Home ধর্মীয় প্রশ্ন-উত্তর রাগের বশে স্ত্রীকে তালাক দিলে ইসলামের বিধান কি?

রাগের বশে স্ত্রীকে তালাক দিলে ইসলামের বিধান কি?

প্রশ্ন: মুফতিয়ানে কেরামের কাছে আমার জানার বিষয় হচ্ছে, গত তিন মাস পূর্বে আমি মুহাম্মদ অলি উল্লাহ আমার স্ত্রীর সাথে মোবাইলে কথা বলতেছিলাম। তখন সে বাপের বাড়িতে ছিলো। অনেকদিন সে বাপের বাড়িতে থাকায় এবং আসতে বললে, না আসায়; আমি বলি যে, ‘এখন কি তুমি আইবানি এটা কও’? তখন সে বলে, ‘না আমি আইতাম না’। পরে আমি বলি, ‘আমি চাকরি-বাকরি করতাম না, তুমি আইবানি এটা কও’। তখন সে উত্তরে বলে, ‘চাকরি-বাকরি না করলে বাদ, আমি যাইতাম না, তুমি এখানে আইয়া থাকবা, না হলে বাদ’। তখন আমি বলি, ‘তাহলে তোরে তালাক দিলাম, এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক। বুঝছোস তোরে তালাক দিলাম, এক তালাক দুই তালাক তিন তালাক’।

উল্লেখ্য, যে আমাদের এসব কথোপকথন মোবাইলে হয়েছে সরাসরি নয় এবং আমরা এখনো এক সাথে আছি। এখন আমার জানার বিষয় হলো, আমাদের উক্ত ঘটনার শরয়ী সমাধান কী হবে? বিস্তারিত জানিয়ে বাধিত করবেন।

– মুহাম্মদ অলীউল্লাহ, কুমিল্লা।

আরও পড়তে পারেন-

উত্তর: শরীয়ত কর্তৃক জায়েয কাজ সমূহের মধ্যে সর্ব নিকৃষ্ট ও অপছন্দনীয় কাজ হচ্ছে, তালাক। উপায়হীন সমস্যা থেকে পরিত্রাণের জন্য শরীয়ত তালাকের ব্যবস্থা রেখেছে। তাই কথায় কথায় তালাক দেওয়া এবং একসাথে তিন তালাক দেওয়া একেবারেই অনুচিত কাজ। এতদসত্ত্বেও কেউ স্বীয় স্ত্রীকে মৌখিক বা লিখিতভাবে স্ত্রীর সম্মুখে বা তার অনুপস্থিতিতে তিন তালাক প্রদান করলে, ইসলামী শরীয়ত মতে তা পতিত হয়ে যায়। সুতরাং প্রশ্নের বর্ণনামতে আপনার স্ত্রীর সাথে মোবাইলে কথোপকথনের এক পর্যায়ে আপনার স্ত্রীকেই সম্বোধন করে আপনি সজ্ঞানেই জেনেবুঝে যে বাক্য বলেছেন যথা- “তখন আমি বলি তাহলে তোরে তালাক দিলাম, এক তালাক, দুই তালাক, তিন তালাক, বুঝছোস তোরে তালাক দিলাম এক তালাক দুই তালাক তিন তালাক” এর দ্বারা আপনার স্ত্রীর উপর তিন তালাক পতিত হয়ে সে আপনার জন্য সম্পূর্ণরূপে হারাম হয়ে যায়। এমতাবস্থায় শরীয়ত কর্তৃক বর্ণিত পদ্ধতি তথা হালালা ছাড়া তার সাথে পুনরায় ঘর-সংসার করার দ্বারা উভয়ে ব্যভিচারের গোনাহে লিপ্ত হয়েছেন। অতএব, মাসআলা জানার সাথে সাথেই স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্য একে অপর থেকে পৃথক হয়ে যাওয়া অত্যন্ত জরুরি এবং উভয়ের জন্য অতীতের কৃতকর্মের উপর আল্লাহর দরবারে খালেস দিলে তাওবা করে নেওয়া আবশ্যক।

বর্তমানে তার সাথে ঘর-সংসার করার শরীয়ত সম্মত পদ্ধতি হলো, স্বামীর প্রদত্ত তালাকের ইদ্দত শেষে স্ত্রী অন্য স্বামী গ্রহণ করলে এবং সেই স্বামী তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের পর, সে যদি স্বেচ্ছায় তাকে তালাক দিয়ে দেয় বা মারা যায়, তখন উক্ত স্ত্রী পুনরায় ইদ্দত পালন শেষে আপনার সাথে নতুন সূত্রে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারবে। এ ছাড়া শরীয়তসম্মত বিকল্প কোনো পথ নেই। (সূরা বাকারা- ২৩০, সহীহ বুখারী- ২/২৫৫, কিতাবুল আসল- ৪/৪৬৬, বাদায়েউস সানায়ে- ৩/২৯৫, বাহরুর রায়েক- ৪/৯৪, দুররে মুখতার মাআশ শামী- ৩/২৩২, ফাতাওয়ায়ে দারুল উলূম দেওবন্দ- ৯/৩০৩)।

উত্তর দিয়েছেন- আল্লামা মুফতি জসিমুদ্দীন

মুফতি, মুহাদ্দিস, মুফাসসীর ও সহকারী পরিচালক-
জামিয়া আহলিয়া দারুল উলূম মুঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসা, চট্টগ্রাম।

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।