Home ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন জান্নাত যাদের অপেক্ষায়!

জান্নাত যাদের অপেক্ষায়!

- উম্মাহ গ্রাফিক্স।

।। মুফতি আবদুল্লাহ নোমান ।।

জীবনের বহমান স্রোতধারায় একটি শিশু শৈশব থেকে কৈশোরে, কৈশোর থেকে তারুণ্যে তারপর যৌবনের বসন্ত অঙ্গনে পদার্পণ করে। এই যৌবনই জীবনের মাহেন্দ্রক্ষণ, শ্রেষ্ঠ প্রহর ও বসন্তকাল। তারুণ্য, একদিকে যেমন পার্থিব জীবন বিনির্মাণের মোক্ষম হাতিয়ার, তেমনি অপার্থিব বিজয় ও গৌরব অর্জনেরও মহান সোপান। ফকফকে পূর্ণিমার চাঁদের স্নিগ্ধ আলো যেমন কয়েকদিনের পর বিদায় নেয় বিলীয়মান ছায়ার মতো, তেমনি আমাদের শক্তির রসে টইটুম্বুর চোখ ধাঁধানো যশ যৌবনও অল্প দিনের। জীবনকে সফল প্রাণবন্ত ও অর্থময় করতে হলে কাজে লাগাতে হবে যৌবনবসন্তকে। এ অমূল্য হীরক খন্ডের যারাই সদ্ব্যবহার করেছে, ইতিহাস আজও তাঁদেরকে স্মরণ করে পরম শ্রদ্ধাভরে।

যৌবন আল্লাহর অমূল্য নিয়ামত

সন্দেহ নেই, আমাদের জীবন-যৌবন সহায়-সম্পদ মহান সৃষ্টিকর্তার অমূল্য দান, শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। ক্ষণিকের এ জীবনের স্বর্ণপ্রহর হচ্ছে যৌবনকাল। যা মহান আল্লাহ বান্দাকে পরীক্ষা করার জন্য জীবনের মাঝামাঝি সময়ে দিয়ে থাকেন। মানব বাগানে একটি শিশু যখন ভুমিষ্ট হয় তখন সে থাকে অত্যন্ত দুর্বল। আবার যখন বার্ধক্য এসে হানা দেয় তখনও হয়ে পড়ে দুর্বল, পরনির্ভরশীল। এ দুই প্রান্তের দুর্বলতার মাঝখানে শক্তি সামর্থ্যে টইটুম্বুর সবলতা দান করেন দয়াময় আল্লাহ। যার সদ্ব্যবহার করে মানুষ বিশ্ব জয় করতে পারে। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে-

‘আল্লাহ সেই সত্তা যিনি তোমাদের সৃষ্টি শুরু করেছেন দুর্বল অবস্থা থেকে, দুর্বলতার পর তিনি দান করেন শক্তি, ফের শক্তির পর দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা চান সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান।’ (সূরা রূম- ৫৪)। এই অমূল্য নিয়ামতকে সময় থাকতেই কাজে লাগানো উচিত। অন্যথায় হারিয়ে গেলে শত আফসোস করেও কোন লাভ হবে না। মহাজ্ঞানী সাহাবী হযরত আলী (রাযি.) আক্ষেপ করে বলেছিলেন-

بَكَيْتُ عَلَى شَبَابٍ قَدْ تَوَلَّى
 فَيَا لَيْتَ الشَّبَابَ لَنَا يَعُودُ
                فَلَوْ كَانَ الشَّبَابُ يُبَاعُ بَيْعاً
                 لَأَعْطَيْتُ الْمُبَايِعَ مَا يُرِيدُ

                                وَ لَكِنَّ الشَّبَابَ إِذَا تَوَلَّى
                                 عَلَى شُرُفٍ فَمَطْلَبُهُ بَعِيد

আমি কাঁদি আমার হারানো যৌবনের স্মরণে,
আহা, একবার যদি ফিরে পেতাম তা এ জীবনে!  
যৌবন যদি কেনাবেচা হতো, হায়, এ ধরায়!
তুলে দিতাম বিক্রেতার হাতে সে যা চায়!
কিন্তু হায়, কালের গর্ভে যখন তা হারিয়ে যায়,
সাত রাজার ধন দিয়েও তা কি আর পাওয়া যায়?

সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় যুবসমাজ

পৃথিবীর দেশে দেশে যুগ যুগান্তরে সৃজন নির্মাণ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে জাতির সূর্য সন্তান যুবকরাই। তাদের রক্তেই রচিত হয়েছে বিজয় ও সাফল্যের কাক্সিক্ষত বাণী। তাইতো স্বপ্ন ও সৃজনে যেমন দেশ ও জাতি তাকিয়ে থাকে যুব সমাজের দিকে, সঙ্কট ও ক্রান্তিলগ্নেও পথ চেয়ে থাকে তরুণ সমাজ পানে। সাহসে শপথে বলিয়ান যুবকদের গৌরবময় কীর্তিগাথা এখনো জ্বলজ্বল করছে সোনালি ইতিহাসের পাতায় পাতায়। মরেও তারা বেঁচে আছে জনমানুষের হৃদয়ের মনিকোঠায়। দূর অতীতের এমনই এক ঈমানদীপ্ত ঘটনা কালো কালির হরফে আজও চিরস্মরণীয় হয়ে সংরক্ষিত আছে আসমানী গ্রন্থ কুরআনে। সমকালীন বেঈমান অপশক্তি থেকে মুখ ফিরিয়ে কয়েকজন যুবক সমর্পিত হয়েছিল আল্লাহর একত্ববাদে। ফলে তিনি তাদের সাহায্য করেছিলেন অলৌকিকভাবে। এই ক্ষুদ্র যুবক কাফেলা আসহাবে কাহাফ নামেই খ্যাত। মহান আল্লাহ সর্বকালের যুবকদের পথনির্দেশকরূপে এই বিস্ময়কর কাহিনীর আলোচনা করেছেন পবিত্র কুরআনে এভাবে-

‘আমি তোমার কাছে তাদের ঘটনা যথাযভাবে বর্ণনা করছি। তারা ছিল একদল যুবক, যারা নিজ প্রতিপালকের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং আমি তাদেরকে হেদায়াতে প্রভূত উৎকর্ষ দান করেছিলাম। আমি তাদের অন্তর সুদৃঢ় করে দিয়েছিলাম। এটা সেই সময়ের কথা, যখন তারা উঠল এবং বলল, আমাদের প্রতিপালক তিনিই, যিনি আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর মালিক। আমরা তাকে ছাড়া অন্য কাউকে মাবুদ বানিয়ে কখনোই ডাকবো না। আমরা যদি সেরকম করি, তবে নিঃসন্দেহে আমরা চরম অবাস্তব কথা বলব’। (সূরা কাহাফ, ১৩-১৪)।

হাশরে যৌবন সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ

সময়ের পরিক্রমায় জীবনের এই স্বর্ণপ্রহর হারিয়ে গেলে সারা পৃথিবীর বিনিময়েও তা আর ফিরিয়ে আনা যায় না। এ নিয়ামতের মূল্য তারাই বুঝে যারা এ থেকে বঞ্চিত। সাত রাজার ধনের চেয়েও মূল্যবান এ সম্পদ এখনো যাদের আছে তারা সত্যিই বড় সৌভাগ্যবান। যারা এ নিয়ামতকে যথার্থ মূল্যায়ন করে তারা ইহকালে ও পরকালে সফল হয়। আর যারা এটাকে হেলায় খেলায় নষ্ট করে, তারা হয় চরম ক্ষতিগ্রস্ত, প্রবঞ্চিত। মনে রাখতে হবে, প্রতিটি মানুষকে হাশরের ময়দানে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে তার জীবন ও যৌবনের। বিশ্ব মানবতার প্রকৃত বন্ধু প্রিয়তম নবী মুহাম্মাদ (সা.)এর ভাষায়, ‘কেয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগ পর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ তাআলার দরবার হতে সরাতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কীভাবে তা অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কীভাবে তা বিনাশ করেছে? তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং কী কী খাতে তা ব্যয় করেছে এবং সে যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল তা কতটুকু মেনে চলেছে?’ (তিরমিযী- ২৪১৬)।

বার্ধক্যের পূর্বেই যৌবনের মূল্যায়ন

বলার অপেক্ষা রাখে না, একজন সত্যনিষ্ঠ যুবক যখন বেকারত্বের অবসান ঘটিয়ে একটি ভেঙে পড়া পরিবারের ভার তুলে নেয় কাঁধে, অমনি অভাবের ভারে নুয়ে পড়া পরিবারটি সগৌরবে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সক্ষম হয়। পরিবারটি মেরুদণ্ড সোজা করে দেখতে শুরু করে পৃথিবী আলো করা স্বপ্ন। দায়িত্বশীল তরুণের ছোঁয়ায় তরতরিয়ে এগিয়ে যায় একটি মানব কাফেলা। একজন স্বপ্নবাজ তরুণ আপন শক্তিতে জ্বলে উঠে নিজ কর্মদক্ষতায় হাসিয়ে তুলতে পারে চারপাশ। দূর করতে পারে গরিব-দুঃখীদের অভাব অনটন। ফোটাতে পারে অসহায়দের মুখে তৃপ্তি ও প্রাপ্তির হাসি । এর সদ্ব্যবহার করে মানুষ গড়ে তুলতে পারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের স্বপ্নীল নীড়। তাই প্রিয় নবীজি (সা.) সযত্ন সতর্কতায় কাজে লাগাতে বলেছেন জীবনের এই স্বর্ণ প্রহরকে। তিনি এক ব্যক্তিকে কিছু অমূল্য উপদেশ দিয়ে বলেছেন-

