে ভাই? তিনি বললেন, আমার বাড়ি পাকিস্তান। আমার পিতা আপনার পিতার ছাত্র ছিলেন। আমার পিতা আপনার পিতার রুমে থাকতেন। আমি আমার বাবার কাছ থেকে শুনেছি, তিনি বলতেন, আমি সাহাবায়ে কেরামের জীবনী পড়ে সাহাবায়ে কেরামদের জেনেছি, কিন্তু আমি হযরত মাদানি (রহ.)কে জীবিত সাহাবিদের নমূনা হিসেবে পেয়েছি। এই জন্য আমি আপনাকে দেখে নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে আপনার কাছে কেঁদে ফেললাম।

আরও পড়তে পারেন-

বয়ানে তিনি বলেন, হে প্রিয় ছাত্র ভাইয়েরা! তোমরা যে উদ্দেশ্যে এখানে এসেছ সেই উদ্দেশ্য অর্জন করতে চেষ্টা-সাধনা করতে থাকো। হযরত শায়খুল ইসলাম হুসাইন আহমদ মাদানি (রহ.) দাওরায়ে হাদিস শেষে যখন হজ্জে গিয়েছিলেন তখনকার একটি ঘটনা স্বয়ং তিনি নিজেই লিখেছেন। সেই সময়ে হযরত মাদানি (রহ.) মাত্র যুবক বয়সে উপনীত হয়েছেন এবং হযরত গাঙ্গুহী (রহ.)এর কাছে কেবলমাত্র বায়আত গ্রহণ করেছিলেন। তখনকার সময়ে মদিনায় উটের ব্যাবহার ছিলো। আপনারা কি কখনো উটে চড়েছেন? উট দেখেছেন? উট এমনভাবে চলে যে, উটের উপর শক্তভাবে চেপে না বসলে পড়ে যাওয়ার ভয় থাকে।

তিনি বলেন, উক্ত ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে হযরত মাদানি (রহ.) স্বয়ং নিজে বলছেন যে, আমি যখন উটে চড়ে তাবুক যাচ্ছিলাম তখন মাঝপথে আমার ঝিমুনি এসে যায়। ফলে একসময় আমি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ি। এ সময় আমি স্বপ্নে দেখতে পাই যে, আখেরী নবী হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.) আমার কাছে এসেছেন। আমি তাঁকে দেখা মাত্রই হযরত (স.)এর পায়ে লুটিয়ে পড়লাম। তখন হুযূর (সা.) আমাকে টেনে তুলে বললেন, তুমি কি চাও বলো। তখন আমরা হলে চাইতাম অট্টালিকা. দুনিয়ার কল্যাণ.জান্নাত। যেমন আমরা দোয়া করি-

ربنا آتنا في الدنيا حسنة وفي الاخرة حسنة وقنا عذاب النارالنار

কিন্তু হযরত মাদানি (রহ.) এগুলোর কিছুই চাইলেন না। তিনি চাইলেন যে, “আমি যেসব কিতাব পড়েছি, তার সব যেনো আমার স্মরণে থাকে। আমি যে বইগুলি এখনো পড়িনি, সেগুলি অধ্যয়নের যেনো আমার সুযোগ হয় এবং সেগুলো বুঝার ক্ষমতা যেনো আমার থাকে”। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করলেন, “যাও আমি তোমাকে দিলাম”। সুবহানাল্লাহ।

তিনি বলেন, ইলমের প্রতি কী পরিমাণ অনুরাগ থাকলে এক অনন্য সুযোগের সময় দুনিয়া আখিরাতের কিছু না চেয়ে ইলমের কথা বলতে পারেন!

আল্লামা আসজাদ মাদানী আরো বলেন, আপনারা সকলেই জানেন হযরত আদম (আ.)কে কি কারণে সকল ফেরেস্তাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছিল। ইলমের কারণেই তিনি শ্রেষ্ঠত্ব লাভ করেছিলেন। আল্লাহ তাআলা কুরআনে কারীমে হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)কে উদ্দেশ্যে করে ইরশাদ করেছেন-

وَقُل رَّبِّ زِدْنِي عِلْمًا رَبِّ اشْرَحْ لِي صَدْرِي وَيَسِّرْ لِي أَمْرِي وَاحْلُلْ عُقْدَةً مِّن لِّسَانِي يَفْقَهُوا قَوْلِي

অর্থাৎ- “আর (হে রাসূল) আপনি বলুন, হে আমার রব, আমার ইলম বৃদ্ধি করুন। হে আমার পালনকর্তা, আমার জন্য আমার বক্ষ প্রশস্ত করুন এবং আমার জন্য আমার বুঝজ্ঞান সহজ করে দিন এবং আমার জিহ্বার জড়তা খুলে দিন, যাতে তারা আমার কথা সহজে বুঝতে পারে”।

আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ (সা.)কে জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা সমগ্র মানব জাতিকে যে পরিমাণ ইলম দিয়েছেন, হযরত রাসূলুল্লাহ (সা.)কে একা সে পরিমাণ ইলম দিয়েছেন। নবী (সা.) নিজেই বলেছেন-

اوتيت علم الاولين والاخرين অর্থাৎ- আমাকে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী যুগের সকল ইলম দান করা হয়েছে। যে নবীকে সমগ্র পৃথিবীর জ্ঞান দেয়া হয়েছে তাঁকে পর্যন্ত আল্লাহ তাআলা আরো জ্ঞান বৃদ্ধির জন্য দোয়া করতে বলেছেন। আর আমাদের অবস্থা তো এমন, সার্টিফিকেট পেলে, পাগড়ি পেলে নিজেকে মনে করি অনেক বড় আলেম হয়ে গেছি। সবাই নিজেকে মনে করে অনেক বড় মুহাদ্দিসম অনেক বড় মুফাসসিরম অনেক বড় শায়খুল হাদিস, অনেক বড় মুফতি। যদি কাউকে ১৫টি মাদ্রাসায় হাদিস পড়াতে বলা হয়, তিনি পনেরটি মাদ্রাসার শায়খুল হাদিস হওয়ার জন্য পাগলপারা হয়ে যাবেন। কিন্তু আমাদের আকাবিরদের অবস্থা কেমন ছিল ভাবুন, হযরত মাদানি (রহ.)এর শাগরেদ আব্দুল্লাহ (রহ.) যিনি বুখারী শরীফ ও তিরমিযী শরীফের হাফেজ ছিলেন। অথচ তিনি এটা কাউকে কখনো জানাতেন না। আপনারা কি একথা আহমদ শফি (রহ.)এর কাছে শুনেছেন? না। আল্লাহ আমাদেরকে তাদের মতো সুস্থির ও নিবৃত্তচারী রূপে কবুল করুন।

আল্লামা আসজাদ মাদানী বলেন, দ্বিতীয়ত: হযরত মাদানি (রহ.) যে কারণে মুমতাজ ছিলেন, দেখা যায় হযরত মাদানি (রহ.) খেদমতে খালকুল্লাহ তথা মাখলুকের সেবা করতেন। তিনি ট্রেন সফরের সময় কোন বিধর্মী, কাফির বা মুসলমান যে কাউকে দেখতেন, তার সেবা করা শুরু করে দিতেন। কেউ ট্রেনে বাথরুম অপরিষ্কার রেখে চলে আসলে হযরত (রহ.) অগোচরে তা পরিস্কার করে দিতেন। কেউ অসুস্থ হতেন তো হযরত (রহ.) তার সেবা শুশ্রূষা করতেন।

এ কারণে আল্লাহ তাআলা হযরত (রহ.)কে ভালোবেসেছেন। তোমরা দশ হাজার ছাত্র আছো। এখান থেকে কেউ যদি মুহতামিম সাহেব হুজুরের ছেলের সেবা করো, তাহলে হযরত মুহতামিম সাহেব সেই ছাত্রকে সবচেয়ে বেশী ভালোবাসবেন এবং তাকে সবচেয়ে বেশি চিনবেন। অথচ তার ছেলেকে জন্ম দেয়ার ক্ষেত্রে তার নিজের কোন ক্ষমতা ছিল না। এভাবে আল্লাহর সৃষ্টির যদি তুমি সেবা করো, তাহলে আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসার পাত্র বানিয়ে নিবেন। আল্লাহ তাআলা আমাদের পূর্বসুরি আকাবিরদের মতো জীবন গড়ার তাওফীক দান করুন। আমিন।

সবশেষে তিনি দু:খপ্রকাশ করে বলেন, বড় কষ্ট অনুভব হচ্ছে, কারণ তোমরা অনেকেই আমার সাথে মুলাকাত করতে চেয়েছ। কিন্তু ছাত্র বেশি হওয়ার দরুন আমি সবার সাথে মুসাফাহা করতে পারছি না। কাজেই সকলে আমাকে ক্ষমা করে দিবে।

বয়ান শেষে আল্লামা সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী জামিয়া দারুল উলূম হাটহাজারী এবং এর সকল শিক্ষক-ছাত্রের সফলতা ও বরকতের জন্য বিশেষ সাহায্য কামনা করে দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা করেন।

এরপর আল্লামা সাইয়্যেদ আসজাদ মাদানী জামিয়া মহাপরিচালক আল্লামা মুহাম্মদ ইয়াহইয়া’সহ উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে সফরসঙ্গীদের নিয়ে কুমিল্লার কোটবাড়ি রোডস্থ মাদরাসায়ে আশরাফিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হন। এ সময় জামিয়ার হাজার হাজার ছাত্র হাত নেড়ে সম্মানিত অতিথিকে বিদায় জানান।

উম্মাহ২৪ডটকম:এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।