Home জাতীয় গ্যাস সঙ্কটে উৎপাদন অর্ধেকের নিচে

গ্যাস সঙ্কটে উৎপাদন অর্ধেকের নিচে

ছবি- সংগৃহিত।

গ্যাস-বিদ্যুতের সংকটে দিনের প্রায় অর্ধেক সময় কারখানা বন্ধ রাখতে হচ্ছে। ফলে উৎপাদন কমছে। রপ্তানির ক্রয়াদেশও কমে যাচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তা বাড়ছে কর্মসংস্থান নিয়ে। এমন অবস্থায় ধুঁকছে দেশের শিল্পখাত। বিশেষ করে গ্যাস সংকটে বেশি বিপাকে পড়েছে সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ের শিল্প কারখানাগুলো। প্রায় সব কারখানার উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে।

এতে বড় ধরনের লোকসানের শঙ্কা করছেন মালিকরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রয়োজনে দাম বাড়িয়ে হলেও যেন তাদের কারখানায় গ্যাসের ব্যবস্থা করা হয়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গ্যাস বিদ্যুৎ সংকটের কারণে উৎপাদনে বড় ধরনের প্রভাব পড়েছে। এটি অব্যাহত থাকলে সামনে এই খাতে বিপর্যয় নেমে আসবে। রপ্তানি কমে যাবে। এতে রিজার্ভে আরও বড় প্রভাব পড়তে পারে।

অবশ্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্রুত এই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাইয়ে শিল্প কারখানা রয়েছে এক হাজার ৭৯২টি। এর প্রত্যেকটিতেই রয়েছে গ্যাস সংযোগ। কিন্তু চলমান গ্যাস সংকটে বিপাকে কারখানা কর্তৃপক্ষ। কর্মকর্তারা বলছেন, এ ক’দিনে প্রায় সব কারখানার উৎপাদন নেমে এসেছে অর্ধেকের নিচে। এ অবস্থায় উৎপাদন ও রপ্তানি নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন।

দেশে চলমান গ্যাস সংকট নিয়ে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম। তিনি বলেছেন, বেশ কয়েক মাস ধরেই শিল্পকারখানায় গ্যাস সংকট চলছে। সরবরাহ না থাকায় দিনের পর দিন বিভিন্ন কারখানা বন্ধ থাকছে।

এতে উৎপাদনে ধস নেমেছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে শিল্পোৎপাদন গভীর সংকটে পড়বে। ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। শিল্পকারখানা বন্ধ হলে কিংবা বেতন দিতে না পারলে লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে। দেশের অর্থনীতিতেই পড়বে চাপ। তাই গ্যাস সংকট নিরসনে সরকারকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, জ্বালানি মন্ত্রণালয় ২০২৬ সালে নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের কথা বলছে। মাত্র ‘২৪ সাল শুরু হয়েছে। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাসের জন্য যদি দুই বছর অপেক্ষা করতে হয় সেই সময়টা অনেক বেশি।

সাভার শামস ওয়াশিং লিমিটেডের রক্ষণাবেক্ষণ প্রকৌশলী রাশেদুল সিকদার বলেন, গ্যাস কম থাকায় আমাদের প্রোডাকশন অনেক কমেছে। ঠিকমতো মেশিন চালানো যাচ্ছে না গ্যাস সংকটের কারণে। ৪০ শতাংশ পর্যন্ত প্রোডাকশন কমেছে।

আরও পড়তে পারেন-

কারখানা মালিকরা বলছেন, যে প্রতিষ্ঠানগুলো গ্যাস নির্ভর, সেখানে গ্যাসের চাপ একেবারে কম। এতে উৎপাদন কমে গেছে। আর সময় মতো অর্ডারগুলো দিতে না পারলে, বিদেশি ক্রেতা হারানোর শঙ্কা করছেন তারা। সংকট কাটাতে সরকারের নীতি নির্ধারক পর্যায়ে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান। শামস ওয়াশিং লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার হারুনুর রশিদ জানান, কর্মচারীদের বেতন বাড়িয়ে গ্যাস সংকটে উৎপাদন কমায় তারা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।

এ বিষয়ে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, চাহিদার তুলনায় গ্যাস সরবরাহ কম। তাই সমস্যা প্রকট হচ্ছে। আর এটা এখন জাতীয় সংকট, তাই দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে। সাভার ও আশুলিয়ায় প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা ২৬০ মিলিয়ন ঘনফুট, আর বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছে ১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট। তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের ডিজিএম প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বলেন, আমাদের চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি। কারখানা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করে উৎপাদন বাড়াতে না পারলে, এর খারাপ প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে।

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ এবং পেট্রোবাংলা সূত্রে জানা যায়, দেশে বর্তমানে দৈনিক ৪১০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের চাহিদা রয়েছে। চাহিদা মোতাবেক গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না এক দশকের বেশি সময় ধরে।

তবে ৩৫০-৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা গেলে পরিস্থিতি মোটামুটি সামলে নেওয়া যায়। কিন্তু বর্তমানে দৈনিক ২৫০-২৬০ কোটি ঘনফুট বিতরণ করা হচ্ছে। আর্থিক সংস্থানের অভাবে চলতি বছরে স্থানীয় গ্যাস উৎপাদন এবং বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি বাড়িয়ে সরবরাহের পরিমাণ ৩১০-১৫ কোটি ঘনফুটের বেশি করা কঠিন।##

উম্মাহ২৪ডটকম: এসএ

উম্মাহ পড়তে ক্লিক করুন-
https://www.ummah24.com

দেশি-বিদেশি খবরসহ ইসলামী ভাবধারার গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে ‘উম্মাহ’র ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।