Home ইসলাম সক্ষম ব্যক্তির কর্মবিমুখতা গ্রহণযোগ্য নয়

সক্ষম ব্যক্তির কর্মবিমুখতা গ্রহণযোগ্য নয়

 ।। ড. ইউসুফ আল-কারজাভি (রহ.) ।।

কোনো কাজে-কর্মে সক্ষম কোনো ব্যক্তির জন্য জীবিকার অনুসন্ধানে অলসতা করা বৈধ নয়। এমনকি তা যদি ইবাদতের জন্য অবসর গ্রহণ বা আল্লাহর ওপর ভরসা করার নামেও হয়ে থাকে। কেননা আসমান স্বর্ণ ও রৌপ্য বর্ষণ করে না। একইভাবে এমন ব্যক্তির জন্য মানুষের দান ও অনুদান গ্রহণ করা বৈধ নয়, যে কাজ-কর্মের শক্তি রাখে এবং তার পরিবার ও অভিভাবকরা ধনী। কেননা নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘সচ্ছল ব্যক্তির জন্য সাহায্য চাওয়া বৈধ নয় এবং সক্ষম-সবল ব্যক্তির জন্যও নয়।’ (সুনানে নাসায়ি, আয়াত : ২৫৯৭)

ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ : রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর একাধিক হাদিসে সক্ষম ব্যক্তির জন্য ভিক্ষাবৃত্তি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি (অভাবের তাড়না ছাড়াই) নিজের সম্পদ বাড়ানোর জন্য মানুষের কাছে সম্পদ ভিক্ষা করে বেড়ায় বস্তুত সে আগুনের ফুলকি ভিক্ষা করে। কাজেই এখন তার ভেবে দেখা উচিত সে বেশি নেবে, না কম নেবে।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২২৮৯)

আরও পড়তে পারেন-

যাদের জন্য সাহায্য চাওয়া বৈধ : অন্য হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তিন ব্যক্তি ছাড়া কারো জন্য হাত পাতা বা সাহায্য প্রার্থনা করা হালাল নয়। তারা হলো :

১. যে ব্যক্তি (কোন ভালো কাজ করতে গিয়ে বা দেনার জামিন হয়ে) ঋণী হয়ে পড়েছে। ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সাহায্য প্রার্থনা করা তার জন্য বৈধ। যখন দেনা পরিশোধ হয়ে যাবে তখন সে এ থেকে বিরত থাকবে।

২. যে ব্যক্তি প্রাকৃতিক দুর্যোগে পতিত হয়েছে এবং এতে তার যাবতীয় সম্পদ ধ্বংস হয়ে গেছে। তার জন্য সাহায্য চাওয়া হালাল যতক্ষণ না তার জন্য নিত্য প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম হয়।

৩. যে ব্যক্তি এমন অভাবগ্রস্ত হয়েছে যে তার গোত্রের তিনজন জ্ঞান-বুদ্ধিসম্পন্ন লোক সাক্ষ্য দেয় যে ‘সত্যিই অমুক অভাবে পড়েছে’ তার জন্য জীবিকা নির্বাহের পরিমাণ সম্পদ লাভ করার পূর্ব পর্যন্ত সাহায্য প্রার্থনা করা বৈধ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২২৯৪)

কৃষির মাধ্যমে উপার্জন : কৃষি খাত মহান আল্লাহর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নিয়ামত। মহান আল্লাহ তা থেকে তাঁর অসংখ্য মাখলুকের রিজিকের ব্যবস্থা করেন। পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘তারা কি লক্ষ করে না, আমি ঊষর ভূমির ওপর পানি প্রবাহিত করে তার সাহায্যে উদ্গত করি শস্য, যা থেকে তাদের গবাদি পশু এবং তারা নিজেরা আহার গ্রহণ করে।’ (সুরা : সাজদা, আয়াত : ২৭)

কাজেই মুমিনের সম্মান : পরিশ্রম ও কাজের মধ্যেই মুমিনের সম্মান নিহিত। কেননা রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ রশি নিয়ে তার পিঠে কাঠের বোঝা বয়ে আনে এবং তা বিক্রি করে, ফলে আল্লাহ তার চেহারাকে (হাতপাতার লাঞ্ছনা থেকে) রক্ষা করেন। এটা মানুষের কাছে চাওয়া থেকে উত্তম, চাই তারা দিক বা না দিক।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৪৭১)

‘আল-হালাল ওয়াল হারাম’ থেকে

মো. আবদুল মজিদ মোল্লার ভাষান্তর

উম্মাহ২৪ডটকম: আইএএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।