Home ইসলাম মায়ের ত্যাগ অতুলনীয়

মায়ের ত্যাগ অতুলনীয়

।। সাআদ তাশফীন ।।

সন্তানের জন্য তুলনামূলকভাবে মা-ই বেশি ত্যাগ স্বীকার করেন। গর্ভধারণ, দুধ পান, রাত জেগে সন্তানের তত্ত্বাবধানসহ নানাবিধ কষ্ট একমাত্র মা-ই সহ্য করেন। তা ছাড়া সন্তানের প্রতি মা-ই সবচেয়ে বেশি যত্নবান ও বেশি আদর-সোহাগ করে থাকেন। পবিত্র কোরআনেও মহান আল্লাহ সন্তানের জন্য মায়ের ত্যাগের কথা উল্লেখ করেছেন।

ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি মানুষকে মা-বাবার সঙ্গে সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছেন এবং অতিকষ্টে তাকে প্রসব করেছেন। তার গর্ভধারণ ও দুধ পান ছাড়ানোর সময় লাগে ৩০ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং ৪০ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার ওপর ও আমার মা-বাবার ওপর যে নিয়ামত দান করেছ, তোমার সে নিয়ামতের যেন আমি কৃতজ্ঞতা আদায় করতে পারি এবং আমি যেন ভালো কাজ করতে পারি, যা তুমি পছন্দ করো। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত। ’ (সুরা : আহকাফ, আয়াত : ১৫)

আরও পড়তে পারেন-

অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি মানুষকে তার মা-বাবার সঙ্গে (সদাচরণের) নির্দেশ দিয়েছি। তার মা কষ্টের পর কষ্ট ভোগ করে তাকে গর্ভে ধারণ করে। আর তার দুধ ছাড়ানো হয় দুই বছরে; সুতরাং আমার শুকরিয়া ও তোমার মা-বাবার শুকরিয়া আদায় করো। ’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ১৪)

এ জন্য ইসলাম ধর্মে মাকে সর্বোচ্চ সম্মানের মুকুট পরানো হয়েছে। নবীজি (সা.) সাহাবায়ে কেরাম মায়ের প্রতি যত্ন নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে আহবান করেছেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, এক লোক রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল : হে আল্লাহর রাসুল! আমার কাছে কে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিক হকদার? তিনি বলেন, তোমার মা। লোকটি বলল, অতঃপর কে? নবী (সা.) বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তোমার মা। সে বলল, তারপর কে? তিনি বলেন, তারপর তোমার বাবা। (বুখারি, হাদিস : ৫৯৭১)

অন্য একটি হাদিসে নবীজি (সা.) বলেন, মায়ের পদতলে জান্নাত। এমনকি এক সাহাবিকে তিনি জিহাদে না নিয়ে মায়ের সেবায় নিয়োজিত থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন। হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, মুআবিয়া ইবনে জাহিমা সালামি (রহ.) থেকে বর্ণিত, আমার বাবা জাহিমা (রা.) রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খিদমতে এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসুলুল্লাহ! আমি যুদ্ধে যাওয়ার ইচ্ছা করেছি। এখন আপনার কাছে পরামর্শ করতে এসেছি। তিনি বলেন, তোমার মা আছেন কি? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি বলেন, তাঁর খিদমতে লেগে থাকো। কেননা জান্নাত তাঁর দুই পায়ের নিচে। (নাসায়ি, হাদিস : ৩১০৪)

মহান আল্লাহ আমাদের সবার মমতাময়ী মায়ের ত্যাগগুলো কবুল করুন। এবং আমাদেরকে মায়ের যথাযথ খিদমত করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।