জ্বলন্ত ট্রেনের জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি। পারলেন না। আটকে গেলেন জানালায়। বাইরে থেকে কিছু লোক মরিয়া হয়ে তাঁকে বের করার চেষ্টা চালান।
সবই ব্যর্থ। জ্বলন্ত ট্রেনের আগুন গ্রাস করে তাঁকে।
জ্বলন্ত ট্রেন বেনাপোল এক্সপ্রেসের ওই যাত্রীকে উদ্ধার করতে এগিয়ে আসা মাসুদ রানা বলেন, ওই লোক বলছিলেন, ‘আমার বাচ্চাসহ বউ পুড়ে গেছে ভেতরে। আমারও ৯০ শতাংশ প্রায় পুড়ে গেছে।
বের হয়ে আর কী করব।’ কথা শেষ করতে না করতেই তাঁর ঘাড়ের ওপর ট্রেনের জানালা ভেঙে পড়ে। তিনি আটকে যান। মৃত্যুর আগে এসব কথা বলে যান বেনাপোল এক্সপ্রেসে ট্রেনে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া চারজনের একজন।
গতকাল শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে রাজধানীর গোপীবাগে ট্রেনটিতে আগুন লাগার খবর পায় ফায়ার সার্ভিস।
ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিটের নিরলস চেষ্টায় রাত ১০টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রত্যক্ষদর্শী মাসুদ রানা বলেন, ‘রেললাইনের পাশেই আমার বাসা। ট্রেনে আগুন লাগার সময় বাসায়ই ছিলাম। একজন ফোনে এই আগুন লাগার খবর জানায়।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
তাড়াতাড়ি বেরিয়ে আসি। ততক্ষণে ‘চ’ নম্বর বগির ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। একজন জানালা দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দূর থেকে বাঁশ দিয়ে জানালাটা সরানোর চেষ্টা করছিলাম, যাতে তিনি বের হতে পারেন। আমরা তাঁকে বের করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। কারণ সব কিছু অনেক গরম। কোনো কিছুই ধরা যাচ্ছিল না।’
মাসুদ রানা বলেন, ‘ছ’ নম্বর বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের লোকজন পানি ছিটিয়ে নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভালেও দুটি বগিই একেবারে পুড়ে গেছে। বগি দুটিতে এসি থাকায় আগুনে বেশি পুড়েছে। দুই বগির পাশেই ছিল পাওয়ার কেবলর কার বগি। রেলওয়ের কর্মীরা এসেও খুলতে ব্যর্থ হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনের কয়েকটি বগিতে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছিল। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা পৌঁছাতে না পারায় আগুন বেশি ছড়িয়েছে। স্থানীয় লোকজন দ্রুত গিয়ে পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
ঢাকা রেলওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আশরাফ হোসেন জানান, রাত ৯টা ৭ মিনিটের দিকে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ থেকে তারা ট্রেনে আগুনের খবর পেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পুলিশ সদস্যরা গেছেন।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