‘পাঁচটি বিষয়কে অপর পাঁচটি বিষয়ের আগেই মূল্য দাও! বার্ধক্যের আগে যৌবনকে, অসুস্থতার আগে সুস্থতাকে, দারিদ্র্যের আগে ধনাঢ্যতাকে, ব্যস্ততার আগে অবসরকে এবং মৃত্যুর আগে হায়াতকে’। (আল মুসতাদরাক- ৭৮৪৬)।

যৌবনের ইবাদতে আরশের ছায়া মেলে

বুদ্ধিমান যুবক যৌবনকে আল্লাহর ইবাদতে কাটিয়ে নিজের নাম লিপিবদ্ধ করাতে পারে ভাগ্যবান সেই সাত শ্রেণির সোনালি তালিকায়, যাদেরকে মহান রব কেয়ামতের বিভীষিকাময় কঠিন মুহূর্তে ঠাঁই দিবেন আরশের ছায়ায়। হযরত আবু হুরায়রা (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে প্রিয় নবীজি (সা.) ইরশাদ করেছেন- ‘সাত শ্রেণির মানুষকে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার ছায়ায় আশ্রয় দান করবেন, যেদিন তাঁর ছায়া ছাড়া আর কোন ছায়া থাকবে না। ১. ন্যায়পরায়ণ শাসক। ২. ঐ যুবক যে আল্লাহর ইবাদতের ভেতর দিয়ে বেড়ে উঠেছে। ৩. এমন ব্যক্তি যে নির্জনে বসে আল্লাহকে স্মরণ করে আর তার চোখ দুটি কান্নায় ভেসে যায়। ৪. যার অন্তর সদা মসজিদের সঙ্গে ঝুলে থাকে। ৫. এমন দুই ব্যক্তি যারা একে অপরকে ভালোবাসে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য, (এই ভালোবাসার টানেই মিলিত হয় আবার এই ভালোবাসার টানেই আলাদা হয়।) ৬. এমন ব্যক্তি যাকে কোন মর্যাদাশীল সুন্দরী নারী (সঙ্গদানের) আমন্ত্রণ জানায় আর সে বলে- ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি’। ৭. এমন ব্যক্তি যে এত গোপনে দান করে, তার ডান হাতের দান বাম হাতও টের পায় না’। (বুখারী- ৬৮০৬)।

যে নালে উৎপত্তি সে নালেই বিনাশ

তারুণ্যের সংঘবদ্ধ কাফেলা আদিকাল থেকেই পৃথিবীজুড়ে বিলিয়ে চলেছে স্বপ্নের পিদিম। তাদের বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ও মুষ্টিবদ্ধ অঙ্গীকারে গড়ে ওঠে একটি আদর্শ সমাজ, তৈরি হয় আলোকিত দেশ। কিন্তু যন্ত্রণার কথা হলো, বর্তমান যুবকরা নিজেদের ঐতিহ্য ও স্বকীয়তা ভুলতে বসেছে। সন্ত্রাস, মাদক, দুর্নীতি, যিনা-ব্যভিচারসহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ছে। আজ তারুণ্যের আগুনেই বীভৎসরূপে পুড়ছে মানবতা। পিতাহারা শিশু, সন্তানহারা মা এবং স্বামীহারা স্ত্রীদের বুকফাটা আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠছে বাংলার আকাশ বাতাস। এ যেন ‘যে নালে উৎপত্তি সে নালেই বিনাশ’র জীবন্ত প্রতিচ্ছবি। অপরিণামদর্শী যুবকরাই ক্ষমতাধর পাপিষ্ঠদের পক্ষ নিয়ে নিজেদের জীবনকে কলঙ্কিত করছে। পরাক্রমশালী রবের এ আয়াত কি তাদের কর্ণকুহরে পৌঁছেনি? 

