নওমুসলিম জান্নাতুল ফেরদৌস-ইব্রাহিম ফারুক দম্পতির বিরুদ্ধে মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের আদালত এলাকায় গতকাল সোমবার দ্বিতীয় দিনের মতো উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করে। তবে পুলিশের কঠোর অবস্থানের কারণে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি। নবদম্পতি ও মামলার বাদি পক্ষের বিপুল সংখ্যক লোকজন আদালত এলাকায় হাজির হয়। দু’পক্ষের মিছিল ঠেকাতে আদালত এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মহানগর হাকিম আদালতে শুনানিতে দুই পক্ষে বহু আইনজীবী অংশগ্রহণ করেন।
জান্নাতুল ফেরদৌসের আইনজীবী সাজিদ আবদুল্লা সাঈদ বলেন, মামলার বাদি পক্ষ জান্নাতের বয়স নির্ধারণের জন্য মেডিক্যাল টেস্টের আবেদন করেন। আমরা তার বিরোধীতা করি। কারণ জন্ম নিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র, জেএসসি ও এসএসসি সনদ অনুযায়ী তার বয়স ১৮ বছর আট মাস দুই দিন। কিন্তু বাদি পক্ষ এসব সরকারি সনদের বদলে ‘কুষ্টি’র ভিত্তিতে তার বয়স ১৭ বছর বলে দাবি করেন। অথচ মামলার বাদি তার এজাহারে জান্নাতের বয়স ১৮ বছরের বেশি বলে উল্লেখ করেন। আদালত উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে ওই আবেদন খারিজ করে দেন। তবে শুনানির সময় নবদম্পতিকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
এর আগে রোববার ওই দুইজনকে আদালতে হাজির করা হয়। তখন নওমুসলিম দম্পতির পক্ষে বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভে আদালত এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কিছু বিতর্কিত সেøাগানও দেওয়া হয় সেখানে। আইনজীবী সাজিদ আবদুল্লা জানান গতকাল শুনানি শেষে উভয়পক্ষের আইনজীবীরা আদালতের বাইরে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত রাখার চেষ্টা করেন।
আরও পড়তে পারেন-
- ঋণ বা ধারকর্য পরিশোধে ইসলামের বিধান
- ইতিহাসে আল্লামা আহমদ শফী
- মেধাবী, আন্তরিক ও নিষ্ঠাবান শিক্ষক ছাড়া শিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব নয়
- ইগো প্রবলেম নিয়ে যত কথা
- সামাজিক সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে ইসলামের নির্দেশনা
জানা গেছে ওই দম্পতি হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে পবিত্র ইসলাম গ্রহণ করেন এবং বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। গত ১১নভেম্বর তারা প্রাপ্ত বয়স্ক হিসাবে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। স্নেহা সাহা নাম বদলে জান্নাতুল ফেরদৌস এবং তার স্বামী বিশ্বজিত সাহা নাম পাল্টে ওমর ফারুক ইব্রাহিম ধারণ করে আদালতে এফিডেভিট করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার এসআই বাবলু কুমার পাল বলেন, এই ঘটনায় ওই তরুণীর মা নগরীর রহমতগঞ্জের বাসিন্দা ঝিমি সাহা থানায় মামলা করেন। তিনি অভিযোগ করেন তার কন্যাকে ওই যুবক অপহরণ করেছে। তিনি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগও করেছেন। মামলার পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকা জেলার সাভার থানার মজিদপুরের বাড়ি থেকে ওই দম্পতিকে আটক করা হয়। তাদের আদালতে তোলা হলে আদালত ইব্রাহিমের জামিন আবেদন খারিজ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্য দিকে জান্নাতুল ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে তার মায়ের অভিযোগ অস্বীকার করে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ এবং ইব্রাহিমকে বিয়ে করার কথা স্বীকার করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জানান, আদালত এই জবানবন্দির পর প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে জান্নাতুল ফেরদৌসকে তার নিজের জিম্মায় মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেন। কিন্তু বাদীপক্ষের তীব্র আপত্তির কারণে এবং আদালত এলাকায় বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে তার নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করে পরে তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে রাখার আদেশ দেয়া হয়। মামলার তদন্ত চলছে জানিয়ে তদন্ত কর্মকর্তা জানান খুব শিগগিরই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
উম্মাহ২৪ডটকম:এসএ