Home ইসলাম পবিত্র কোরআনের যে সুরা পরকালে সাহায্যকারী হবে

পবিত্র কোরআনের যে সুরা পরকালে সাহায্যকারী হবে

 ।। শরিফ আহমাদ ।।

পবিত্র কোরআনের তৃতীয় সুরা আলে ইমরান। সুরাটি মদিনায় অবতীর্ণ। এর আয়াতসংখ্যা ২০০। ইমরান পরিবারের কথা থেকে সুরাটির নামকরণ হয়েছে।

আলোচ্য সুরায় বদর যুদ্ধ থেকে ওহুদ যুদ্ধ পর্যন্ত মুসলিম সমাজজীবনের দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে। ওই সময় সংঘটিত ঘটনাবলি প্রসঙ্গে কোরআনের গৃহীত পদক্ষেপ বর্ণনা করা হয়েছে। শক্তিশালী ও নিখুঁত বর্ণনাশৈলী সমকালীন পাঠকের কাছে তৎকালীন ঘটনাবলির প্রত্যক্ষ সাক্ষ্য মনে হবে। এটা কোরআনের স্বতন্ত্র একটি বৈশিষ্ট্য।

গুরুত্বপূর্ণ এই সুরা সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো :

সুরা আলে ইমরান নাজিলের প্রেক্ষাপট

এই সুরার শানে নুজুল বা অবতরণ প্রেক্ষাপট হলো নাজরান প্রতিনিধিদলের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর সাক্ষাতের ঐতিহাসিক কথোপকথন। তাদের ব্যাপারে ৮৩টি আয়াত নাজিল হয়েছে। আরবের ইয়েমেন অঞ্চলের একটি অংশের নাম ছিল নাজরান। তার অধিবাসীরা ছিল খ্রিস্টান।

নবম কিংবা দশম হিজরিতে নাজরান থেকে ৬০ সদস্যের একটি সম্ভ্রান্ত ও মর্যাদাপূর্ণ প্রতিনিধিদল রাসুল (সা.)-এর খিদমতে হাজির হয়। তাঁদের মধ্যে ১৪ জন ছিলেন উপনেতা আর তিনজন ছিলেন নেতা। আব্দুল মাসিহ আকিব নেতৃত্বে, আয়হাম সায়্যিদ বিচক্ষণতায় এবং আবু হারিসা ইবনে আলকামা প্রধান পাদ্রি হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। সমাজে তাঁদের ব্যাপক প্রভাব ছিল।

আরও পড়তে পারেন-

তাঁরা এসে বিভিন্ন বিতর্কিত বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে কথোপকথন করেন।

তখন রাসুল (সা.) আলোচনার মধ্যে তাঁদের ত্রিত্ববাদের আকিদা ও পুত্রত্বের অলীক ধারণার অসারতা তুলে ধরেন, যার আলোচ্য সুরায় ও বিভিন্ন কিতাবে বিস্তারিত বিবরণ পাওয়া যায় । (তাফসিরে জালালাইন : ১/৫৮৯)

সুরা আলে ইমরানের ফজিলত

পবিত্র কোরআনের প্রতিটি সুরা গুরুত্বপূর্ণ। হাদিসে বিভিন্ন আয়াতের ফজিলত পাওয়া যায়। সুরা আলে ইমরান তিলাওয়াতের বিশেষ ফজিলত আছে। এই সুরা কিয়ামতের কঠিন দিনে সুপারিশ করতে উপস্থিত হবে। আবু উমামা বাহিলি (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে বলতে শুনেছি, তোমরা কোরআন তিলাওয়াত করবে। কেননা কিয়ামতের দিন তা তিলাওয়াতকারীর জন্য শাফায়াতকারী হিসেবে উপস্থিত হবে। তোমরা দুটি সমুজ্জ্বল সুরা বাকারা ও আলে ইমরান তিলাওয়াত করবে।

কেননা এ দুটি কিয়ামতের দিনে উপস্থিত হবে, যেন দুটি মেঘখণ্ড কিংবা দুটি ছায়াদানকারী কিংবা যেন দুটি ডানা বিস্তারকারী পাখির ঝাঁক, যারা তাদের তিলাওয়াতকারীদের পক্ষে সাহায্যকারী হবে। তোমরা সুরা বাকারা তিলাওয়াত করবে। কেননা তা তিলাওয়াত করায় বরকত রয়েছে এবং তা বর্জন করা আফসোসের। কারণ বাতিলপন্থীরা (জাদুকররা) তার সঙ্গে কুলিয়ে উঠতে পারবে না। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৭৪৭)

নাওয়াস ইবনে সামআন (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, কোরআন ও আহলে কোরআন যারা দুনিয়ায় তা অনুসারে আমল করেছে, সেই কোরআনপন্থীরা (কিয়ামতের দিন) আসবে এমন অবস্থায় যে তাদের আগে আগে থাকবে সুরা বাকারা ও আলে ইমরান। এরা উভয়েই তাদের ধারকদের পক্ষে‌ (আল্লাহর দরবারে) বিতর্ক করবে। (জামে তিরমিজি, হাদিস : ২৮৮৩)

তাই এই সুরা বেশি বেশি পাঠ করা উচিত। মহান আল্লাহ সব মুমিন নারী-পুরুষকে তাওফিক দান করুন। আমিন।

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।