وَ لَا تَرۡکَنُوۡۤا اِلَی الَّذِیۡنَ ظَلَمُوۡا فَتَمَسَّکُمُ النَّارُ ۙ وَ مَا لَکُمۡ مِّنۡ دُوۡنِ اللّٰهِ مِنۡ اَوۡلِیَآءَ ثُمَّ لَا تُنۡصَرُوۡنَ.

‘আর যারা সীমালঙ্ঘন করেছে তোমরা তাদের প্রতি ঝুঁকে পড়ো না; পড়লে আগুন তোমাদের স্পর্শ করবে। তখন আল্লাহ ছাড়া তোমাদের কোন অভিভাবক থাকবে না এবং তোমাদের কোন সাহায্য করা হবে না’। (সূরা হুদ- ১১৩)।

এ আয়াতে মানুষকে ক্ষতি ও ধ্বংস থেকে রক্ষার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলা হচ্ছে- “ঐসব পাপিষ্ঠদের দিকে একটুও ঝুঁকবে না, তাহলে কিন্তু তাদের সাথে সাথে তোমাদেরকেও জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে।” এখানে তাদের প্রতি সামান্যতম বোকা বা আকৃষ্ট হওয়া এবং তাদের প্রতি আস্থা বা সম্মতি জ্ঞাপন করাও নিষেধ করা হয়েছে। এই ঝুঁকা ও আকর্ষণের অর্থ সম্পর্কে সাহাবায়ে কেরাম ও তাবেয়ীগণের কয়েকটি উক্তি বর্ণিত হয়েছে, যার মধ্যে পারস্পরিক কোন বিরোধ নেই। বরং প্রত্যেকটি উক্তিই নিজ নিজ ক্ষেত্রে শুদ্ধ ও সঠিক ইবনে আব্বাস (রাযি.) বলেন, যালেমদের চাটুকার হবে না। অন্য বর্ণনায় তিনি বলেন, তাদের শিরকি কর্মকাণ্ডের পক্ষপাতিত্ব করবে না। কাতাদাহ (রহ.) বলেন, এর অর্থ: পাপিষ্ঠদের সাথে বন্ধুত্ব  করবে না,  তাদের  কথামত চলবে না। ইবন জুরাইজ (রহ.) বলেন, এর অর্থ: পাপিষ্ঠদের প্রতি আদৌ আকৃষ্ট হবে না। আবুল আলিয়া বলেন, তাদের কার্যকলাপ ও কথাবার্তা পছন্দ করো না। (তাফসীরে কুরতুবী, ইবনে কাসীর)।

পাপীষ্ঠ যুবকের নিত্য সঙ্গী শয়তান

যে যুবক শয়তানের প্রবঞ্চনায় যৌবনের উচ্ছল তরঙ্গে হারিয়ে যায়, পাপাচারের ভয়াল রাজ্যে নিজেকে বিলীন করে দেয়, তখন সে মুক্তির রাজপথ হারিয়ে দোযখের বেড়াজালে আবদ্ধ হয়ে যায়। তার মাধ্যমে ঘটতে থাকে একের পর এক জঘন্য অপরাধ। তার হাতেই মা-বোনদের ইজ্জত সম্ভ্রম ভূলুণ্ঠিত হয়। বিনষ্ট হয় দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা। বাহ্যিকভাবে তার মুখে রাক্ষসের হাসি দেখা দিলেও বাস্তবে তার জীবন হয়ে পড়ে সংকীর্ণ, দুর্বিষহ। তার পাষণ্ড হৃদয় থাকে সদা উদ্বিগ্ন। আত্মিক প্রশান্তির ছোঁয়াও সে পায় না। পবিত্র কুরআনের দ্ব্যর্থহীন ঘোষণা, ‘আর যে আমার উপদেশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, তার জীবন হবে বড় সঙ্কটময়। আর কেয়ামতের দিন আমি তাকে অন্ধ করে উঠাবো। সে বলবে, হে রব! তুমি আমাকে অন্ধ করে উঠালে কেন? আমি তো চক্ষুষ্মান ছিলাম! আল্লাহ বলবেন, এভাবেই তোমার কাছে আমার আয়াতসমূহ এসেছিল, কিন্তু তুমি তা ভুলে গিয়েছিলে। আজ সেভাবেই তোমাকে ভুলে যাওয়া হবে’। (তোয়াহা- ১২৪-১২৬)।

