Home শিক্ষা ও সাহিত্য জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার পুরস্কার বিতরণী ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন

জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার পুরস্কার বিতরণী ও দোয়া মাহফিল সম্পন্ন

বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ (বেফাক) ও আল হাইআতুল উলইয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় জামিয়াতুন নূর আল কাসেমীয়া’র মেধা তালিকায় উত্তীর্ণ ছাত্রদের মাঝে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিল গতকাল (৫ অক্টোবর) বাদ আসর উত্তরা নয়ানগর চেয়ারম্যানবাড়ি মোড়স্থ স্থায়ী ক্যাম্পাস মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শায়খুল আরব ওয়াল আযম আল্লামা সাইয়্যেদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.)এর দৌহিত্র আওলাদে রাসূল আল্লামা সাইয়্যেদ মওদুদ মাদানী। পুরস্কার বিতরণী ও দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেছেন, জাময়াতুন নূর আল কাসেমিয়ার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও শায়খুল হাদীস, নমুনায়ে কাসেমী আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী।

প্রধান অতিথির বক্তেব্যে আল্লামা সাইয়্যেদ মওদূদ মাদানী বলেন, দ্বীনি শিক্ষা হচ্ছে সবচেয়ে সম্মানিত শিক্ষা। ইলমে দ্বীনের যে সম্মান, তা সর্বশ্রেষ্ঠ সম্মান। যেমন হযরত আব্দুল কাদের জিলানী রাহমাতুল্লাহি আলাইহি ও বায়জিদ বোস্তামি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি; তাঁদের কথা আজও সবাই স্মরণ করে। অথচ তাদের মৃত্যুর কয়েক শত বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। অথচ দুনিয়াবি শিক্ষায় শিক্ষিত কোন ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারের জীবনী কেউ পড়ে না এবং স্মরণও রাখে না। তিনি পুরষ্কারপ্রাপ্ত ছাত্রদেরকে অভিন্দন জানিয়ে বলেন, আপনারা সকলের মাঝে বিশেষ গৌরবের অধিকারি হয়েছেন, এজন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শোকরিয়া আদায় করবেন। আমি আশাবাদি, আজ যেমন আপনারা সম্মানিত হয়েছেন, অর্জিত ইলম অনুযায়ী জীবনকে সাজাতে পারলে দুনিয়ার জীবনেও আপনারা সম্মানিত হবেন, ইতিহাসে জায়গা করে নিবেন এবং পরকালেও সফলতা অর্জন করে সম্মান ও সুখ-স্বাচ্ছন্দের জীবন যাপন করবেন।

সভাপতির বক্তব্যে আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী পুস্কারপ্রাপ্ত ছাত্রদেরকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আজ আমি আপনাদের এই গৌরবদীপ্ত অর্জনে অত্যন্ত সন্তুষ্ট ও মহান আল্লাহর দরবারে শোকরিয়া আদায় করছি। জামিয়াতুন নূর আল কাসেমিয়াও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আপনাদের সফলতায় গৌরববোধ করছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রথম বছরেই আপনারা যে সফলতা বয়ে এনেছেন, তা অবিস্মরণীয়। দেশের অনেক বড় বড় পুরনো প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররাও মেধা তালিকায় স্থান করতে পারেনি। কিন্তু আপনারা উস্তাদদের নির্দেশনা মেনে গভীর অধ্যাবসায়ে তালিমে মশগুল থাকায় প্রতিষ্ঠানের সূচনার প্রথম বছরেই এটা সম্ভব হয়েছে। আমি এজন্য প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ও উদ্যোমি শিক্ষকবৃন্দদেরকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই জামিয়া প্রথম বছরেই এই বিশাল সফলতা অর্জন ও সকলের মনোযোগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।

আল্লামা নাজমুল হাসান কাসেমী আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, চলতি বছর থেকে আলহামদুলিল্লাহ জামিয়া স্থায়ী ক্যাম্পাসেও শিক্ষাকার্যক্রম শুরু করেছে। আমি আশা করছি, কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় সাফল্যের এই ধারা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বিজয়ী ছাত্রদেরকে অর্জিত ইলমের চর্চা জারি রেখে উম্মাহর মাঝে ইলম ছড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আপনারা হলেন ওয়ারাসাতুল আম্বিয়া বা নবীগণের ওয়ারিশ। আপনাদের স্কন্ধে দাওয়াত ও তাবলীদের দায়িত্ব অর্পিত। নববী আদর্শে উম্মাহকে গড়ে তোলা ও হকের প্রচার করা আপনাদের আবশ্যিক দায়িত্ব। এটা কখনো ভুলে যাবেন না।

বয়ান শেষে প্রধান অতিথি আল্লামা সাইয়্যেদ মওদূদ মাদানী ও আল্লামা হাফেজ নাজমুল হাসান কাসেমী কৃতিত্ব অর্জনকারী ও বিজয়ী ছাত্রদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। পুরতস্কারপ্রাপ্তরা হলেন- আরবি বক্তৃতায়- ১ম স্থান আব্দুল্লাহ আল মামুন (আদব বিভাগ), দ্বিতীয় স্থান রাফি আহমেদ (ফজিলত ২য়) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেছেন মাহমুদুল হাসান মাহের (ফজিলত ১ম)।

আরও পড়তে পারেন-

বাংলা বক্তৃতায় প্রথম স্থান মোবারক হোসাইন (ফজিলত ১ম), দ্বিতীয় স্থান ফয়জুর রহমান (ফজিলত ১ম) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন রাহিবুল ইসলাম (ফজিলত ১ম)।

উর্দু বক্তৃতায় প্রথম স্থান আব্দুল্লাহ আল মামুন (ইবতেদায়ী), দ্বিতীয় স্থান ইমরান হোসাইন (ইবতেদায়ী) এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন ইমরান হোসাইন (মুতা-৪)।

ইংরেজি বক্তৃতায় প্রথম স্থান আবু সাবের আবদুল্লাহ, দ্বিতীয় স্থান ইয়াসির আরাফাত এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন তানভীর আহমেদ।

আরবি বক্তৃতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন- মুফতি মুহাম্মদ সাদ কাসেমী, মাওলানা আশেক মাহমুদ ও মাওলানা আজহারুল ইসলাম। বাংলা বক্তৃতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন- মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান কাসেমী, মুফতি ইদ্রিস আহমেদ কাসেমী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম। উর্দু বক্তৃতায় বিচারক হিসেবে ছিলেন- মুফতি শাব্বির আহমেদ কাসেমী, মুফতি তাকী আহমদ কাসেমী ও মাওলানা আবু দাউদ কাসেমী। ইংরেজি বক্তৃতায় বিচারক ছিলেন মাওলানা হাসান আরিফ, মাস্টার নুরুল ইসলাম ও মাওলানা এমদাদ উল্লাহ।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান উপলক্ষে জামিয়াতুন নূরের ছাত্রদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আনন্দময় পরিবেশ বিরাজ করেছে। কৃতিত্ব অর্জনকারী ছাত্রদের অভিভাবকগণও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া স্থানীয় উলামা ও তুলাবাদের ব্যাপক উস্থিতিতে পুরো আয়োজন উলামায়ে কেরামের এক মিলন মেলায় পরিণত হয়।

সবশেষে আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে পুরস্কার বিতরণী ও দোয়া মাহফিলের সমাপ্তি হয়।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।