
দেশে প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পহেলা ডিসেম্বর থেকে নতুন মুজরি কাঠামো কার্যকর হবে বলে সরকার জানিয়েছে।
কয়েক সপ্তাহ ধরে টানা শ্রমিক বিক্ষোভের মুখে শ্রমিক ও মালিক প্রতিনিধিদের সাথে সরকারের আলোচনার পর এই ঘোষণা এলো।
শ্রমিক ও সরকারের সাথে আলোচনার পর আট হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মালিক পক্ষ। সরকার সেই প্রস্তাবই মেনে নিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে মজুরি বৃদ্ধির ঘোষণা দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান।।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় যে, শ্রমিকদের মজুরি কাঠামোতে পাঁচটি গ্রেড থাকবে। মোট মজুরির মধ্যে মূল বেতন হবে ৬৩ শতাংশ। তার মানে ১২ হাজার ৫০০ টাকা মোট মজুরির মধ্যে মূল বেতন হবে ৭ হাজার ৮৭৫ টাকা।
এটি ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। ফলে শ্রমিকরা নতুন কাঠামো অনুযায়ী মজুরি পাবেন আগামী বছরের জানুয়ারিতে।
পোশাক শ্রমিকরা যেন বাজার মূল্যের চেয়ে কম দামে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারে, সেজন্য আগামী জানুয়ারিতে পোশাক শ্রমিকদের প্রতিটি পরিবারকে একটি করে টিসিবি কার্ড দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী।
আরও পড়তে পারেন-
- আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ইসলামের ভূমিকা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন হুমকির মুখে না পড়ে
- সমৃদ্ধ জাতি নির্মাণে দরকার বুদ্ধিবৃত্তিক জাগরণ ও আলেমদের এগিয়ে আসা
- সালাম-কালামের আদব-কায়দা
- বিবি খাদিজা (রাযি.): ইসলাম ধর্মের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ নারী
আগামী ১৪ দিনের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি কাঠামোর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হবে বলে সরকার জানিয়েছে।
এর আগে, সর্বশেষ ২০১৮ সালে পোশাক শ্রমিকদের সর্বনিম্ন মজুরি ঠিক করা হয়েছিল আট হাজার টাকা। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে আন্দোলন করে আসছিলেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
মালিকপক্ষের সাথে দীর্ঘ আলোচনার পর অবশেষে মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে সাড়ে ১২ হাজার টাকা সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করলো বাংলাদেশ সরকার।
তবে গত ২২শে অক্টোবর ন্যূনতম মজুরি বোর্ডের চতুর্থ সভায় শ্রমিক প্রতিনিধিরা ২০ হাজার ৩৯৩ টাকা মজুরি দাবি করেছিলেন।
এর আগে, মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার সেগুনবাগিচায় নিম্নতম মজুরি বোর্ডের কার্যালয়ে পোশাক খাতের জন্য গঠিত নিম্নতম মজুরি বোর্ডের ষষ্ঠ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রায় দেড় ঘণ্টার এই সভায় মালিকপক্ষের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম, মালিকপক্ষের স্থায়ী প্রতিনিধি মকসুদ বেলাল সিদ্দিকী, শ্রমিকপক্ষের স্থায়ী প্রতিনিধি সুলতান আহম্মদ এবং নিরপেক্ষ প্রতিনিধি কামাল উদ্দিন রনি অংশ নেন।
সভায় পোশাক কারখানার মালিকদের পক্ষ থেকে ১২ হাজার ৫০০ টাকার ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব করা হয়।
কারখানা মালিকদের প্রস্তাবিত এই মজুরিই শেষমেশ চূড়ান্ত করলো নিম্নতম মজুরি বোর্ড।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ঢাকা, গাজীপুর, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন করছিল শ্রমিকরা। সেই আন্দোলনে সহিংসতায় দুইজন শ্রমিকের মৃত্যু আর বহু শ্রমিক আহত হয়েছে।
সূত্র- বিবিসি।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