তাছাড়া যে নরপিশাচ মহান আল্লাহকে ভুলে গিয়ে হরদম লিপ্ত থাকে পাপে, তার নিত্যসঙ্গী হয় অভিশপ্ত শয়তান। যে তাকে সৎ কাজ থেকে বাধা দেয়। উপরন্তু আখিরাতে মিস্টার ইবলিশ পাপীর জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। পবিত্র কুরআনের স্পষ্ট ঘোষণা, ‘আর যে ব্যক্তি দয়াময় আল্লাহর যিকির থেকে অন্ধ হয়ে যাবে, আমি তার জন্য নিয়োজিত করি এক শয়তান, যে তার সঙ্গী হয়ে যায়। এরূপ শয়তানেরা তাদেরকে সৎপথ থেকে বিরত রাখে আর তারা মনে করে আমরা সঠিক পথেই আছি। পরিশেষে এরূপ ব্যক্তি যখন আমার কাছে আসবে তখন (সে তার সঙ্গী শয়তানকে) বলবে, আহা! আমার ও তোমার মধ্যে যদি পূর্ব ও পশ্চিমের ব্যবধান থাকত। কেননা, তুমি বড় মন্দ সঙ্গী ছিলে। আজ এ কথা কিছুতেই তোমার কোন উপকারে আসবে না, যেহেতু তোমরা সীমালঙ্ঘন করেছিলে। তোমরা শাস্তিতে একে অন্যের অংশীদার’। (সূরা যুখরুফ, ৩৬-৩৯)।

যুবসমাজের চারিত্রিক অবক্ষয়ের প্রতিকার

জাতির কর্ণধার যুবকদের ক্রমবর্ধমান এ অধঃপতনের জোয়ারকে থামাতে হলে তাদেরকে ইসলামের সুশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে। ছোট থেকেই আলোকিত মানুষরূপে গড়ে তুলতে হবে পরম স্নেহ মমতায় ও হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসায়। তুলে ধরতে হবে তাদের সামনে ইসলামের অনন্য সৌন্দর্য। ইসলামী তাহযিব-তামাদ্দুন, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ফোকাস করতে হবে তাদের কাছে। উম্মাহর ভবিষ্যৎ কান্ডারী শিশু-কিশোরদের আদর্শ মানুষ রূপে গড়ে তোলার এ গুরুদায়িত্ব সর্বাগ্রে পালন করতে হবে পিতা-মাতাদেরকেই।

আরও পড়তে পারেন-

সেই সাথে তাদেরকে অসৎ সঙ্গ থেকে বিরত রাখতে হবে। সৎ সঙ্গে অভ্যস্ত করাতে হবে। কেননা, চরিত্রবান বন্ধুর মধুময় সম্পর্ক একদিকে যেমন সুস্থ ও নিরাপদ জীবন বিনির্মাণে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে, তেমনি অসৎ চরিত্রহীন বন্ধুর কুপ্রভাব আলোকিত জীবনকে কলুষিত করে ফেলে। তাইতো বলা হয়ে থাকে, ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।’ সন্দেহ নেই, অসৎ সঙ্গ জীবন বিনাশী মহামারী। খারাপ বন্ধু মানুষকে সরল পথ থেকে বিচ্যুত করে। ধাবিত করে অবৈধ, অশোভন এবং অনৈতিক কাজের দিকে। বর্তমানে অসৎ সঙ্গের দুষ্ট ফাঁদে পড়েই অনেক যুবক-যুবতীর জীবন ধ্বংসের মুখে। তারা হিরোইন, ইয়াবা, ফেনসিডিল ইত্যাকার ভয়াবহ মাদক দ্রব্যের সাথে জড়িয়ে পড়ছে প্রতিনিয়ত। বিবাহ বহির্ভুত অবৈধ যৌনাচারে লিপ্ত হয়ে নানারূপ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। কালিমা লেপন করছে নিজেদের জীবন যৌবনে। চুনকালি মাখছে পিতা-মাতার মুখে। এমন রক্তহিম করা ঘটনা পত্রিকায় অহরহ দৃষ্টিগোচর হয়। এসব অসৎ সঙ্গেরই ভয়ঙ্কর কুফল। তাই এক্ষেত্রে অভিভাবকদের যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। ছেলে মেয়েদের গতিবিধি গভীর দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ভুলে গেলে চলবে না, আমাদের প্রত্যেকেই অধীনস্থদের দায়িত্বশীল।

ইবনে ওমর (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শুনে রাখো, তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (আল আদাবুল মুফরাদ- ২০৫)।

