আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে উন্নয়ন কাজ ত্বরান্বিত করতে প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘আমরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছি। আমাদের সময় একেবারেই নির্ধারিত। তাই আমি চাই আমাদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি বাড়ুক, যাতে আমরা দেশকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি।’
রোববার (১৪ জানুয়ারি) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাসভবনে মাঠ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।
তিনি মাঠ প্রশাসনকে একটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ ও নকশা প্রণয়নের সময় সেখান থেকে কী পাওয়া যাবে তা বিবেচনা করার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনি যখন কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেন, তখন আপনাকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে সেখান থেকে কী পাওয়া যাবে এবং দেশ ও জনগণ কতটা উপকৃত হবে।’
তিনি আরো বলেন, শুধু অর্থ ব্যয়ের জন্য কোনো প্রকল্প গ্রহণ করেন না তিনি।
তিনি বলেন, ‘অনেক দেশ উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের পথ থেকে পিছলে গেছে, কিন্তু বাংলাদেশ সফলভাবে অনেক বাধা অতিক্রম করেছে এবং উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার বিভিন্ন প্যারামিটারে স্থিতিশীল অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘তাই আমাদের সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে হবে (উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রার জন্য)।’
সরকারের সমালোচকদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক শ্রেণীর মানুষ আছে যারা কোনো কিছুতেই ভালো বোধ করে না। তাদের অধিকাংশই আমার কাছে খুব পরিচিত। আমি আমার ছাত্রজীবন থেকেই তাদের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে জানি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু স্থানীয়ভাবে নয়, আন্তর্জাতিকভাবেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। সুতরাং, এগুলো দেখে ও শুনে মন খারাপ করবেন না। আমি এ বিষয়ে আগে থেকেই সব কিছু বলছি।’
দেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক মন্তব্যে কান না দিয়ে দেশ ও জনগণের কল্যাণ ও সাধারণ মানুষের উন্নয়নের জন্য যা যা করা দরকার তা অব্যাহত রাখার জন্য সংকল্প, আত্মবিশ্বাস ও আত্মমর্যাদাবোধ বাড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ এত উন্নত হবে এবং এগিয়ে যাবে তা অনেক দেশ ভাবতেও পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের সাফল্য ও উন্নয়ন দেখে অনেকেই ঈর্ষান্বিত।’
সরকারি কর্মকর্তাদের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সুতরাং এগুলো (বাংলাদেশ সম্পর্কে গুজব ও নেতিবাচক মন্তব্য) দেখে উদ্বিগ্ন হবেন না, দ্বিধা করবেন না এবং কাজ বন্ধ করেবেন না। আপনাদের আত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে অনেক ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্র হয়েছে।’
নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের জন্য তিনি জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে ভূমিকা রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সশস্ত্র বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধন্যবাদ জানান।
সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন, পরিবেশ রক্ষায় ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করণ, প্রতিটি উপজেলাকে পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন এবং সর্বজনীন পেনশন স্কিম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মাঝে আরো প্রচার চালানোর জন্য মাঠ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
সরকার এখন গ্যাস ও বিদ্যুৎ খাতে ৪৫ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি মুদ্রাস্ফীতি না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ অনেক বেশি কিন্তু ভর্তুকি মূল্যে বিদ্যুৎ দেয়া হয়।’
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে রুপিতে ট্রেডিংয়ের জন্য ভারতের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা ডলারের ওপর নির্ভরতা কমাতে আরো কয়েকটি দেশের সাথে তাদের মুদ্রায় বাণিজ্যের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
উম্মাহ২৪ডটকম: এমএ