Home স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষণ্নতা থেকে দীর্ঘস্থায়ী রোগ

বিষণ্নতা থেকে দীর্ঘস্থায়ী রোগ

ছবি- নেট থেকে সংগৃহীত।

সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও বাড়ছে বিষণ্নতার রোগী। ২০১৯ সালে বাংলাদেশের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালিত ‘ন্যাশনাল মেন্টাল হেলথ সার্ভেতে দেখা গেছে, বিষণ্নতার হার ৬.৭ শতাংশ, এর মধ্যে পুরুষদের ৭ শতাংশ, নারীদের ৬.৫ শতাংশ, শহরে ৮.২ শতাংশ, গ্রামে ৬.৩ শতাংশ। শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মধ্যে একটা গভীর যোগসূত্র আছে। দুশ্চিন্তা ও মানসিক অবসাদ বাড়াতে পারে দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি।

বিষণ্নতা থেকে যেসব ক্রনিক বা দীর্ঘস্থায়ী রোগের সূচনা হতে পারে—

হৃদরোগ : ৪০ বছর থেকে ৭৯ বছর বয়সের মানুষের মধ্যে যাঁরা মৃদু থেকে মাঝারি পর্যায়ের বিষণ্নতায় প্রায় ১০ বছর ভুগেছেন, তাঁদের মধ্যে কার্ডিওভাসকুলার রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ডিপ্রেশনের সঙ্গে স্ট্রেস বা উদ্বিগ্নতা থাকলে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়। ফলে স্ট্রোকের ঝুঁকিও বাড়ে।

ডায়াবেটিস : বিষণ্নতায় কেউ কেউ অনিয়ন্ত্রিতভাবে খাদ্য গ্রহণ করেন, আবার অনেকে অতিরিক্ত কম খাদ্য গ্রহণ করেন।

যাঁরা অনিয়ন্ত্রিত খাদ্য গ্রহণ করেন তাঁদের ওজন বেড়ে যায়। এভাবে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের দিকে মোড় নেয়।
ঘুমের সমস্যা : বিষণ্নতায় ঘুমের ওপর প্রচণ্ড রকমের প্রভাব পড়ে। কারো অনিদ্রার সমস্যা দেখা যায়, কারো আবার অতিমাত্রায় ঘুম দেখা যায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ৭৫ শতাংশ বিষণ্নতায় আক্রান্ত রোগী ঘুমের সমস্যায় ভোগেন।

ব্যথা : বিষণ্নতার রোগীদের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন অংশে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা হয়। এর কারণ হলো, এই রোগে সেরোটোনিন নামের নিউরোট্রান্সমিটার কমে যায়। শরীরে ইনফ্লামেশনও বেড়ে ব্যথা আরো তীব্র হয়ে ওঠে। মাথা ব্যথা ও আর্থ্রাইটিস খুব কমন।

আরও পড়তে পারেন-

পরিপাকতন্ত্রে সমস্যা : সেরোটোনিন নামের নিউরোট্রান্সমিটারের তারতম্যের জন্য পরিপাকতন্ত্রেও প্রভাব পড়ে। ফলে হজমে সমস্যা হয়, পেট ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ক্ষুধামন্দা, অরুচি এবং ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) ইত্যাদি দেখা যায়।

অপুষ্টিজনিত সমস্যা : বিষণ্নতায় খাদ্যাভ্যাসের তারতম্যের কারণে ভিটামিন ডি, ফলিক এসিড, ভিটামিন বি ১২, রক্তের হিমোগ্লোবিন ইত্যাদি কমে যেতে পারে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব : এই প্রভাব বেশ লক্ষণীয়। সর্দি-কাশি ও অন্যান্য দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা প্রায় বছরজুড়ে লেগেই থাকে।

মস্তিষ্কের ওপর প্রভাব : নেতিবাচক চিন্তা ও আচরণ, সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা, হীনম্মন্যতায় ভোগা, মাথা ব্যথা, স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়া ইত্যাদি বেশ উল্লেখযোগ্য।

যৌন সমস্যা : বিষণ্নতার ফলে যৌন জীবনেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে দাম্পত্য কলহও হতে পারে।

চিকিৎসা না নিলে উপরে উল্লিখিত সমস্যাগুলো হতে পারে। বিষণ্নতার রোগী একাকিত্ব গ্রহণ করে সব কিছু থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। শরীর আর মনের মধ্যে কোনো একটি যদি খারাপ থাকে, তাহলে মানুষ ভালো থাকতে পারে না। কাজেই শরীরের পাশাপাশি মনেরও যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।

পরামর্শ দিয়েছেন
ডা. রুবাইয়াৎ ফেরদৌস
কনসালট্যান্ট
লাইফ স্প্রিং লিমিটেড, ঢাকা

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।