অশুভ শক্তি রোধে যুব সমাজের অঙ্গীকার

আজ চারিদিকে মানবতা হাহাকার করছে। সবখানে ভয় আর আতঙ্ক বিরাজমান। এখানে ওখানে লম্পট চাঁদাবাজ ও খুনিদের উৎসবমুখর বসবাস। বাড়িঘর কর্মস্থল পথঘাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোথাও নিরাপত্তার সুবাতাস নেই। আমরা উপনীত হয়েছি ভয়ঙ্কর এক অগ্নি সময়ে। শ্বাসরুদ্ধকর অশুভ এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে হলে আমাদেরকে বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত প্রিয় নবীজি (সা.)এর প্রদর্শিত পথেই হাঁটতে হবে। তাঁর অমীয় বাণীকেই বুকে তুলে নিতে হবে পরম যত্নে। সাহাবী হযরত আনাস (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেছেন, ‘তোমার ভাইকে সাহায্য করো জালেম হোক আর মজলুম। সাহাবায়ে কেরাম বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ (সা.)! আমরা মজলুম ও নির্যাতিতকে সাহায্য করব তা তো বুঝলাম, কিন্তু জালেমকে সাহায্য করবো কীভাবে? নবীজি (সা.) বললেন, তার দুই হাত চেপে ধরবে। অর্থাৎ তাকে জুলুম থেকে বিরত রাখবে’। (বুখারী- ২৪৪৪)।

যদি সমাজের সচেতন যুব সমাজ ও দেশের চালিকাশক্তি তরুণরা মুষ্টিবদ্ধ হাতে অঙ্গীকার করে, আজ থেকে কোন মায়ের বুক খালি হতে দেওয়া হবে না, কোন স্ত্রীকে বিধবা হতে দেওয়া হবে না, কোন শিশুকে পিতৃ স্নেহ থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ দেওয়া হবে না, কোন রাক্ষসকে দাঁত বসাতে দেওয়া হবে না দারিদ্রনমিত মাতৃভূমির খাদ্যকনায়, পথে-ঘাটে কোন মা বোনকে উত্ত্যক্ত করার দুঃসাহস দেখানোর দিন শেষ, তাহলে কার সাধ্য আছে এই বাংলার জমিনকে কলঙ্কিত করার? লেজ গুটিয়ে পালাতে বাধ্য হবে যতসব কুলাঙ্গার! তাই নয় কি?

প্রিয় কবি নজরুল ইসলাম যুবসমাজের অপরাজেয় প্রতিজ্ঞাকে চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তার কাব্যশৈলীতে এভাবে-

যুগে যুগে ধরা করেছে শাসন গর্বোদ্ধত যে যৌবন,
মানেনি কখনো, আজো মানিবে না বৃদ্ধত্বের এই শাসন!
আমরা সৃজিব নতুন জগত, আমরা গাহিব নতুন গান
সম্ভ্রমে নত এই ধরা নেবে অঞ্জলি পাতি মোদের দান।

সহসাই বাজতে পারে মৃত্যুর ঘণ্টা

অনেক যুবকের নৈতিক অবক্ষয় এ কারণে হয় যে, তাদের ধারণা হচ্ছে, এই ভরা যৌবনে কি মৃত্যু-দানব হানা দিবে? বয়োজ্যেষ্ঠ ও বৃদ্ধ হওয়ার আগে মৃত্যুর কল্পনাও তো করা যায় না! চুল দাড়ি পাকার পর আল্লাহর ওলী হয়ে সোজা জান্নাতে চলে যাবে! বস্তুত এটা আকাশ কুসুম কল্পনা বৈ কি! তারা কি দেখে না, প্রতিদিন হাজারো টগবগে যুবক আকস্মিক মৃত্যুর ভয়াল থাবায় পাড়ি জমাচ্ছে পরপারে? কেউ সড়ক দুর্ঘটনায়, কেউবা রোগের যন্ত্রণায়, যাদের হৃদয়ে ছিল বুক ভরা স্বপ্ন, মন ভরা আশা! যারা হয়তো মনে করেছিল, বয়সের ভারে নুয়ে পড়ার পর নিজেকে সংশোধন করে নেবে তাওবা করে! তাদের কি সে সুযোগ মিললো? আল্লাহ রাব্বুল আলামীন কত মর্মস্পর্শী ভাষায় বলেছেন, ‘আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য এক নির্দিষ্ট সময় আছে। যখন সেই নির্দিষ্ট সময় এসে পড়ে, তখন তারা এক মুহূর্তও তার সামনে বা পেছনে যেতে পারে না’। (আরাফ- ৩৪)।

ভুলে গেলে চলবে না, দুনিয়াতে আসার সিরিয়াল আছে কিন্তু যাওয়ার কোন সিরিয়াল নেই। তাই তো দেখা যায়, পিতার হাতে ছেলের লাশ এবং দাদার কাঁধে নাতির লাশ। অতএব, যৌবনকে পাপমুক্ত রেখে আল্লাহর আনুগত্যে রঙিন করা এবং মৃত্যুর জন্য সদা প্রস্তুত থাকাই শুভ বুদ্ধির পরিচয়।

ক্ষণিকের হৈ-হুল্লোড়

বর্তমানে ইয়াং জেনারেশন এর অনলাইন এক্টিভিটি সত্যিই বিস্ময়কর। কী দিন, কী রাত, সুযোগ পেলেই স্ক্রলিং করতে থাকে মাইলের পর মাইল, ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেন এটাই আসল ব্যস্ততা। এভাবে জীবনের অমূল্য সময়গুলো ক্ষয় করতে থাকে অনর্থক। এভাবে উদ্দেশ্যহীন আর কতদিন? হঠাৎ একদিন চলে যাবেন অফলাইনে চিরতরে! নিভে যাবে আপনার ফেসবুকের সবুজ চিহ্নটি একেবারে। অনেক মেসেজ জমা হয়ে থাকবে মোবাইল ফোনে! আসবে নোটিফিকেশনও ক্ষণে ক্ষণে। কেউ সালাম দিয়ে রিপ্লাইয়ের অপেক্ষায় থাকবে, আর কেউ রিপ্লাই না পেয়ে দু’ একটা বকাও দিয়ে রাখবে!

এরপর বন্ধুদের টাইম লাইনে আচমকা একটা পোস্ট আসবে, ‘এই আইডির মালিক গত এত তারিখ, এত সময়ে ইন্তেকাল করেছেন! ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার মাগফিরাতের জন্য দোয়ার আবেদন সবার কাছে! এটা দেখে কয়েকশ’ ঝধফ ৎবধপঃ পড়বে। বন্যা বয়ে যাবে কমেন্টে! দু একদিন হয়তো আপনার বন্ধুদের মন খারাপ হবে, আপনার শত্রুরাও সমবেদনা জ্ঞাপন করবে! এই মর্মান্তিক খবরটি কতদিন থাকবে চলমান? অল্প কয়দিনই তো। এরপর নিত্যনতুন ইস্যুর চোরাবালিতে তলিয়ে যাবে আপনার মৃত্যু সংবাদ। হারিয়ে যাবে আপনার অস্তিত্ব কর্মচঞ্চল এই পৃথিবী থেকে। হারিয়ে যাবেন আপনিও মানুষের হৃদয় থেকে। এভাবেই একসময় মুছে যাবে আপনার নামটিও। ব্যস্ত দুনিয়ায় সবাই লেগে থাকবে আপন কাজে। আপনার আইডিটাও পড়ে থাকবে নিশ্চল। হয়তো চালাবে অন্য কেউ। এভাবেই সময়ের বহতা নদী আপন গতিতেই বয়ে চলবে। শুধু থেমে যাবে জীবনতরী আমার, আপনার, তার! এই তো ক্ষণিকের হৈ হুল্লোড়! তাই আপনাকে    বলছি- হে  বন্ধু,  এবার  একটু থামুন। নিজেকে নিয়ে ভাবুন। জীবনকে কাজে লাগান। রবকে বন্ধু বানান। মনের অব্যক্ত যন্ত্রণাগুলো মানুষকে নয়; আল্লাহকে বলুন। যেকোনো সঙ্কটের সম্মুখীন হলে জায়নামাযে দাঁড়িয়ে যান। সকাতর প্রার্থনা করুন নির্জনে বসে। চোখের অশ্রু ফেলে। মনের আবেগ মিশিয়ে।

ফিরে আসুন রবের দিকে

মনে রাখবেন, যার জীবন লেপ্টে যায় জায়নামাযে, হৃদয় জুড়ে থাকে রবের সাথে, প্রভুর স্মরণে বিভুর থাকে স্বয়নে স্বপনে, তার কপালে কি ভাজ পড়তে পারে! যার মন-মগজে অতি মুহাব্বতের সাথে জায়গা করে আছে একমাত্র রব; তাঁর করুণা এবং ভয়, সে কি ভুগতে পারে ডিপ্রেশনে! হায়, রব থেকে দূরে থাকা মানুষগুলো যদি জানত দ্বীন বিবর্জিত জীবন কতটা অসহায়, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা দ্বীনে ফিরে আসত। পৃথিবীতে মানুষের হাহাকার দেখতে পাচ্ছে না তারা? অনুভব করছে না নিজেদের অব্যক্ত জ্বালা-যন্ত্রণা? যা তাদের তিলে তিলে নিঃশেষ করছে! মুখ ফুটে বলতেও পারছে না কাউকে! এসবের প্রকৃত কারণ আর কিছু না; কেবল করুণাময় আল্লাহ থেকে দূরে থাকা এবং তার বিধি-বিধান থেকে গাফিল থাকা। প্রিয় ভাই, আপনি আত্মার প্রশান্তি কোথায় খোঁজছেন? যৌন সুড়সুড়িপূর্ণ গানে! ভিন নারীর সুললিত কন্ঠস্বরে! মদ গাঁজা ফেনসিডিলে! পর্নোগ্রাফি এবং অশ্লীল ছায়াছবিতে! ওয়াল্লাহি, তাহলে আপনি ভুলের মধ্যে আছেন নিঃসন্দেহে। এসবের কোনোটিই আপনাকে আত্মিক প্রশান্তি দিতে পারে না। দিতে পারে না সুখ সমৃদ্ধ পবিত্র অনুভূতি। কুপ্রবৃত্তিকে জাগিয়ে তুলে নফসকে সাময়িক সুখ দিতে পারে কেবল। কিন্তু পরক্ষণেই আপনাকে নিক্ষেপ করবে বিষণ্নতার অতল গহ্বরে। তলিয়ে দেবে হতাশার চোরাবালিতে। শুধু রবের স্মরণেই মেলে শান্তি। মেলে যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণ।

আপনার জন্য অপেক্ষা করছে অবারিত প্রশান্তি। তাই আর দেরি নয়, ফিরে আসুন রবের দিকে।

জান্নাত তোমার অপেক্ষায় হে যুবক

যৌবনের ইবাদত আল্লাহর কাছে খুবই প্রিয়। কেননা, তখন তার মধ্যে যৌবনদীপ্ত উত্তেজনা ও তারুণ্যদীপ্ত উন্মাদনা কাজ করে প্রবল ভাবে। চারিদিকে থাকে গুনাহ ও অশ্লীলতার হাতছানি। রকমারি পাপের সুযোগ থাকে হাতের নাগালেই। যৌবনের মৌবনে পাপাচারের সয়লাবে নিজেকে ভাসিয়ে দিতে মনে চায় তীব্রভাবে। স্বভাবজাত এ উচ্ছল তাড়নাকে যখন সে আল্লাহর জন্য বিসর্জন দিয়ে লেগে যায় নেকি অর্জনের প্রতিযোগিতায়, তখন জান্নাতের স্বপ্নীল ভুবন ও অপরূপা হুরগণ থাকে তার অপেক্ষায়। তার জীবন হয় ঈমানী আবেশে প্রাণময়, ধর্মীয় ভাবাবেগে মধুময়। সে একদিকে যেমন লাভ করে পার্থিব জীবনের সুখ-শান্তি, তেমনি অনন্ত জীবনেও সে হয় চিরস্থায়ী জান্নাতের অধিবাসী। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন-

مَنۡ عَمِلَ صَالِحًا مِّنۡ ذَکَرٍ اَوۡ اُنۡثٰی وَ هُوَ مُؤۡمِنٌ فَلَنُحۡیِیَنَّهٗ حَیٰوۃً طَیِّبَۃً ۚ وَ لَنَجۡزِیَنَّهُمۡ اَجۡرَهُمۡ بِاَحۡسَنِ مَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ.

‘যে ব্যক্তি মুমিন থাকা অবস্থায় সৎ কর্ম করবে, সে পুরুষ হোক বা নারী, আমি অবশ্যই তাকে উত্তম জীবন যাপন করাবো এবং তাদেরকে তাদের উৎকৃষ্টকর্ম অনুযায়ী তাদের প্রতিদান অবশ্যই প্রদান করব’। (সূরা নাহাল- ৯৭)।

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে ও সৎ কর্ম করেছে তাদের আপ্যায়নের জন্য অবশ্যই ফিরদাউসের উদ্যান রয়েছে। তাতে তারা সর্বদা থাকবে (এবং) তারা সেখান থেকে অন্য কোথাও যেতে চাইবে না’। (কাহাফ- ১০৭-১০৮)

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন যুব সমাজকে দ্বীনের ছায়াতলে এসে উম্মাহ ও দেশের জন্য কাজ করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

লেখক: উস্তাযুল হাদিস, জামিয়া ইসলামিয়া হেমায়াতুল ইসলাম কৈয়গ্রাম, পটিয়া, চট্টগ্রাম।
ইমেইল- abdullahnuman967@gmail.com

উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।